জিএসটি-র জটিলতায় বিল বাকি চটকলের

কলকাতার ডেপুটি জুট কমিশনার দীপঙ্কর মাহাতো অবশ্য জানিয়েছেন, পরিবহণের উপর জিএসটি ফেরত দেওয়া নিয়ে যেহেতু কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। তা-ই শুধু ওই বিল এখন নেওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ১১:০০
Share:

জিএসটি চালু হওয়ার পরে পদ্ধতিগত কিছু জটিলতার কারণে রাজ্যের চটকলগুলি জুট কমিশনারের পোর্টাল ‘জুটস্মার্ট’-এ কোনও বিল দাখিল করতে পারছে না। ফলে রাজ্যের প্রায় ৭০টি চটকলের ৫০০ কোটি টাকার মতো বিল বকেয়া পড়ে গিয়েছে। এর ফলে বেশ কয়েকটি মিল আর্থিক সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে বলে চটকল মালিকদের একাংশ দাবি করেছেন।

Advertisement

১ জুলাই থেকে চটের বস্তার উপরে ৫ শতাংশ জিএসটি চালু হয়েছে। মিল থেকে চটের বস্তা সরবরাহ করার সময়ে তার উপর জিএসটি বসছে। ওই বস্তা ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে রেলের ওয়াগনে ভরে কন্টেনার কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে ফের রেল পরিবহণের উপর জিএসটি রয়েছে। কিন্তু এই জিএসটি কী ভাবে চটকল মালিকদের ফেরত দেওয়া হবে, তা নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে।

একই সঙ্গে এই পদ্ধতিতে অনেক ধরনের বিলও তৈরি হবে। কী পদ্ধতিতে জিএসটি আদায়ের বিষয়টি সরল করা যায়, তা জানতে জুট কমিশনারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের মাধ্যমে জিএসটি পরিষদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। যত দিন পর্যন্ত সেই বিষয়টি পরিষ্কার না-হচ্ছে, তত দিন জুটস্মার্ট নামে ডিজিটাল পোর্টালটির সফটওয়্যারও নতুন ব্যবস্থার উপযোগী করে সাজানো যাচ্ছে না। যে-কারণেই চটকলগুলি ওই পোর্টালে এত দিন ধরে কোনও বিল তুলতে পারছে না।

Advertisement

আরও পড়ুন:

৮ শতাংশ সুদে প্রবীণদের জন্য নয়া পেনশন প্রকল্প কেন্দ্রের

কলকাতার ডেপুটি জুট কমিশনার দীপঙ্কর মাহাতো অবশ্য জানিয়েছেন, পরিবহণের উপর জিএসটি ফেরত দেওয়া নিয়ে যেহেতু কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। তা-ই শুধু ওই বিল এখন নেওয়া যাচ্ছে না। বুধবার থেকে তাঁরা মিলগুলিকে চটের বস্তার দামের যে বিল (ভ্যালু বিল) তা কমিশনের অফিসে জমা দিতে বলেছেন। ওই বিলের টাকাও চটকলগুলিকে দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দীপঙ্করবাবু দাবি করেছেন।

চটকল মালিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, এই জটিলতার কারণে তাঁদের ভুগতে হচ্ছে। আগে বস্তা পাঠিয়ে দিয়ে তাঁরা জুটস্মার্ট-এ পোর্টালে বিল তুলে দিতে পারতেন। বিলের টাকাও পেয়ে যেতেন। এখন নানা ধরনের বিল তৈরি থেকে পরিবহণের জিএসটি-র টাকা কে, কাকে, কী ভাবে ফেরত দেবে, তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সেই উত্তরই কারওর জানা নেই। ফলে অনেক মিলই নগদ টাকার অভাবে কাঁচামাল কিনতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন চটকলগুলি ১০ হাজার বেল বা গাঁট (এক বেল সমান ৫০০টি বস্তা) চটের বস্তা তৈরি করে। যার ৭০ শতাংশই বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমে কিনে নেওয়া হয়। জুট কমিশনারের অফিস থেকে সেই দাম চটকলগুলিকে মিটিয়ে দেওয়া হয়। এখন খরিফ মরসুম শুরু হয়েছে। এ বছর ২২ লক্ষ গাঁট বস্তার বরাত দেওয়া হয়েছে চটকলগুলিকে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বস্তার জোগানেও ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করেছে। যার জেরে ভুগতে হচ্ছে পঞ্জাবের মতো কৃষি-প্রধান রাজ্যগুলিকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement