প্রতীকী ছবি।
মোবাইলই হয়ে উঠবে ব্যাঙ্ক। পকেটে কেউ আর নগদ নিয়ে ঘুরবেন না। দেড় বছর আগে, নোট বাতিলের পরে এমনই কম নগদ আর ডিজিটাল ভারতের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী।
এখন ফের এটিএমে নোটের আকাল দেখা দিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল লেনদেন স্বপ্নই রয়ে গিয়েছে। মানুষ এখনও নগদে কেনাবেচার অভ্যাস থেকে বেরোতে পারেননি। স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা ইকোর্যাপের রিপোর্টও বলছে, বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে হিসেব করলে বাজারে নোট যা থাকার কথা এবং যা রয়েছে, তার মধ্যে ফারাক ১.৯ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন ১.২ লক্ষ কোটির অভাব মিটিয়েছে ঠিকই। তা-ও ৭০ হাজার কোটি টাকার নোটের ঘাটতি থাকছেই। ওই রিপোর্টেই প্রকাশ, গত অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ছ’মাসের চেয়ে এটিএম থেকে ডেবিট কার্ডে টাকা তোলা ১২.২% বেড়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের ব্যাঙ্ক পরিষেবা দফতরের এক কর্তা বলেন, চাহিদা যে ভাবে বেড়েছে, তাতে স্পষ্ট, এখনও কেনাবেচায় নগদই প্রাধান্য পাচ্ছে। তা সে কালো টাকা সাদা করতেই হোক বা রোজকার প্রয়োজনে। তার থেকেও গুরুতর বিষয়, নোটের অভাব দেখা দিলেও মানুষ ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে প্রয়োজন মিটিয়ে নিচ্ছেন না। ফলে নগদের হাহাকার থেকেই যাচ্ছে।
কেন্দ্র ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ দিতে ডেবিট কার্ডে ২০০০ টাকার কম লেনদেনে ‘মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট’ তুলে নিয়েছিল। বাড়ানো হয় পিওএস যন্ত্র সরবরাহ। তথ্য বলছে, নোট বাতিলের পরে প্রথম দিকে নগদহীন লেনদেন লাফিয়ে বাড়লেও এক সময়ে তা থমকে গিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, অগস্টে ২৮ লক্ষ থেকে বেড়ে ফেব্রুয়ারিতে তা ৩০ লক্ষে পৌঁছেছে। পিওএস যন্ত্রের পরিষেবা সংস্থাগুলির বক্তব্য, মুনাফা যথেষ্ট নয়। তাই নতুন যন্ত্র সরবরাহ হচ্ছে না।
মেটেনি ঘাটতি
নোটে চাই ১৯.৪
রয়েছে ১৭.৫
ঘাটতি ১.৯
ডিজিটাল লেনদেন ১.২
তা-ও ঘাটতি ০.৭০
হিসেব লক্ষ কোটি টাকায়
এটিএমের ছবি*
অর্থবর্ষ ২০১৭-১৮
প্রথম ছ’মাস ১৩,৬৩,৩০০
শেষ ছ’মাস ১৫,২৯,১০০
অর্থবর্ষ ২০১৬-১৭
প্রথম ছ’মাস ১৩,২৬,৭০০
শেষ ছ’মাস** ১০,৩৩,৬০০
* ডেবিট কার্ডে তোলা টাকার হিসেব কোটি টাকায়
** অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধেই ৮ নভেম্বর হয়েছিল নোট বাতিল
তথ্যসূত্র: স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা ইকোর্যাপ ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক