কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডে (ইপিএফ) সদস্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষ উৎসাহ প্রকল্প চালু হয়েছে আগেই। যাতে দেশের নিয়োগকর্তারা আরও বেশি কর্মীকে এর আওতায় আনতে উদ্যোগী হন। ইপিএফ কর্তৃপক্ষের দাবি, কাজে লেগেছে সেই কৌশল। নতুন প্রকল্পের হাত ধরেই আগামী দিনে দেশ জুড়ে আরও প্রায় ৬০ লক্ষ কর্মীর পিএফ-বৃত্তে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, যে সব নিয়োগকর্তা যোগ্য কর্মীদের পিএফের আওতায় আনবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী দফায় নেওয়া হতে পারে ব্যবস্থাও।
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের পিএফে সামিল করতে উদ্যোগী হচ্ছেন না অনেক নিয়োগকর্তা— এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই সম্প্রতি নড়েচড়ে বসেন ইপিএফ কর্তৃপক্ষ। নিয়োগকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করতে ঘোষণা করেন প্রকল্প। এতে দেওয়া সুবিধাগুলির মধ্যে অন্যতম দু’টি:
১) ২০১৬-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যাঁদের পিএফের আওতায় আনা হয়নি, এ বার তাঁদের সেই সুযোগ দিলে নিয়োগকর্তার ক্ষতিপূরণ প্রায় পুরোটাই মকুব হবে। বছরে শুধু ১ টাকা করে দিয়েই রেহাই পাবেন তিনি। পিএফ আইনের ১৪বি ধারায় ওই ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ছিল অনেক বেশি।
২) পিএফের আওতায় আনা নতুন সদস্যের জন্য কোনও পরিচালন খরচ বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ চার্জও নেওয়া হবে না নিয়োগকারীর কাছ থেকে।
পিএফ উৎসাহ প্রকল্পটি আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছিল। এ বার সময়সীমার কাছাকাছি পৌঁছে পিএফ কর্তৃপক্ষের দাবি, এই উদ্যোগ প্রত্যাশিত ফল দিতে চলেছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। এর আওতায় দেশের আরও ৬০ লক্ষ কর্মী যোগ হওয়ার ইঙ্গিত তো মিলেইছে। এমনকী সংখ্যাটা আরও বেড়ে ১ কোটির কাছাকাছিও পৌঁছে যেতে পারে।
সম্প্রতি এমসিসি চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত প্রভিডেন্ট ফান্ড নিয়ে আলোচনাসভায় রাজ্যের আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার রাজীব ভট্টাচার্য জানান, কলকাতায় ৩৯ হাজার নতুন সদস্যকে সামিল করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়েছিল। সেখানে পিএফ উৎসাহ প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ৫০ হাজারেরও বেশি নতুন সদস্য নথিভুক্ত হয়েছেন। প্রকল্পটি শেষ হচ্ছে ৩১ মার্চ। রাজীববাবু বলেন, ‘‘আমাদের আশা, কলকাতা ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে তা ১ লক্ষ ছাড়াবে।’’
কালো টাকা উদ্ধারের জন্য যাঁরা কেন্দ্রের আনা স্বেচ্ছা আয় ঘোষণা প্রকল্পে সামিল হননি, তাঁদের পরবর্তী কালে আয়কর দফতরের তদন্তের মুখে পড়তে হয়েছে। পিএফেও ওই উৎসাহ প্রকল্পে সাড়া না-দেওয়া নিয়োগকর্তারা তেমন ব্যবস্থার মুখে পড়বেন কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে রাজীববাবু বলেন, ‘‘সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’
পিএফের আর এক কমিশনার পরিতোষ কুমার জানান, নিয়োগ -কর্তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে পিএফ খাতে তাঁদের দেয় অঙ্কের পরিমাণ কমানোর প্রস্তাবও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। এর মধ্যে রয়েছে নির্মাণ, বিড়ি, ইট ভাটা-সহ আরও কয়েকটি শিল্প।