আগাম ট্যাক্সি বুকিং ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে শহরে

পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুমবাজির অভিযোগে কলকাতার রাস্তা থেকে মাঝেমধ্যেই উধাও হচ্ছে সাধারণ মিটার-ট্যাক্সি। আর সেই সুযোগে ব্যক্তিগত পরিবহণের বাজার ধরতে এ শহরে একে একে পা রাখছে বিভিন্ন আগাম ট্যাক্সি বুকিং পরিষেবা সংস্থা। আগে এ ধরনের পরিষেবা চালু হলেও তেমন সফল হয়নি। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে ট্যাক্সি না-পাওয়ার অসুবিধা থেকেই এখন নতুন করে এর চাহিদা তৈরি হচ্ছে যাত্রীদের মধ্যে। যাকে পুঁজি করেই প্রতিযোগিতা বাড়ছে এই পরিষেবায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০৯
Share:

মেরু ক্যাবের উদ্বোধনে সংস্থার কর্তা রথীন লাহিড়ী এবং সিদ্ধার্থ পাহওয়া-র সঙ্গে অভিনেত্রী রিয়া সেন (বাঁ দিক থেকে)।

পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুমবাজির অভিযোগে কলকাতার রাস্তা থেকে মাঝেমধ্যেই উধাও হচ্ছে সাধারণ মিটার-ট্যাক্সি। আর সেই সুযোগে ব্যক্তিগত পরিবহণের বাজার ধরতে এ শহরে একে একে পা রাখছে বিভিন্ন আগাম ট্যাক্সি বুকিং পরিষেবা সংস্থা। আগে এ ধরনের পরিষেবা চালু হলেও তেমন সফল হয়নি। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে ট্যাক্সি না-পাওয়ার অসুবিধা থেকেই এখন নতুন করে এর চাহিদা তৈরি হচ্ছে যাত্রীদের মধ্যে। যাকে পুঁজি করেই প্রতিযোগিতা বাড়ছে এই পরিষেবায়।

Advertisement

এ শহরে সম্প্রতি পরিষেবা চালু করেছে মুম্বইয়ের ‘বুকমাইক্যাব’ সংস্থাটি। গত সপ্তাহেই তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ল মুম্বই, দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে এই পরিষেবায় যুক্ত আর এক সংস্থা ‘মেরু ক্যাব’। সাধারণ ফোন ছাড়াও স্মার্ট ফোনের ‘অ্যাপ’ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এটি বুক করার সুবিধা মিলবে।

কলকাতার ট্যাক্সিচালকদের যখন দাবি, এই ব্যবসা মৃতপ্রায়, তখন কীসের ভরসায় আসছে ওই সব সংস্থা?

Advertisement

প্রথমত, বুকমাইক্যাব বা মেরু ক্যাবে গাড়ির ভাড়া সাধারণ মিটার ট্যাক্সির চেয়ে বেশি হওয়ায় চালকদের আয় বেশি। তবে তার চেয়েও বড় কথা, তারা যে-কৌশলে ব্যবসা করে তার মূলমন্ত্রই হল, ট্যাক্সি খালি থাকাকালীন তার দৌড় কমানো। বস্তুত, ট্যাক্সি খোঁজা যাত্রী আর যাত্রী খোঁজা ট্যাক্সিকে পরষ্পরের সঙ্গে ‘দেখা করিয়ে দেওয়া’র সূত্রে ভর করেই ব্যবসা করছে তারা। উল্লেখ্য, সাধারণ মিটার-ট্যাক্সি নিয়ে এই ভাবেই গত মাস ছয়েক ধরে এ শহরে ব্যবসা করছে আর এক সংস্থা ‘সিওর ট্যাক্সি’।

এই ব্যবসার ক্ষেত্রে একটি সংস্থা যত বেশি গাড়ির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারবে, তত দ্রুত যাত্রীর কাছে গাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এ প্রসঙ্গে মেরু ক্যাবের সিইও সিদ্ধার্থ পাহওয়া জানিয়েছেন, কলকাতায় একেবারে প্রথমে তাঁরা মোট ১০০টি গাড়ির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। যার সবক’টিই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। তবে আগামী ৯ থেকে ১২ মাসের মধ্যে তাঁদের লক্ষ্য, ১০০০টি গাড়ির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা। সংস্থার তরফে দাবি, আপাতত বুক করার পরে খুব বেশি হলে ৩০-৩৫ মিনিট সময় লাগবে গাড়ি পেতে। তবে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর কাছাকাছি খালি গাড়ি থাকলে তুলনায় কম সময়ে তা মিলবে।

মেরু ক্যাবে উঠলে ন্যূনতম ১৫০ টাকা ভাড়া দিতেই হবে যাত্রীকে। যাওয়া যাবে ৬ কিলোমিটার। এর পর কিলোমিটার প্রতি ২০ টাকা করে ভাড়া গুনতে হবে। অপেক্ষা করার ভাড়া আলাদা। আপাতত ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবশ্য শর্তসাপেক্ষে ১০০ টাকা ছাড় মিলবে ভাড়ায়। নগদের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ডেও টাকা মেটানো যাবে, যা আরবিআইয়ের নিয়ম মেনেই হবে বলে দাবি সংস্থাটির।

পাশাপাশি বিপদে পড়লে অ্যাপ-এর মাধ্যমে যেমন বার্তা পাঠানো যাবে, তেমনই সব গাড়ির গতিপথেই নজরদারি করা হবে বলে দাবি সিদ্ধার্থের। তাঁর মতো অন্যান্য সংস্থারও দাবি, ট্যাক্সিচালকদের সমস্ত তথ্য তাদের কাছে থাকায় নিরাপত্তার বিষয়টিও অনেক বেশি নিশ্চিত করা সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন