বাংলাদেশের পণ্য আটকে বিভ্রান্তি জার্মানির

যুক্তি কারণ ছাড়া সিদ্ধান্ত হয় না। হলে সবটাই হেঁয়ালি। জার্মানির চ্যান্সেলার অ্যাঞ্জেলা মেরকেল তা বিলক্ষণ জানেন। এগারো বছর ধরে দেশ সামলাচ্ছেন। অভিজ্ঞতায় ঘাটতি নেই। ঝড় ঝাপটায় সাফল্য দেখিয়েছেন। ইউরোপের অর্থনীতিতে অন্যতম বৃহত্ শক্তি জার্মানি। বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কও নিবিড়।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ১৪:২৬
Share:

বস্ত্রশিল্পে যথেষ্ট উন্নত বাংলাদেশ।

যুক্তি কারণ ছাড়া সিদ্ধান্ত হয় না। হলে সবটাই হেঁয়ালি। জার্মানির চ্যান্সেলার অ্যাঞ্জেলা মেরকেল তা বিলক্ষণ জানেন। এগারো বছর ধরে দেশ সামলাচ্ছেন। অভিজ্ঞতায় ঘাটতি নেই। ঝড় ঝাপটায় সাফল্য দেখিয়েছেন। ইউরোপের অর্থনীতিতে অন্যতম বৃহত্ শক্তি জার্মানি। বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কও নিবিড়। সেই জার্মানিএ এ বার বাংলাদেশকে বিপদে ফেলল। বাংলাদেশের পণ্য পরিবহণে আচমকা নিষেধাজ্ঞা জারি করল তারা। আগে একই কাজ করেছে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া। এ বার সেই পথেই হাঁটল জার্মানি। বলা হচ্ছে, নিরাপত্তার অভাব। সেটাই বা কোথায়। পণ্য পরিবহণ নিশ্ছিদ্র। জার্মানির এয়ারলাইন্স লুফত্হানসার প্রতিনিধিরা খুঁটিয়ে দেখেছেন সব কিছু। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রফতানির কার্গো হাউস পরিদর্শনের পর জানিয়েছেন, সব ঠিক আছে। আধুনিকীকরণের ব্যবস্থাও পাকা। যেখানে পণ্য প্যাকেট পরীক্ষা হয় সেই স্ক্যানার পয়েন্টেও পর্যবেক্ষণে ফাঁক নেই। সদ্য তৈরি, পণ্য রাখার স্পেশাল কেজে বিশেষ অনুমতি ছাড়া বিমানবন্দরে কর্তা ব্যক্তিরাও ঢুকতে পারেন না।

Advertisement

বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ব্রিটিশ সংস্থা রেডলাইন, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করেছে। আন্তর্জাতিক মান বজায় থাকছে। গাফিলতির ভয় নেই। ইউরোপের কোনও দেশেরই তাই অভিযোগের জায়গা নেই।

বছরে বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে শুধু পোশাক রফতানিই হয় ৩০০ কোটি ডলারের। সেটা আটকানো মানে অর্থনীতির ওপর বিশাল চাপ। বাংলাদেশে বস্ত্র শিল্পই অগ্রগণ্য। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অন্ন সংস্থান সেখান থেকেই। সবজি, ফল রফতানি হয় বছরে হাজার কোটি টাকার। সেসব সংরক্ষণের সুযোগ নেই। পচে নষ্ট হবে।

Advertisement

বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করে নিজেদের বাজার তৈরি করতে চাওয়াটাও তো অনৈতিক। চাইলে তারা প্রতিযোগিতায় নামুক। দাম আর গুণগত মানে বাংলাদেশকে টেক্কা দিক। সেটাও তো পারছে না। উল্টে নানা অজুহাতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বন্ধ করছে। পাঁচ বছরে মধ্যম আয়ের দেশ হতে চায় বাংলাদেশ। অর্থনীতি এগোচ্ছে সেই লক্ষ্যেই। আর তাদের এই উদ্যোগে বিপদে ফেলছে এই তিনটি দেশ। সন্ত্রাসী উৎপাত অগ্রগতি থামাতে পারছে না। শিল্পায়ন হচ্ছে, উৎপাদন বাড়ছে। কৃষিপণ্য যাচ্ছে বিদেশে। ব্রিটেন, জার্মানি ছাড়া ইউরোপের অন্য কোনও দেশের তো আপত্তি নেই। বাংলাদেশের রফতানি ব্যবস্থায় এ দু’টি দেশের অসুবিধা কোথায়। অস্ট্রেলিয়ারই বা সমস্যা কী?

আমেরিকাতেও বাংলাদেশের পণ্য যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। নিরাপত্তার শিথিলতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। বরং বাংলাদেশকে জানিয়েছে, কোনও অসুবিধে হলে আমরা আছি। সন্ত্রাস দমনেও সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি। আমেরিকার মনোভাবে জার্মানি অনেকটা নরম। বলছে, বাংলাদেশের বিষয়টা বিবেচনা করছি। তাদের মনে রাখা দরকার, একটা দিনের ক্ষতিও অনেক।

আরও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগে পাকিস্তানকে টেক্কা বাংলাদেশের

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন