Repo Rate

ঋণগ্রহীতার স্বস্তি ক’দিন, ইঙ্গিত মার্চের মূল্যবৃদ্ধিতে

এ বার রেপো বাড়ানো হল না বলে ভবিষ্যতেও হবে না, এমন আশ্বাস অবশ্য দেয়নি আরবিআই। বরং বলেছে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না এলে তা বৃদ্ধির পথ খোলাই থাকছে।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:২৩
Share:

ঋণে নতুন করে সুদ বাড়বে না। অর্থাৎ বাড়ি-গাড়ির ধার শোধ করার মাসিক কিস্তি (ইএমআই) হয়তো এখনই আর চড়বে না। প্রতীকী ছবি।

বাজারে এক শ্রেণির মানুষ আশা করেছিলেন টানা ২৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ (রেপো রেট, যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় আরবিআই) বাড়ানোর পরে, এ বার হয়তো রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক তাতে ইতি টানবে। অন্যদের অনুমান ছিল, বাড়লেও তা ২৫ বেসিস পয়েন্টের বেশি হবে না। এই আশায় ভর করে শেয়ার সূচক বাড়ছিল তরতরিয়ে। বৃহস্পতিবার সুদ ঘোষণার আগের চার দিনে সেনসেক্স ওঠে ২০৭৫ পয়েন্ট। অবশেষে জানা গেল এই দফায় সত্যিই রেপো বাড়ছে না। অর্থাৎ তা থাকছে ৬.৫০ শতাংশেই। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ঋণগ্রহীতারা। উৎফুল্ল হয়েছেন শেয়ার এবং বন্ডের লগ্নিকারীরা। সুদ ঘোষণার পরে দিনের শেষে ১৪৪ পয়েন্ট এগোয় সেনসেক্স। সপ্তাহ শেষ করে ৫৯,৮৩৩ অঙ্কে।

Advertisement

এ বার রেপো বাড়ানো হল না বলে ভবিষ্যতেও হবে না, এমন আশ্বাস অবশ্য দেয়নি আরবিআই। বরং বলেছে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না এলে তা বৃদ্ধির পথ খোলাই থাকছে। সুদ এক জায়গায় স্থির রাখার সিদ্ধান্ত শুধু এই ঋণনীতির জন্য। অর্থাৎ সুদ বাড়ানোর পথ (হকিশ) থেকে সুদ কমানোর পথে (ডভিশ) এখনই হাঁটছে না শীর্ষ ব্যাঙ্ক। ক’দিন পরে জানা যাবে মার্চে ভারতের খুচরো মূল্যবৃদ্ধি কী ছিল। ৬ থেকে ৮ জুন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি নির্ধারণ কমিটি ফের বৈঠকে বসবে সুদের হার পর্যালোচনা করতে। তার আগে সামনে এসে যাবে এপ্রিলের মূল্যবৃদ্ধিও।

এই দফায় রেপো রেট না বাড়ার প্রভাব কী হতে পারে, তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—

Advertisement

ঋণে নতুন করে সুদ বাড়বে না। অর্থাৎ বাড়ি-গাড়ির ধার শোধ করার মাসিক কিস্তি (ইএমআই) হয়তো এখনই আর চড়বে না।

ব্যাঙ্কের জমাতেও সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। তবে ডাকঘরের বিভিন্ন প্রকল্পে এই হার অনেকটা করে বাড়ায় আমানত টানতে কোনও কোনও ব্যাঙ্ককে সুদ বাড়াতে হতে পারে।

খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি যদি একটু মাথা নামায়, তা হলে উৎফুল্ল হতে থাকবে শেয়ার বাজার।

রেপো রেট বৃদ্ধিতে ছেদ পড়ায় খুশির ঢেউ ঋণপত্রের (বন্ড) বাজারে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরে বৃহস্পতিবার খোলা বাজারে বন্ডের দাম বেশ খানিকটা বাড়ে। ফলে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ড ইল্ড নেমে আসে ৭.২১ শতাংশে। যা এর আগে ঘোরাফেরা করছিল ৭.৩০% থেকে ৭.৩৫ শতাংশের মধ্যে।

বন্ড এবং শেয়ারের দাম বাড়ায় খানিকটা করে বেড়েছে শেয়ার ভিত্তিক এবং ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডের ন্যাভ।

রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান এপ্রিল থেকে মার্চের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি বর্তমানের ৬.৪৪% থেকে নামবে ৫.১ শতাংশের আশেপাশে। তা যদি সত্যি হয়, তা হলে সুদ বৃদ্ধির বদলে কমার সম্ভাবনা দেখা দেবে। কম সুদের জমানা ফিরতে শুরু করলে তা ফের শেয়ার বাজারকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে। তবে বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতির নিরিখে এই আশা এখনই করা যাচ্ছে না।

যে সব দিকে এখন বাজারের নজর থাকবে, তা হল—

মার্চে খুচরো এবং পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার।

ফেব্রুয়ারির শিল্পোৎপাদন।

আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম, যা গত কয়েক দিন ধরে ফের চড়তে শুরু করেছে।

কৃষির উপরে তাপপ্রবাহের প্রভাব।

বর্ষার সম্পর্কে আগাম বার্তা।

গত অর্থবর্ষ (২০২২-২৩) এবং তার শেষ তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশের সংস্থাগুলির আর্থিক ফল।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন