বাজেট বৃদ্ধি হয়েছে। ছবি- ফাইল চিত্র
সড়ক যতই মসৃণ হোক, আকাশ পথের চেয়ে দ্রুতগামী কখনই নয়। সময় লাগে ঢের বেশি। ঘড়ি ধরে যেতে, উড়ে যাওয়াই ভাল। পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছে নির্বাচন। কাজ অসম্পূর্ণ থাকলে ক্ষতি। ২০১৬ পযর্ন্ত কাজ হয়েছে যথেষ্ট। ভুবন জোড়া স্বীকৃতি মিলেছে। বিশ্বব্যাঙ্কও বিস্মিত। তার মানে এই নয়, এ বার হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় এসেছে। দীর্ঘ পরিশ্রমের পর বিশ্রাম। বিষয়টা সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার হওয়া দরকার। মনের মতো পরিশ্রমই বিশ্রাম। উন্নয়নে কাজের ঝড়। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের ক্লান্তি আসবে কেন। উড়ন্ত বিমান কি মাঝ আকাশে থামতে পারে, না একবারে অভীষ্ট বন্দরে অবতরণ। বাংলাদেশের বিরামহীন উন্নয়ন যাত্রার গতি আরও তীব্র করার পরিকল্পনা। যাতে সময়ের আগে লক্ষ্য ভেদ হয়।
আরও পড়ুন- বিয়ের বয়সে ছাড়, তুমুল বিতর্ক বাংলাদেশে
জুতসই জাম্বো বাজেট ছাড়া সেটা হবে না। ইদের চাঁদের মতো সেটা হাতে আসা দরকার। যাতে কোনও কিছু টাকায় না আটকায়। যেটা ভেবে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের সম্ভাব্য বাজেটের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। আগে বাজেটের আয়তন ৪ লক্ষ কোটিতে সীমাবদ্ধ রাখার কথা ছিল। পরে চিন্তাভাবনা করে আরও ২০ হাজার কোটি বাড়ানো হয়েছে। তাতেই বা কতটা কী হবে বলা মুশকিল। বাজেট বাড়াতেই উদ্বেগ উঁকি মারছে। টাকাটা আসবে কোত্থেকে। আকাশ থেকে নিশ্চয়ই পড়বে না। গাছেও ফলবে না। মানুষের পকেট থেকেই বার করতে হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, রাজস্ব আদায় যথেষ্ট নয়। যা হচ্ছে, তার চেয়ে অনেকটাই বাড়ানো যেতে পারে। সব ক্ষেত্রে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া বন্ধ করাটা একান্ত জরুরি।
আরও পড়ুন- দিল্লি সফরে হাসিনা, মোদীর সঙ্গে বৈঠকে কথা হতে পারে তিস্তা নিয়ে
আয়কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বিপুল উপার্জন করে আয় গোপন রাখাটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সেটা আর হবে না। আয় কম দেখিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার কৌশল কাজে লাগবে না। সেই সঙ্গে আগামী অর্থবছর থেকে, নতুন মূল্য সংযোজন কর আইন কার্যকর হবে।
গ্রস ডোমোস্টিক প্রোডাক্ট বা জিডিপি বাড়ছে। চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ। বছরের শেষে সেটা ছাপিয়ে যাবে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ৭.৫ শতাংশের নীচে নামার আর কোনও সম্ভাবনা নেই। কৃষি আর শিল্প দু'দিকেই উৎপাদন বাড়ছে। অধিকাংশ কৃষি জমিতে বছরে চারটি করে ফসল হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে নাকাল হওয়ার শঙ্কা কম। বিক্রির বাজার ভাল। রফতানি বাড়ছে। শিল্পোৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াচ্ছে। বিনিয়োগের অভাবে আটকে থাকছে না। অর্থনৈতিক উন্নতির ভিত তো এটাই। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যয়ের দিকে নজর দেওয়া হবে। অর্থনীতিবিদদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য-শিক্ষা খাতে ব্যয় কম। সার্কের অন্য দেশ, এমনকি ভারতেও এতে খরচ হয় বেশি। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টি সরকারের নজরে আছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে এ বার অবশ্যই ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো হবে। শক্তিশালী বন্ড ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা হয়েছে। পাঁচ বছরের জায়গায় একবারে ৩০ বছর মেয়াদী বন্ড ছাড়ার কথা হচ্ছে। তাতে সরকার আর গ্রাহক দু'পক্ষেরই সুবিধে। নতুন বাজেটে মেগা প্রকল্পের দিকে বেশি নজর দেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে তার তদারকি করবেন। ২০১৯-এ জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ যাতে আরও উজ্জ্বল হতে পারে। উন্নতির ধারায় উৎসাহিত হতে পারে প্রতিবেশী সব দেশও।