এ বার ‘স্টক ক্লিয়ারেন্স’ আবাসন শিল্পেও।
ই-মেলের ইনবক্স, মোবাইলের মেসেজ বক্স বা খবরের কাগজে পাতা জুড়ে বিজ্ঞাপন। সর্বত্রই উপচে পড়ছে নিত্যনতুন ফ্ল্যাট বিক্রির খবর। আর সঙ্গে বিনামূল্যে পার্কিং-এর জায়গা, নতুন বাড়ি সাজানোর জন্য আসবাবপত্র থেকে গাড়ি, আইফোন ও নামমাত্র সুদে গৃহঋণের মতো বাড়তি সুবিধা ও উপহারের চমক।
আবাসন শিল্প এখনও ‘আচ্ছে দিন’-এর আশায় দিন গুনছে। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, ২০১৪ সালে ব্যবসা তলানিতে এসে ঠেকে। সেই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও গত বছরের ব্যবসার ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা কম। বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, কলকাতা-সহ বড় শহরগুলিতে ১৭ শতাংশ ব্যবসা কমেছে। এর ফলে নতুন প্রকল্পের সংখ্যাও কমেছে ২৮ শতাংশ।
আর এই মন্দার মতো পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্রেতাকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দিতে পিছপা হচ্ছে না ছোট-বড় নির্মাণ সংস্থা। কুশম্যান ওয়েকফিল্ড ও জোনস লাং লাসেল-এর মতো উপদেষ্টা সংস্থার মতে, যত দ্রুত সম্ভব ফ্ল্যাট বিক্রি করতে চাইছে বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থা। বিক্রিতে দেরি হলে বাড়বে প্রকল্পের খরচ। কারণ সুদের বোঝা ক্রমশ বাড়বে। ফলে খরচ তুলতে লাভ কিছুটা কম রাখতেও রাজি আবাসন নির্মাতারা।
বাজার ধরার এই নতুন বিপণন কৌশল হিসেবে তাই উপহারের চমক দিতে কসুর করছে না সংস্থাগুলি। ফ্ল্যাট বিক্রি করতে উপহার হিসেবে গাড়ি দিয়েছে নামী-দামি নির্মাণ সংস্থা। তালিকায় থাকছে অ্যাপল ফোন, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে নতুন ফ্ল্যাট আসবাব দিয়ে সাজানোর ব্যবস্থাও। রয়েছে ক্যাশব্যাক-এর সুবিধাও। এত দিন বড় দোকানে বেশি কেনাকাটা করলে পাওয়া যেত ক্যাশব্যাক বা টাকা ফেরতের সুবিধা। এখন কিছু ক্ষেত্রে তা ফ্ল্যাট কিনলেও মিলছে।
তবে এয়ারকন্ডিশনার, মোবাইল বা ল্যাপটপের মতো উপহারের কারণে ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত বদল হয় না বলে দাবি কুশম্যান ওয়েকফিল্ডের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান অভিজিৎ দাসের। তিনি বলেন, ‘‘ছোটখাটো উপহার দিয়ে ক্রেতা টানা যায় না। ফ্ল্যাট হাতে তুলে দেওয়ার আগে পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ঋণের বোঝা নির্মাণ সংস্থা বহন করলে, তা অবশ্যই ক্রেতা টানবে। টাকার অঙ্কে এই সুবিধার অর্থ ফ্ল্যাটের দামে ১০ শতাংশ ছাড়।’’ ক্রেতাদের মনে প্রাথমিক ভাবে দাগ কাটতে উপহারের কৌশল কাজে দেয় বলে মানলেন জৈন গোষ্ঠীর ঋষি জৈন। তবে তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয় না বলেই তাঁর দাবি।
বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছে জাতীয় স্তরের সংস্থাও। তবে সরাসরি দামে ছাড় দেয় না তারা। যেমন ডিএলএফ-এর দাবি, দামের ক্ষেত্রে আপস না-করে অন্য সুযোগ-সুবিধা দেয় তারা। একই সুরে দিল্লির টিডিআই ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স কর্তৃপক্ষ জানান, অযথা দাম বাড়িয়ে রেখে ছাড় দেওয়া অর্থহীন। বরং সহজ কিস্তিতে ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করে ক্রেতা টানার কৌশল অনেক বেশি কাজে দেয় বলে তাঁদের দাবি।
ক্রেতা টানার এই কৌশল কাজে লাগাচ্ছে অনলাইন সংস্থাও। যেমন কলকাতার আবা