হায়দরাবাদ হাউজে ভারত এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই
মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের শুরু। বন্ধুত্বের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল সেই ১৯৭১ সালে। এ বার দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের হাত আরও শক্ত হল। এরই সঙ্গে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের সুদূরপ্রসারী বীজও বপন হয়ে গেল আজ। বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে বিরাট নেতা এবং ভারতের বন্ধু বলে অভিহিত করে মোদী দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেক বেশি পোক্ত করলেন। শনিবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ।
দু’দেশের যৌথ প্রযোজনায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তথ্যচিত্র হবে বলে ঘোষণা করেন মোদী। বঙ্গবন্ধুর জীবনশৈলী তরুণ প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় এমনটাই তাঁর অভিমত। শেখ মুজিবর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র হিন্দি সংস্করণও উন্মোচন করেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। অন্য দিকে, হাসিনা তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই তুলে ধরেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগের ইতিহাস। তিনি বলেন, ‘‘যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ভারতীয় সেনা। শহিদ হয়েছিলেন এ দেশের বহু মানুষ। সেই স্মৃতি আজও তাজা। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সেই ১৯৭১ সাল থেকে।’’
উন্নতির নিরিখে বিশ্বের তাবড় দেশগুলোর দেশগুলির সমীহ আদায় করে নিচ্ছে ভারত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের উন্নতি প্রশংসার দাবি রাখে। পাশাপাশি বাংলাদেশও ধীরে ধীরে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে। দু’দেশের উন্নতির ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। আর শনিবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেনলে সমস্বরে একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদকে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দেন হাসিনা এবং মোদী। জানিয়ে দেন সন্ত্রাসবাদ রুখতে একযোগে কাজ করবে ঢাকা এবং নয়াদিল্লি। হাসিনা বলেন,‘‘ আমরা দুই দেশই সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে আপস করি না। দু’দেশের সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে আমরা উদ্যোগী।’’
প্রতিবেশী দু’দেশের নিরাপত্তার ব্যবস্থা ঢেলে সাজছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র জোরদার করতে বাংলাদেশের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। পাশাপাশি ভারতের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন হাসিনাও। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘শুধু সাধারণের উন্নয়নের জন্যই তাঁদের এই সহযোগিতা নয়, কট্টরপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ থেকেও মানুষকে বাঁচাতে হবে। শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়, এই সন্ত্রাসবাদ গোটা অঞ্চলের শত্রু। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাবে কঠোর হাতে জঙ্গি দমনে নেমেছেন, তা সকলের কাছে শিক্ষণীয়।’’ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি সকলের কাছে প্রেরণা বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এরই সঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে চলছে তাও ভীষণ ভাবে প্রশংসার দাবি রাখে।