—প্রতীকী ছবি।
ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতির খবরে সোমবার ১২ মে লম্বা লাফ দিয়েছিল শেয়ার সূচক। উঠতি বাজারের মুনাফা বিনিয়োগকারীরা ঘরে তুলতেই মঙ্গলবার শেয়ার বাজারের সূচক পড়ল ১২০০ পয়েন্ট। সপ্তাহের দ্বিতীয় কাজের দিনে বাজার খোলার পর লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিট পরেই সূচক সবুজ থেকে লাল হতে দেখা যায়। দিনের শুরুতে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা নিফটি ছিল ২৪,৮৬৪.০৫, বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স ছিল ৮২,২৪৯.৬০। সেনসেক্স নামতে শুরু করে ৮০০ পয়েন্টেরও বেশি। নিফটি সূচকও পড়ে যায় ২৫০ পয়েন্ট। ১,৩৮৬ পয়েন্ট বা ১.৭ শতাংশ কমে দিনের সর্বনিম্ন ৮১,০৪৩.৬৯-এ নেমে আসে। যেখানে নিফটি ৫০,৩৭৭ পয়েন্ট বা ১.৫ শতাংশ কমে দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৪,৫৪৭.৫০-এ নেমে আসে। বাজার বন্ধের আগে ২৮২ পয়েন্ট বা ১.৫৫ শতাংশ কমে ৮১,১৪৮.২২-এ বন্ধ হয়েছে সেনসেক্স সূচক। ৩৪৬ পয়েন্ট বা ১.৩৯ শতাংশ কমে ২৪,৫৭৮.৩৫-এ স্থির হয়েছে নিফটি।
বাজার বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন সোমবার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর মঙ্গলে বাজার ধরাশায়ী হওয়ার মূল কারণ হল শর্ট সেলিং। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা কমে আসার পর সোমবারের সেশনে ভারতীয় শেয়ার বাজারের সূচক প্রায় ৪ শতাংশ বেড়ে যায়। এই তীব্র উত্থান মূলত শর্ট কভারিংয়ের কারণে হয়েছিল। এর ফলে খুচরো বিনিয়োগকারীরা মুনাফা বিক্রি করতে শুরু করেন। দ্বিতীয় কারণ আমেরিকার শুল্ক চুক্তির সমস্যা। সেই সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি বলেই মত আর্থিক বিশেষজ্ঞজদের।
বাণিজ্য যুদ্ধের উদ্বেগ এখনও কাটেনি, যদিও আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন যে আমেরিকা ও চিন বাণিজ্য চুক্তি ভারতীয় শেয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই চুক্তি সম্পাদিত হলে ভারতীয় পণ্য বাদ দিয়ে চিনা পণ্য কেনার দিকে ঝুঁকতে পারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহল। সেটি কার্যকর হলে ভারতীয় শেয়ার বাজার থেকে নতুন করে বিদেশি মূলধন বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীরা। সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর আবার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের। ভারতের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ করার বার্তা জারি করার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও পাল্টা জবাব দেওয়া হতে পারে।
ব্রোকারেজ ফার্মগুলি জানিয়েছে মঙ্গলবার ৭৬টি শেয়ারের দাম ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ পৌঁছেছে। নিফটিতে গতকাল সর্বাধিক লাভবান হয়েছিল ইনফোসিস। মঙ্গলবার সেই শেয়ারের দর কমেছে ২.৫৩ শতাংশ। অন্য দিকে, লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে জোম্যাটো, এইচসিএল, উইপ্রোর মতো একাধিক নামজাদা সংস্থার।