উৎসবের খুশি ভেস্তে দিয়ে ফের মুখ গোমড়া ভারতের শেয়ার বাজারের। আর তার জন্য আবার কাঠগড়ায় বিশ্ব বাজার।
দশেরা এবং মহরমের জন্য দু’দিনের ছুটি কাটিয়ে বৃহস্পতিবার লেনদেনে ফেরা সেনসেক্স পড়ে গিয়েছে ৪৩৯.২৩ পয়েন্ট। দাঁড়িয়েছে ২৭,৬৪৩.১১ অঙ্কে। গত তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে নীচে। নিফ্টিও ১৩৫.৪৫ পয়েন্ট পড়ে থিতু হয়েছে ৮,৫৭৩.৩৫ অঙ্কে।
বাজার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অন্যান্য অনেক বারের মতো এ দিনের পতনের জন্যও দায়ী মূলত বিশ্ব বাজার। যার অন্যতম কারণ দু’টি—
১) চিনের রফতানি বাণিজ্যের সেপ্টেম্বরে ১০% পিছলে যাওয়া। যা তুলে ধরেছে সে দেশে আরও জমাট বাঁধা আর্থিক অনিশ্চয়তা।
২) চলতি বছরের শেষে মার্কিন মুলুকে শীর্ষ ফেডেরাল রিজার্ভের সুদের হার বাড়ানোর ইঙ্গিত।
মূলত এই দুইয়ের ধাক্কাতেই এ দিন পড়ে গিয়েছে সারা বিশ্বের প্রায় সবক’টি দেশের শেয়ার বাজার। যার ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে ভারতেও।
তার উপর দু’দিন আগেই জানা গিয়েছে অগস্টে দেশের শিল্পোৎপাদন সরাসরি ০.৭% কমে গিয়েছে। তাতেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লগ্নিকারীরা। এর পাশাপাশি আমেরিকায় সুদ বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত পেয়ে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি আচমকাই ভারতে তাদের শেয়ার বেচে দিতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে পতন এড়াতে পারেনি বাজার।
বিশেষজ্ঞদের অনেকে অবশ্য বলছেন, এই পতন হওয়ার কথা ছিল অনেক আগেই। স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ যেমন বলছেন, ‘‘এতটা ওঠার পরে বাজারে ‘কারেকশন’ হওয়ারই কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে হচ্ছিল না। আমার মনে হয় সূচক আরও নামবে। তার পর ফের দেখা যাবে উত্থান।’’
তবে শেয়ার বাজার যে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত কিছুটা অনিশ্চিত থাকতে পারে, একই সঙ্গে সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রাখছেন সকলে। কমলবাবুর মতে, ‘‘নভেম্বরে আমেরিকায় নির্বাচন। ডিসেম্বরে সেখানে সুদ বাড়ার সম্ভাবনা। তার পর ফেব্রুয়ারির গোড়াতেই ভারতে বাজেট। ফলে সব মিলিয়ে জানুয়ারি পর্যন্ত অনিশ্চয়তা থাকবে বলেই মনে হয়।’’ যদিও সকলেরই আশ্বাস এই পতনে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।