কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকটির আলোচনার মূল বিষয় ছিল পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সঙ্কট। অথচ সেখানে হাজির ছিলেন না রাজ্যের একজন প্রতিনিধিও। ফলে পাটশিল্পের সঙ্কট নিয়ে কার্যত কোনও কথাও হতে পারেনি।
বুধবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১০টি রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রীরা। আরও ১৬টি রাজ্য পাঠিয়েছিল বস্ত্র দফতরের অফিসারদের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছিলেন না কেউই। অথচ রাজ্যে ২০টিরও বেশি চটকল বন্ধ। সঙ্কটে বার্ষিক ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেনের পাটশিল্প।
তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া রাজ্যে আর কোনও শিল্পে এত বেশি লেনদেন হয় না। সম্প্রতি এই শিল্পে কাঁচা পাটের জোগান নিয়ে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চটকল মালিকদের অভিযোগ, কেন্দ্রের দেওয়া বস্তার বরাতও কমেছে প্রায় ৪০%। এই জোড়া ধাক্কায় একের পর এক চটকল বন্ধ হচ্ছে। এ সব নিয়ে আলোচনার জন্যই কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার এ দিন বৈঠক ডাকেন। সংশ্লিষ্ট সব রাজ্যকেই বৈঠকে ডাকা হয়।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘পাট শিল্পে তৈরি পণ্য বস্তায় সীমাবদ্ধ না-রেখে বিভিন্ন ভাবে তা ব্যবহার করতে চাইছি। গ্রামের মেয়েদেরও কাজের সুযোগ দিতে কেন্দ্র বিভিন্ন স্থানে ‘কমন ফেসিলিটি সেন্টার’ খুলছে। ৩টি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, ১টি করে অসম ও বিহারে।’’
পরে গাঙ্গোয়ার টেলিফোনে বলেন, ‘‘দিল্লির যে-কোনও আমন্ত্রণ দিনের পর দিন পশ্চিমবঙ্গের কাছে উপেক্ষিত হলে সহযোগিতার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়।’’
রাজ্যের প্রতিনিধি কেন গেলেন না, এ প্রশ্নের জবাবে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘এ দিন পাটশিল্প নিয়ে আমাদের মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক ছিল। দিল্লির বৈঠকের কথাও জানতাম। তবে ওটা ছিল পাটের বহুমুখী ব্যবহার প্রসঙ্গে, শিল্পের সঙ্কট নিয়ে নয়।’’ প্রসঙ্গত, মলয়বাবুকে প্রশ্ন করার কারণ, পাটশিল্পকে কখনওই শিল্পের মর্যাদা দেয়নি বাম সরকার। তৃণমূল সরকারও মত বদলায়নি। সব সময়েই এটি শ্রম দফতরের অধীনে।
রাজ্যে বস্ত্র বিভাগ রয়েছে দুই মন্ত্রীর হাতে। একটি হল রেশম বস্ত্র, যার মন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, দিল্লির বৈঠকের কোনও চিঠি তাঁরা পাননি। এ ছাড়া আছেন ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। স্বপনবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমি বর্ধমানে রয়েছি। কেন্দ্রের বৈঠকের কোনও চিঠি এসেছে কি না জানি না।’’