দাউদাউ করে জ্বলছে ঢাকার ওই বহুতল। ছবি: এপি।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঢাকার একটি বহুতলে। বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে এবং বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭০ জনের। দুর্ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঢাকার চকবাজার এলাকায়। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ২০০টি দমকলের ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন দমকল কর্মীরা।
প্রাথমিক ভাবে দমকল জানিয়েছে, চকবাজারের একটি বহুতলের গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন লাগে। কারণ প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রথমে একটি বিস্ফোরণের শব্দ পান। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই বহুতল এবং পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বহুতল আগুন আর ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। যে বহুতলে আগুন লেগেছে সেখানে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম ছিল বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি পারফিউমের কারখানাও ছিল। আশপাশের বাড়িগুলোতেও রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার উপর চকবাজার এলাকার বাড়িগুলো একে অপরের প্রায় গা ঘেঁষে উঠেছে। ফলে খুব দ্রুত পাশের বাড়িগুলোতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বহুতলগুলোতে প্রচুর মানুষ আটকে পড়েন। সরু রাস্তা দিয়ে দ্রুত বেরতে পারেননি তাঁরা। এখনও পর্যন্ত দমকল কর্মীরা ৬৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। জখমদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের অনেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
দমকলের এক অফিসার জানিয়েছেন, রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান দমকলকর্মীরা। কিন্তু রাতভর প্রাণপন চেষ্টা করেও প্রচুর পরিমাণে দাহ্য বস্তু মজুত থাকায় ২০০ দমকলের ইঞ্জিন দিয়েও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
আরও পড়ুন: আজ বাংলা ভাষার উদ্যাপন করাচিতেও
মইয়ের সাহায্যে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। ছবি: এএফপি।
২০১০ এমনই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল ঢাকায়। সেই বহুতলটিও রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম ছিল। তাতে ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল। রাসায়নিক গুদামের খোঁজ পেলেই কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে ঘোষণা করে। কিন্তু তাতে যে পরিস্থিতি বদলায়নি, বাংলাদেশের রাজধানীতে বুধবার রাতের আগুনই প্রমাণ করে দিল।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।