প্রতীকী ছবি।
দিনের আলোয় প্রকাশ্য রাস্তায় এক দল লোক এক তরুণকে ঘিরে ধরে রামদা দিয়ে কোপাচ্ছে। তরুণের সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী আততায়ীদের বাধা দিতে গিয়েও পেরে উঠছেন না। আক্রান্তকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন এক রাস্তা লোকের মধ্যে কেবল মাত্র এক জন। বাকিরা নীরব দর্শক, মোবাইলে ভিডিয়োও তুলেছেন কেউ কেউ। বাংলাদেশের বরগুনা শহরে দিন কয়েক আগে সকাল ১০টায় ঘটে যাওয়া সেই হত্যাকাণ্ডের ভিডিয়ো ফেসবুক-টুইটারে ছড়িয়ে পড়ার পরে হইচই শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। মানুষের প্রতিবাদহীনতা নিয়ে যেমন বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে, আততায়ীরা শাস্তি পাবেন কি না— সেই প্রশ্নও উঠেছে। কারণ তারা এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী এবং শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
বরগুনায় এই হামলায় নিহত তরুণ রিফাত শরিফ মাস খানেক আগে বিয়ে করেছিলেন কলেজ ছাত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নিকে। স্থানীয় দুষ্কৃতী সাবির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন ‘বন্ড’ দলবল নিয়ে তাঁকে কোপাতে থাকে। মিন্নির দাবি এই দুষ্কৃতী অনেক দিন ধরেই তাঁকে উত্যক্ত করতো। অন্য কাউকে বিয়ে করলে উচিত শিক্ষা দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, জনতাকে তোয়াক্কা না করে দিনেদুপুরে দুষ্কৃতীদের এই বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটার পরেও আততায়ীরা গ্রেফতার না হওয়ার অর্থ, পুলিশের সক্রিয়তার অভাব রয়েছে। আওয়ামি লিগের প্রবীণ নেতা মহম্মদ নাসিম দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, কেউ যেন এই দুষ্কৃতীদের আশ্রয় না দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, ‘‘ভিডিয়ো দেখে ১৩ জন দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সব অভিযুক্তকে ধরা হবে।’’ প্রধান অভিযুক্ত নয়নকে ধরা না গেলেও তার তিন সহচরকে আটক করা গিয়েছে। তবে সরকারের এই সক্রিয়তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন অনেকে। না হলে মফস্সলের এই ঘটনা হয়তো খুনের ঘটনা হয়েই চাপা পড়ে যেত।