ফাইল চিত্র
নতুন করে রাজাকারদের তালিকা তৈরি করবে হাসিনা সরকার। চলতি বছরের ২৬ মার্চের পরে সেই কাজ শুরু হবে।
তার আগে, আগামী ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাইয়ের কাজ। আনন্দবাজারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাত্কারে এমনটাই জানিয়েছেন দেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘‘শহিদ বিদ্বজ্জনদের তালিকা তৈরির কাজেও হাত দেবে মন্ত্রক।’’
গত ৪৫ বছরে বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মোট ছ’বার পরিবর্তিত হয়েছে। কোন কোন কারণে এবং যোগ্যতায় এক জনকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবে, সেই নিয়মও পাল্টেছে প্রায় ১০ বার। নতুন সংজ্ঞার বিচারে ফের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করতে গত শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে যাচাই এবং বাছাইয়ের কাজ।
ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রণীত মুক্তিবার্তার লাল বইকে সঠিক ধরে নিয়ে এই যাচাই-বাছাই করা হবে। এ ছাড়া অনলাইনে লক্ষাধিক আবেদনকেও যাচাইয়ের আওতায় রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মোজাম্মেল হক। তাঁর কথায়, ‘‘এ পর্যন্ত যত গেজেট বেরিয়েছে, সবই বিবেচনা করা হবে। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর— প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার কাজ যাচাই করা হবে তাঁরই সহযোদ্ধার সাক্ষ্য নিয়ে। এর আগে বা পরের সময় কাল বিবেচিত হবে না।’’ দেশের সব উপজেলায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে এই বাছাই হবে। আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে এই তালিকার কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর পরেই রাজাকারদের তালিকা তৈরিতে হাত দেবে মন্ত্রক। পাশপাশি তৈরি করা হবে বিদ্বজ্জনদের তালিকাও।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক
মোজাম্মেল হকের দাবি, ১৯৭১-এ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী গোপন বাহিনী আলবদর, আল শামসদের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে গায়েব করেছে বিএনপি সরকারের মন্ত্রী যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামি, মুজাহিদরা। ওই বাহিনী সেই সময় পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে অস্ত্র এবং অর্থ পেত। আর এ জন্যই তাদের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে সংরক্ষিত ছিল। হারিয়ে যাওয়া সেই তালিকা উদ্ধার করতে সরকারকে বেগ পেতে হবে। তবু সরকার সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘‘একাত্তরের আগে ২৩ বছর ধরে যাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে বুদ্ধিবৃত্তিক বিনিয়োগ করেছেন তাঁদের তালিকা তৈরির উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।’’ পাশাপাশি, একাত্তরে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধের জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তা সংরক্ষণ করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।
আরও পড়ুন- রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ঢাকা বনধের ডাক