Air India

বকেয়া উদ্ধারে কেয়ার্নের নিশানায় এয়ার ইন্ডিয়া

ইতিমধ্যেই ডিসেম্বরের সালিশি রায়ের মান্যতা চেয়ে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস এবং অন্য তিনটি দেশে মামলা করেছে কেয়ার্ন এনার্জি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ০৫:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেয়ার্ন এনার্জির বকেয়া কর মামলায় সংস্থাটিকে সুদ ও খরচ মিলিয়ে ১৭২.৫ কোটি ডলার (প্রায় ১২,৬০০ কোটি টাকা) ফেরাতে ভারতকে গত ডিসেম্বরে নির্দেশ দিয়েছিল নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সালিশি ট্রাইবুনাল। যার বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্র। এই অবস্থায় সেই টাকা উদ্ধারের জন্য আমেরিকার আদালতে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করল ব্রিটিশ সংস্থাটি। তাদের আর্জি, রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটিকে ভারত সরকারের ‘দ্বিতীয় সত্ত্বা’ বা ‘অল্টার ইগো’ বলে ঘোষণা করা হোক। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রায় তাদের পক্ষে গেলে এয়ার ইন্ডিয়ার সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা উদ্ধারের পথ খুলবে কেয়ার্নের সামনে।

Advertisement

ইতিমধ্যেই ডিসেম্বরের সালিশি রায়ের মান্যতা চেয়ে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস এবং অন্য তিনটি দেশে মামলা করেছে কেয়ার্ন এনার্জি। ভারত এখনও সালিশি আদালতের নির্দেশ মানেনি। সূত্রের খবর, এর মধ্যেই শুক্রবার নিউ ইয়র্কের সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে এয়ার ইন্ডিয়ার সম্পত্তি হাতে নিতে ‘পিয়ার্স কর্পোরেট ভেল’ মামলা করে প্রথম আইনি পদক্ষেপটি করেছে সংস্থা। লগ্নিকারীদের স্বার্থরক্ষার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে কেয়ার্নের দাবি।

মামলার আর্জিতে ব্রিটিশ তেল সংস্থাটির যুক্তি, এয়ার ইন্ডিয়া ভারত সরকার দ্বারা পরিচালিতই শুধু নয়, বিমান মন্ত্রকের মাধ্যমে সংস্থার আর্থিক থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজই হয় কেন্দ্রের অধীনে। জাতীয়করণের প্রথম দিন থেকে সরকার তাকে নিজের অংশ বলে দাবি করে এসেছে, আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিসেবে নয়। ফলে সেই সূত্রে তারা দেশের ঋণের জন্য, এমনকি বকেয়া মেটানোর জন্য দায়ী। উল্লেখ্য, এই ‘পিয়ার্স কর্পোরেট ভেল’ মামলার আওতায় দায়ী না-হলেও কোনও তৃতীয় পক্ষের উপরে দায় চাপানো যায়। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত নির্দেশিকা (বানসেক গাইডলাইন্স) অনুসারে কেন্দ্রের বদলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বা সংস্থার উপরে কেয়ার্নকে অর্থ দেওয়ার দায় চাপতে পারে কি না, তা-ই ঠিক করা হবে। রায় কেয়ার্নের পক্ষে গেলে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান, স্থাবর সম্পদ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করে টাকা তুলতে পারবে তারা।

Advertisement

এখনও পর্যন্ত মামলা সংক্রান্ত নোটিস কেন্দ্র বা কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছে পৌঁছয়নি। তবে সূত্র জানাচ্ছে, তা হাতে আসার পরে ‘বেআইনি ভাবে সম্পত্তি দখলের এই প্রচেষ্টা’ রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নেবে সরকার। ইতিমধ্যেই আইনজীবীদের সঙ্গে কথা শুরু করেছে তারা। বলেছে, বিদেশে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে সতর্কতা অবলম্বন করতেও।

ভারতের সম্পত্তি কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে বেচায় ব্রিটিশ সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জিকে বকেয়া ১০,২৪৭ কোটি টাকা কর দিতে বলেছিল আয়কর দফতর। পরে তা আদায়ে বেদান্তে (যারা পরে কেয়ার্ন ইন্ডিয়া কিনেছে) কেয়ার্ন এনার্জির শেয়ার বেচে দেয় দফতর, ডিভিডেন্ড বাজেয়াপ্ত করে, আটকায় ফেরতযোগ্য করও। এর বিরুদ্ধেই আন্তর্জাতিক স্থায়ী সালিশি আদালতে যায় কেয়ার্ন। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, দেশের মধ্যে লেনদেনের উপরে কেন্দ্রের কর বসানোর অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ট্রাইবুনালের রায়। তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো তাঁদের কর্তব্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন