Shopping Mall

জমা পড়েনি একটিও প্রস্তাব, জেলায় জেলায় শপিং মল তৈরির ডাকে সাড়া দিল না কোনও সংস্থা

ত্রের খবর, বারবার সময়সীমা এবং নির্মাণকারীর যোগ্যতা হিসেবে ব্যবসার অঙ্ক কমিয়েও লাভ হয়নি। যথেষ্ট প্রস্তাব জমা পড়েনি। এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার ফের প্রস্তাব আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৮:১৭
Share:

অনেকগুলিরই অবস্থান ‘শপিং মল’ বা ‘মার্কেটিং হাব’ তৈরির উপযুক্ত নয়। —প্রতীকী চিত্র।

রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং প্রান্তিক শিল্পীদের পণ‍্য বিক্রির জন‍্য বিভিন্ন জেলায় ‘শপিং মল’ তৈরিতে একাধিকবার জমি দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী গত ২০ মার্চ সেগুলি গড়ার প্রস্তাব চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজ্য। কিন্তু সূত্রের খবর, বারবার সময়সীমা এবং নির্মাণকারীর যোগ্যতা হিসেবে ব্যবসার অঙ্ক কমিয়েও লাভ হয়নি। যথেষ্ট প্রস্তাব জমা পড়েনি। এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার ফের প্রস্তাব আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য জানিয়েছে, পুরনো প্রস্তাবের বিজ্ঞপ্তিটি বাতিলের কারণ যথেষ্ট আবেদন না পাওয়া। তবে এ বারও সাড়া মিলবে কি না, সন্দিহান সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।

গত বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে মুখ‍্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জেলায় জেলায় সরকারের চিহ্নিত জমি নিয়ে বহুতল শপিং মল গড়বে আগ্রহী নির্মাণ সংস্থা। ন‍্যূনতম দু’টি তলা সরকারকে দিয়ে বাকিটা বাণিজ‍্যিক ভাবে ব‍্যবহার করতে পারবে। প্রকল্পের পরিচালক পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগম। সূত্রের খবর, দ্বিতীয়বারের বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে প্রস্তাব পাওয়ার লক্ষ্যে শীঘ্রই বিভিন্ন বণিকসভা, নির্মাণ সংস্থা এবং তাদের সংগঠন ক্রেডাইয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রকল্প সম্পর্কে বিশদে জানাবেন নিগম কর্তারা।

নিগমের এমডি নিখিল নির্মল এবং চেয়ার‍ম‍্যান অভিরূপ সরকার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। নিগমের পরিচালন পর্ষদের অন্যতম সদস্য তথা রাজ্যের ছোট শিল্প দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পাণ্ডে বলেন, ‘‘আরও বেশি আবেদন পেতেই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।’’ তবে পর্ষদেরই এক সূত্রের খবর, মোট ১৮টি জেলায় জমি চিহ্নিত হয়েছে বটে। কিন্তু অনেকগুলিরই অবস্থান ‘শপিং মল’ বা ‘মার্কেটিং হাব’ তৈরির উপযুক্ত নয়। রাজেশের অবশ্য মন্তব্য, ‘‘২-৪টে ছাড়া বাকি জমির অবস্থান ভালই।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, এটা ঠিক, সরকারের হাতে যেখানে জমি আছে সেখানেই দেবে। কিন্তু বেসরকারি সংস্থা ব‍্যবসা কোথায় কেমন হবে তা দেখে এগোয়। এ ক্ষেত্রে জমি পছন্দ না হওয়াই সাড়া না দেওয়ার কারণ।

এক নির্মাণ সংস্থার কর্ণধার বলেন, ‘‘প্রতি জেলায় এমন বিপণির প্রয়োজন নিয়েও প্রশ্ন আছে। এলাকার মানুষের হাতে খরচের টাকা না থাকলে বিপণি কাকে বিক্রি করব। সরকারকে দেওয়ার পরে বাকি অংশ কেউ নিতে না এলে বিরাট ক্ষতি হবে। যেখানে সেখানে শপিং মল গড়া যায় না।’’ নিগমের পর্ষদের এক সদস‍্য জানান, সরকারের প্রকল্পের লক্ষ‍্য ভাল। কিন্তু বেসরকারি সংস্থার স্বার্থ রক্ষা না হলে তারা আসবে কেন? ক্রেডাই ওয়েস্ট বেঙ্গলের এক সদস‍্য সংস্থার কর্ণধার বলছেন, ‘‘রাজ‍্যে বেশ কিছু জেলায় শপিং মল হতে পারে। চাহিদা ভাল আছে। কিন্তু স্থান নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। সেটা মাথায় রেখে রাজ্য জমি বাছলে এই পরিস্থিতি হত না।’’ তাঁর আশঙ্কা, সরকারের চাপে হয়তো প্রতিটি জেলায় শপিং মল তৈরির জন্য একটি করে নির্মাণ সংস্থা পাওয়া যাবে। কিন্তু তাতে আসল লক্ষ্য পূর্ণ হবে কি, প্রশ্ন থাকছেই।

ঘটনাক্রম

গত ২০ মার্চ প্রথমবার ‘শপিং মল’ তৈরির প্রস্তাব চেয়ে বিজ্ঞপ্তি (রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজ়াল বা আরএফপি) জারি করে রাজ্য। সেই সময় ৯টি জেলার উল্লেখ ছিল।

তারপর তিন দফায় আরও ৬টি জেলা সেই তালিকায় ঢোকে। প্রকল্প রূপায়ণের জন্য নোডাল দফতর পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগম।

আরএফপি জমার প্রাথমিক সময়সীমা ছিল ১৬ মে। একাধিকবার বাড়িয়ে করা হয় যথাক্রমে ৯ জুন, ৩০ জুন ও ১১ জুলাই।

এর পর ২৪ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রস্তাব (আরএফপি) বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। কারণ, যথেষ্ট আবেদন জমা পড়েনি।

সে দিনই ফের ১৮টি জেলার (তিনটি নতুন সমেত) জন‍্য ফের জারি করা হয় আরএফপি। আবেদনের শেষ তারিখ ১৮ অগস্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন