আপাতত বেতন নেবেন না ই-কমার্স সংস্থা স্ন্যাপডিলের দুই প্রতিষ্ঠাতা কুণাল বহল ও রোহিত বনসল। নিজেদের বেতনে বড়সড় কোপ বসাচ্ছেন সংস্থাটির আরও অনেক কর্তা। দু’বছরের মধ্যে দেশের প্রথম লাভজনক ই-কমার্স সংস্থা হয়ে উঠতে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথেও হাঁটতে চলেছে তারা। বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছে সেই সংখ্যা ৫০০ থেকে ৬০০।
কর্মীদের পাঠানো ই-মেলে বহল মেনে নিয়েছেন যে, গত ২-৩ বছরে ই-কমার্স ব্যবসায় যখন পুঁজি উপচে পড়ছিল, তখন তাঁদের সংস্থা ও এই শিল্প নানা ভুল করেছে। ব্যবসার বহর বাড়িয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। এখন সেই রাস্তা থেকে সরে এসে লাভজনক ভাবে ব্যবসা বাড়াতে চায় তারা। সেই সূত্রেই কিছু কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন সূত্রে খবর, স্ন্যাপডিল, তাদের পণ্য-পরিবহণ ব্যবসা ভালক্যান এবং ডিজিটাল পেমেন্ট শাখা ফ্রি-চার্জ মিলিয়ে সেই সংখ্যা ৫০০ থেকে ৬০০।
বাজার দখল বাড়াতে গিয়ে ঢালাও ছাড় দেয় ই-কমার্স সংস্থাগুলি। তা করতে গিয়ে লাভের দিকে সে ভাবে তাকায় না তারা। মন দেয় ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা বাড়ানোর উপর। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নেট-বাজারের আকাশে মেঘ জমার সেটিই কারণ। পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, ওই বাজারে ব্যবসা করা অনেক সংস্থার বিক্রি লাফিয়ে বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু পাল্লা দিয়ে লোকসানও বাড়ছে ফি বছর। ছাড়ের মোড়কে লাভের গুড় খেয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারাই। তাই নাগাড়ে মোটা লোকসান করে চলেছে স্ন্যাপডিল, অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো সংস্থাগুলি।
বছর তিনেক আগে দেশের খুচরো বিক্রেতাদের সংগঠন রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ারও অভিযোগ ছিল, অধিকাংশ অনলাইন সংস্থা লোকসানে চলছে। তারা যে পরিমাণ ছাড় দিচ্ছে, লাভ রেখে ব্যবসার সঙ্গে তার সঙ্গতি নেই। তা তারা করতে পারছে মূলত বিদেশি পুঁজির দৌলতে। কিন্তু এখন লগ্নিকারীরা দেখছেন, বিপুল টাকা ঢেলেও মুনাফা ঘরে আসছে না। ছাড়ের দাপটে তা উড়ে যাচ্ছে কর্পূরের মতো। আবার ছাড় না-দিলে বিক্রি তলানিতে ঠেকছে। ফলে কমছে এই ব্যবসাগুলিতে টাকা ঢালার আগ্রহ।
এই অবস্থায় সম্প্রতি দেশে ওলা, স্ন্যাপডিলের মতো সংস্থায় করা লগ্নিতে ৩৫ কোটি ডলার (প্রায় ২,৪০০ কোটি টাকা) ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছিল সফ্টব্যাঙ্ক। ওই দিনই নিজেদের শাখা শোপো বন্ধের কথা বলেছিল স্ন্যাপডিল। এ বার কর্মীদের চিঠি দিয়ে ছাঁটাইয়ের কথা বলল তারা।