পুরনো নোটে নগদ কত, যাচাই এ বার কর দফতরেই

শুধুমাত্র মুখে জানালেই আর চলবে না। এ বার পুরনো পাঁচশো, হাজারের নোটে হাতে থাকা নগদের পরিমাণ ঠিক কত, তা যাচাই করে দেখবে খোদ আয়কর দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৩
Share:

শুধুমাত্র মুখে জানালেই আর চলবে না। এ বার পুরনো পাঁচশো, হাজারের নোটে হাতে থাকা নগদের পরিমাণ ঠিক কত, তা যাচাই করে দেখবে খোদ আয়কর দফতর। জানিয়েছেন, দফতরের ইনটেলিজেন্স ও ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত ডিরেক্টর প্রিয়ব্রত প্রামাণিক।

Advertisement

সম্প্রতি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়ার (আই সি এ আই) পূর্বাঞ্চলীয় শাখা আয়োজিত ডিমানিটাইজেশন সংক্রান্ত এক আলোচনাসভার শেষে প্রিয়ব্রতবাবুর দাবি, নোট বাতিলের পরে বহু ব্যবসায়ীই পুরনো পাঁচশো, হাজারে নগদের সঠিক পরিমাণ দেখানো নিয়ে দুর্নীতি করছেন। সারা বছরে ব্যবসা থেকে মোট যা আয়, তার থেকেও হাতে থাকা নগদ বেশি দেখাচ্ছেন অনেকে। কালো টাকা সাদা করাই এর লক্ষ্য বলে আয়কর দফতরের সন্দেহ। যা রুখতেই এই পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী কী ঘোষণা করলেন, তার উপর এখন আর নির্ভর করা হচ্ছে না। ব্যবসার অডিট করা হিসাব পরীক্ষা করে দেখেই ওই নগদের পরিমাণ নির্ধারণ করছি। ব্যবসায়ীর প্রদত্ত হিসাব নিয়ে সন্দেহ জাগলে তা আয়কর আইনের ১৪২ (২এ) ধারা অনুযায়ী আবার অডিটের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে বিশেষ অডিটের নির্দেশও দিতে পারি।’’

Advertisement

আইসিএআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্ত জানিয়েছেন, আয়কর দফতরের এই উদ্যোগে পাশে আছেন তাঁরা। অনির্বাণবাবুর দাবি, ‘‘যে-কোনও সংস্থার হিসাব পরীক্ষার ক্ষেত্রে আয়কর দফতরকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করে আইসিএআই। ভবিষ্যতেও করবে। এমনকী সংস্থার হিসাব পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে কোনও সদস্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হলেও তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইসিএআই।’’

আয়কর দফতর সূত্রে খবর, অনেক ব্যবসায়ী আবার পুরনো নোটে হাতে থাকা নগদের পরিমাণ অনেকখানি বাড়িয়ে ঘোষণা করে রেখেছিলেন। এখন আয়কর দফতরের কাছে ঘোষণা অনুযায়ী হিসাব দেওয়ার জন্য পুরনো নোট অতিরিক্ত দাম দিয়ে বাজার থেকে কিনছেন। অনেক ক্ষেত্রে ওই বাড়তি দামের বহর আসলের থেকে ৪০% বেশি বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ওই সূত্র।

প্রিয়ব্রতবাবু বলেন, ‘‘এ বার থেকে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিলেই যে তা সাদা বলে গ্রাহ্য হবে, তা নয়। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা প্রতিটি জমার চুলচেরা বিচার করছি। যেখানে সন্দেহ হচ্ছে, সেখানেই টাকার মালিককে ডেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টাকা বেনামে রাখা হয়েছে কি না, বা হিসেবে কোনও গরমিল রয়েছে কি না, সে সব যাচাই করার পরেই তা সাদা টাকার তকমা পাবে।’’

এ দিকে, গত জুনে যাঁরা আয় ঘোষণা প্রকল্পে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির কথা জানিয়েছেন, তাঁরাও প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা প্রকল্পে কালো টাকা ঘোষণা করতে পারবেন বলে জানান প্রিয়ব্রতবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন