পূর্বাভাস ছিলই। অনাদায়ি ঋণ ও অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা যে এত সহজে কিংবা তাড়াতাড়ি পিছু ছাড়বে না, সেই ইঙ্গিত দিয়েছিল বেশ কয়েকটি সমীক্ষা। সেই আশঙ্কা সত্যি করে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে লোকসানের মুখ দেখছে অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। সেই তালিকায় নাম উঠল স্টেট ব্যাঙ্কেরও। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ৪,৮৭৬ কোটি টাকা ক্ষতি হওয়ার কথা জানাল তারা।
শুধু তা-ই নয়। এই নিয়ে টানা তিন ত্রৈমাসিকে লোকসান সইতে হল দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে। স্টেট ব্যাঙ্কের যুক্তি, বেতন সংশোধন, ট্রেজারি খাতে ক্ষতি, বন্ড ইল্ড বাড়া সমেত বিভিন্ন কারণেই এই লোকসান হয়েছে তাদের। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, তাতে অনুৎপাদক সম্পদের ভূত পিছু ছাড়ছে না। কারণ, আলোচ্য সময়ে তাদের নিট অনুৎপাদক সম্পদ কমেছে সামান্য (৫.৯৭% থেকে কমে ৫.২৯%)। কিন্তু তেমনই আবার মোট অনুৎপাদক সম্পদের অনুপাত মোট ঋণের ৯.৯৭% থেকে বেড়ে হয়েছে ১০.৬৯%। একই সমস্যা তাড়া করেছে অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকেও।
এই কারণে অনেকে মনে করছেন, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা কাটিয়ে পুরোপুরি বেরিয়ে আসা কঠিন হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে। যদিও তাদের দাবি, হিসেবের খাতা দ্রুত সাফ করতেই অনুৎপাদক সম্পদ খাতে বেশি সংস্থান করতে হচ্ছে তাদের। ব্যাঙ্কগুলির দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আয় এবং মোট মুনাফা বাড়লেও, অনুৎপাদক সম্পদ খাতে আর্থিক সংস্থান করতে গিয়েই লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
২০১৭-১৮ সালে কেন্দ্র বন্ড ও নগদ মিলিয়ে ৮৮ হাজার কোটি টাকা মূলধন জোগানোর ব্যবস্থা করেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির জন্য। ওই বছর তার পুরোটাই মুছে গিয়েছিল লোকসানের বহর বৃদ্ধির চাপে। গত অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মোট লোকসান ৮৭ হাজার কোটি। এ বারের মূলধনও তাতে ধুয়ে যায় কি না, এখন সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দেশের ব্যাঙ্কিং মহল।