ঢাকার রাস্তা প্রচার। এএফপি
বাংলাদেশে ভোটের প্রচারে হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বাংলাদেশের মার্কিন রাষ্ট্রদূত। রবিবারের ভোট যাতে নির্বিঘ্নে হয়, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ ঘটনার পরে হিংসা নিয়ে সরব হয়েছে শাসক ও বিরোধী— দুই পক্ষই।
শুক্রবার সকাল আটটায় নির্বাচনের প্রচার শেষ হচ্ছে বাংলাদেশে। কিন্তু রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির প্রচার-পোস্টার প্রায় নজরেই পড়ছে না। হাসিনা কাল বলেন, ‘‘নিজেদের ঝগড়ায় বিএনপি প্রচার করতে পারছে না, দোষ দিচ্ছে আমাদের।’’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি বলেন, ‘‘বিরোধী নেতা-কর্মীদের মামলা দিয়ে হেনস্থা করছে পুলিশ। প্রচারে বেরোলে গ্রেফতার করছে। হামলা করছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে।’’
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এ দিনই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে দেখা করে প্রচারে হিংসার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে মিলার বলেন, গত দু’সপ্তাহ ধরে প্রচারের সময়ে হিংসার ঘটনায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। সব দলই হামলার শিকার হয়েছে। বিরোধীদের উপর হামলা একটু বেশি হয়েছে। সংখ্যালঘু ও মহিলা প্রার্থীরাও রেহাই পাননি। এই পরিস্থিতিতে রবিবারের নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, নির্বাচন কমিশনের উচিত তার উপযুক্ত ব্যবস্থা করা। নির্বাচনের সংবাদ প্রকাশ যাতে অবাধ হয়, সে বিষয়টিও দেখা উচিত।
আওয়ামি লিগের এক নেতা বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মতো তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রচারের সময়ে প্রতিপক্ষের হামলায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। প্রার্থীরাও হামলার শিকার হয়েছেন। সরকার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাইলেও বিএনপি ও জামাতে ইসলামি হার নিশ্চিত দেখে হিংসা ছড়িয়ে ভোট বানচালের চক্রান্ত করছে।
কাল ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময়ে আওয়ামি লিগের সভানেত্রী তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সঙ্গে আইএসআইয়ের সম্পর্কের অভিযোগ করেছিলেন। রিজভি এ দিন পাল্টা অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও শাসক দলের কর্মীদের আক্রমণে বিরোধীরা প্রচার করতে পারছে না। এ সব থেকে নজর ঘোরাতেই প্রধানমন্ত্রী বিএনপির সঙ্গে পাকিস্তানের যোগাযোগের ‘কাহিনি সাজাচ্ছেন’। বিএনপি নেতা দাবি করেন, নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে তাঁদের ৯ হাজার ২০০ জন কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শাসক দলের হামলায় আহত হয়েছেন ১২ হাজার নেতা-কর্মী।
তবে সরকারের ব্যাখ্যা, নতুন করে মামলা দেওয়া হয়নি। বিরোধী নেতা-কর্মীরা অনেকেই নাশকতার নানা মামলায় অভিযুক্ত। এত দিন গা-ঢাকা দিয়ে বেড়ানোর পরে প্রকাশ্যে আসায় তাঁদের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।