পুজোয় চেনা রুটিন, চেনা শহর ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে কার না মন চায়! এ বার শারদীয়ায় আপনি কি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? নিঃসন্দেহে সুন্দর অভিজ্ঞতা হতে পারে। তবে, তার জন্য কিছু জরুরি সতর্কতা মেনে চলা আবশ্যক। পুজোয় বেরিয়ে পড়ার আগে তাই জেনে নিন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিরাপদে ভ্রমণের জন্য কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: ভ্রমণে বেরোনোর আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার স্বাস্থ্য এবং গর্ভাবস্থার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনিই সবচেয়ে ভাল পরামর্শ দিতে পারবেন। ভ্রমণের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিন এবং ডাক্তারের লিখিত অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখুন।
কখন ভ্রমণ করবেন? গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (৪ থেকে ৬ মাস) ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ সময় বলে মনে করা হয়। এই সময়ে সাধারণত বমি ভাব কমে যায় এবং শারীরিক অস্বস্তি কম হয়। প্রথম ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ এড়িয়ে চলাই ভাল।
ভ্রমণের মাধ্যম বাছুন সাবধানে: বিমান সফরের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মাঝেমধ্যে হেঁটে নিন এবং পর্যাপ্ত জল পান করুন। দীর্ঘ পথ গাড়িতে ভ্রমণ করলে প্রতি ২ ঘণ্টা পর পর বিরতি নিন। হাঁটাচলা করুন, যাতে পায়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ট্রেনে ভ্রমণ বরং বেশ আরামদায়ক হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও চলাফেরা ও বিরতির সুযোগ থাকে।
পর্যাপ্ত জল পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান: ভ্রমণের সময়ে শরীর আর্দ্র রাখা খুব জরুরি। পর্যাপ্ত জল পান করুন। বাইরের তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আরামদায়ক পোশাক ও জুতো পরুন: আরামদায়ক ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। ফ্ল্যাট স্যান্ডেল বা জুতো বেছে নিন, যা হাঁটতে বা দাঁড়াতে আরামদায়ক হবে। আঁটোসাঁটো পোশাক রক্ত চলাচল ব্যাহত করতে পারে।
সঙ্গে রাখুন জরুরি কাগজপত্র: আপনার চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্র, যেমন - ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং জরুরি কন্ট্যাক্ট নম্বরগুলি সঙ্গে রাখুন। অপ্রত্যাশিত কোনও পরিস্থিতির জন্য এগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সঙ্গে রাখুন প্রয়োজনীয় ওষুধ: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সব প্রয়োজনীয় ওষুধ, যেমন - ভিটামিন এবং জরুরি ওষুধপত্র একটি ছোট ব্যাগে সঙ্গে রাখুন। ভ্রমণকালে এর প্রয়োজন হতে পারে।
সঠিক গন্তব্য এবং কার্যকলাপ বাছুন: এমন জায়গায় ভ্রমণ করুন, যেখানে ভাল চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায়। ট্রেকিং বা অন্য কোনও ঝুঁকিপূর্ণ শারীরিক কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন। নিরাপদ ও আরামদায়ক স্থান বেছে নিন।
শরীরের কথা শুনুন: ভ্রমণকালে আপনার শরীর কেমন আছে, সে দিকে খেয়াল রাখুন। যদি ক্লান্তি বা কোনও অস্বস্তি বোধ করেন, তা হলে বিশ্রাম নিন। শরীরকে অতিরিক্ত চাপ দেবেন না। এই অবস্থায় আপনার স্বাস্থ্যই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।