বিচারের অপেক্ষায়। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচজনের বিচার শুরুর নির্দেশ দিল আদালত।
ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান বুধবার আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আগামী ৪ অগাস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারন করেছেন। জেল হাফাজতে থাকা থাকা তিন আসামী জিকরুল্লাহ ওরফে হাসান, আরিফুল ইসলাম ওরফে মুশফিক ওরফে এরফান এবং সাইফুল ইসলাম ওরফে মানসুরকে চার্জ গঠনের শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়েছিল। পাঁচ অভিযুক্তের বাকি দু’জনকে এখনও ধরতে পারা যায়নি।
গত বছর ৩০ মার্চ ঢাকার তেজগাঁওয়ের বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ওয়াশিকুরকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারেজঙ্গিরা। ওয়াশিকুর ফেসবুক-সহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লিখতেন।
ঢাকার তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের পরপরই জনতা ধাওয়া করে ধরে ফেলে মাদ্রাসা ছাত্র জিকরুল্লাহ ও আরিফুলকে। সাইফুলকে হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে ধারালো অস্ত্র-সহ যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ধরা পড়ার আগে ওয়াশিকুর হত্যার ছক তৈরিতে সাইফুলও জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সঙ্ঘাতটা দুই চেতনার, তবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা প্রস্তুত
হত্যাকাণ্ডের পর দিন চার জনের বিরুদ্ধে তেঁজগাও শিল্পাঞ্চল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিহত ওয়াশিকুরের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ। পরে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে। গত বছর ২ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ আনসারুল্লাহর পাঁচ সদস্যকে আসামি হিসেবে চিহ্নিত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। আভিযোগে বলা হয়, পলাতক দুই আসামির অন্যতম আব্দুল্লাহ ছিলেন এই হত্যা পরিকল্পনার মাথা।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখিতে সক্রিয় আহমেদ রাজীব হায়দারকে খুন করা হয় একই কায়দায়। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর ওই মামলার রায়ে দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত।
রাজীব হত্যার পর আরও অন্তত ছ’জন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক, প্রকাশক একই কায়দায় খুন হলেও তাদের মধ্যে কেবল ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যার মামলাটিই তদন্ত শেষে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে গেল।