অনেকের কাছেই পুজোর সময়টা বেড়ানোর সেরা সময়। অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় তার প্ল্যান। আর সেই হিসাব মতো বাস, ট্রেন বা প্লেনের টিকিটও কাটা হয়ে যায়। কিন্তু এই বারের ছবিটা একটু আলাদা।
সম্প্রতি একের পর এক বিমান দুর্ঘটনার খবর আমাদের অনেকের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে— ‘আমার সঙ্গেও এমন কিছু হবে না তো?’ এই প্রশ্ন অনেকের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই বিষয়টা কীভাবে সামলাবেন? পাশাপাশি এটাও জেনে নিন, আসলে বিষয়টি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
বাস্তব পরিসংখ্যানটি বুঝুন: বিমান বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা (IATA)-র তথ্য অনুযায়ী, গড়ে প্রতি কোটি ফ্লাইটে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তুলনায়, সড়ক দুর্ঘটনার হার কয়েকশো গুণ বেশি। অর্থাৎ, সংবাদমাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর বেশি চোখে পড়লেও, বাস্তবে ঝুঁকি অত্যন্ত কম। বিমান দুর্ঘটনা খুব বিরল বলেই আসলে সেটি নিয়ে খবর হয়। আর তার প্রভাব সকলের মতোই আপনার মনেও পড়েছে।
ভয়ের পিছনের কারণ: আমরা যেসব দুর্ঘটনার ছবি বা ভিডিয়ো দেখি, তা আমাদের মস্তিষ্কে গভীর ভাবে প্রভাব ফেলে। আসলে যতটা না ঝুঁকি রয়েছে, তার চেয়ে বেশি ভয় তৈরি করে মস্তিষ্কের উপরে পড়া এই প্রভাবটিই। এই বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার।
বিমান সংস্থা ও রুট বাছুন ভেবেচিন্তে: নামী ও সেফটি রেটিং ভাল, এমন এয়ারলাইন বেছে নিন। আবহাওয়ার জন্য কিছু রুট ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। প্রয়োজনে সেই সব রুট এড়িয়ে চলুন।
ভ্রমণ বিমা করুন: যাত্রার আগে একটি ভাল ট্রাভেল বিমা করিয়ে নিন। এতে আপনার মনে বাড়তি সুরক্ষাবোধ তৈরি হবে, এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আপনি আর্থিক সুরক্ষা পাবেন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এই ধরনের বিমা থাকলে বাড়িতে যাঁরা আপনার উপর নির্ভরশীল, তাঁদের নিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা কিছুটা কমে। এতে ঠান্ডা মাথায় বিমানে চাপতে পারবেন।
নিজের মনের প্রস্তুতি নিন: ফ্লাইটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশ মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সিটবেল্ট বেঁধে রাখুন, বিশেষ করে টেকঅফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময়ে সতর্ক থাকুন। আপনার সিটের কাছাকাছি ইমার্জেন্সি এগজ়িটের দরজা কোথায় আছে জেনে নিন।
মন শান্ত রাখার মতো জিনিস সঙ্গে রাখুন: ফ্লাইট চলাকালীন পড়া, গান শুনতে পারেন, সিনেমা দেখতে পারেন। এগুলি করে মন অন্য দিকে সরিয়ে রাখুন। বই পড়ার অভ্যাস থাকলে সেটাও করতে পারেন। মেডিটেশনও আপনাকে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজনে ট্রাভেল অ্যাংজ়াইটি নিয়ে মনোবিদের সঙ্গে আলোচনা করুন। দুর্ঘটনার খবর এড়িয়ে চলুন: বেড়াতে যাওয়ার আগে বিমান দুর্ঘটনার খবর পড়া বা ভিডিয়ো দেখা থেকে বিরত থাকুন। এটি শুধু উদ্বেগ বাড়ায়, আপনাকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে পারে না।
দুর্ঘটনার খবর এড়িয়ে চলুন: বেড়াতে যাওয়ার আগে বিমান দুর্ঘটনার খবর পড়া বা ভিডিয়ো দেখা থেকে বিরত থাকুন। এটি শুধু উদ্বেগ বাড়ায়, আপনাকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে পারে না।
শেষে মনে রাখা দরকার, ভয় আমাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সেটা আটকানো আপনার হাতে নয়। কিন্তু সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা আপনার হাতে। বিমান পরিষেবা অত্যন্ত নিরাপদ, এই বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাই পুজোর ছুটিতে বিমানে যাত্রা করুন নিশ্চিন্তে, আর উৎসবের আনন্দ উপভোগ করুন নির্ভয়ে।(এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)