নয়া দেউলিয়া বিধিতে আশঙ্কা ঋণদাতাদেরও

স্বেচ্ছায় ঋণ খেলাপি যাতে নিলামে ওঠা নিজের সংস্থা ফের ঘুরপথে হাতে নিতে না-পারেন, তার জন্য সদ্য অর্ডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) জারির কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তার মাধ্যমে বদল এনেছে দেউলিয়া বিধিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫১
Share:

স্বেচ্ছায় ঋণ খেলাপি যাতে নিলামে ওঠা নিজের সংস্থা ফের ঘুরপথে হাতে নিতে না-পারেন, তার জন্য সদ্য অর্ডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) জারির কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তার মাধ্যমে বদল এনেছে দেউলিয়া বিধিতে। কিন্তু তাতে কড়া দেউলিয়া বিধি আনার মূল উদ্দেশ্যই ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিল্পমহলের একাংশ। বিশেষত ঋণদাতা সংস্থাগুলি।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে শনিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে শিল্পমহলের বেশ কয়েক জন প্রতিনিধিই বলেন, সমস্ত ঋণ খেলাপি প্রোমোটারকেই নিলামে অংশ নিতে না-দিলে, তাতে ওঠা সংস্থা কেনার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কমবে। এর ফলে কমবে ভাল দাম পাওয়ার সম্ভাবনা। প্রবণতা বাড়বে জলের দরে তা বিক্রি হয়ে যাওয়ার (হয়তো প্রত্যাশিত দামের ২০%)। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতা জোগাড় করাই রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

দেউলিয়া বিধি নিয়ে কড়াকড়ির অন্যতম লক্ষ্যই ছিল, ঋণ খেলাপি সংস্থার সম্পদ যত দ্রুত সম্ভব ভাল দরে সম্ভব বেচে ঋণদাতার ঘরে সেই টাকা পৌঁছনোর বন্দোবস্ত করা। কিন্তু বিধি পাল্টানোর জেরে আদপে সেই উদ্দেশ্যই ধাক্কা খাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

Advertisement

শ্রেয়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিনান্সের সিএমডি হেমন্ত কানোরিয়া বলেন, ‘‘যে ভাবে নিলামের কথা বলা হচ্ছে, তাতে অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত দরের অর্ধেকও পাওয়া যাবে কি না, সন্দেহ।’’ তাঁর আশঙ্কা ‘‘সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি তাদের পাওনা মোটামুটি পেলেও, বেশি সমস্যায় পড়বে আমাদের মতো বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলি।’’ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া।

বিধি বদলের বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, স্বেচ্ছায় ঋণ খেলাপের ইতিহাস রয়েছে কিংবা ঋণ অন্তত এক বছরের জন্য শোধ না-করায় তা বদলে গিয়েছে অনুৎপাদক সম্পদে, এমন সংস্থাকে নিজের সম্পদ ফেরানোর নিলামে অংশ নিতে দেওয়া হবে না। তাদের যুক্তি, নইলে অনেক কম টাকায় (যেহেতু দেউলিয়া সংস্থা হিসেবে আসল দরের তুলনায় কমে তা বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা) নিজেদের সম্পদ ফিরে পাবে তারা। উপরন্তু বইতে হবে না ধারের বোঝা।

সেই যুক্তি মানলেও শিল্পমহল সকলকে এক গোত্রে ফেলার বিপক্ষে। কানোরিয়ার কথায়, ‘‘সমস্ত প্রোমোটারকে এক শ্রেণিতে ফেলা ঠিক নয়। বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের উদ্দেশ্য যাচাই করার পরে নিলামে অংশ নিতে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’’ অনেক ক্ষেত্রে বেহাল অর্থনীতি, ব্যবসায় ভাটা, প্রকল্প থমকে থাকা ইত্যাদিও ঋণ শোধ না-করার কারণ হয় বলে তাঁদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন