বাউলদের মার বাংলাদেশে, আখড়ায় আগুন

লালন ফকিরের দেশে আবার হামলার শিকার হলেন বাউলরা। শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার গোবিন্দপুরে এক দল লোক আখড়ায় ঢুকে বাউলদের মারধর করে চুল কেটে দেয়। বেঁধেও রাখে কয়েক জনকে। তার পরে তিনটি আখড়ার দু’টি আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৮
Share:

লালন ফকিরের দেশে আবার হামলার শিকার হলেন বাউলরা। শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার গোবিন্দপুরে এক দল লোক আখড়ায় ঢুকে বাউলদের মারধর করে চুল কেটে দেয়। বেঁধেও রাখে কয়েক জনকে। তার পরে তিনটি আখড়ার দু’টি আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

Advertisement

বাউল জুলমত শাহ জানিয়েছেন, বছর ছয়েক আগে তিন বিঘা জমির ওপর তিনি আখড়াটি বসিয়েছিলেন। প্রতি বছর ১৫ বৈশাখ, ৫ আষাঢ় ও ২৫ ফাল্গুন সেখানে যে আসর বসে, ভারত থেকেও বহু বাউল-ফকির তাতে অংশ নেন।

জুলমত শাহ জানান, রাত ১২টা নাগাদ সাত-আট জন তরুণ সোজা আখড়ায় ঢুকে পড়ে জানতে চায়— কে তাদের অধিনায়ক। জুলমত নিজের পরিচয় দিলে তাঁকে পাশের বাগানে নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা হয়। বাঁধা হয় আরও এক বাউলকে। তার পর তাঁদের চুল কেটে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারা হয় মোমেনা খাতুন নামে এক মহিলা বাউলকেও। তার পরে আখড়ার তিনটি খড়ের ঘরের মধ্যে দু’টিতে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। বাউলরা জানিয়েছেন, তরুণরা নিজেদের খুলনার লোক বলে দাবি করলেও চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক টান ছিল তা দের কথায়।

Advertisement

এর আগে এ মাসের ১৯ তারিখে চুয়াডাঙারই জীবননগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের আখড়ায় বাউলদের ওপর হামলা চালিয়েছিল মুখোশপরা দুষ্কৃতীরা। দুই মহিলা-সহ তিন জন এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তাঁদের লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মারার পরে ধারালো অস্ত্রে কোপানো হয়। একতারপুরের আখড়াটিও পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে জামাতে ইসলামি ও তাদের ছাত্র শাখার কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিনের ঘটনার পিছনেও জামাতের দুষ্কৃতীরা রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের।

বাংলাদেশের সম্প্রতি অমুসলিমদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। জঙ্গিদের হামলায় খুন হয়েছেন বেশ কয়েক জন পুরোহিত ও যাজক। একই ভাবে হামলার শিকার হচ্ছেন বাউল ও ফকির সম্প্রদায়ও। চুয়াডাঙ্গা জেলার বাউল সঙ্ঘের সভাপতি ধীরু বাউল এ দিনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির পাশাপাশি আখড়াগুলির নিরাপত্তায় পুলিশি নজরদারির দাবিও জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement