আঁচলে ভৌগোলিক চিহ্ন বাঁধুক বাংলার শাড়ি

বাংলার তাঁতিদের হাতে বোনা শাড়ির সম্ভার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও বহু জায়গায়। সেই সব শাড়ির ‘মেধাস্বত্ব’ তাঁতিদের জন্য সুরক্ষিত করতে ভৌগোলিক ভাবে সেগুলিরও চিহ্নিতকরণ করা উচিত বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ১৭:৩০
Share:

ভৌগোলিক ভাবে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন অথবা জিআই) এ রাজ্যের বালুচরি, শান্তিপুরি এবং ধনেখালি শাড়ি। কিন্তু বাংলার তাঁতিদের হাতে বোনা শাড়ির সম্ভার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও বহু জায়গায়। সেই সব শাড়ির ‘মেধাস্বত্ব’ তাঁতিদের জন্য সুরক্ষিত করতে ভৌগোলিক ভাবে সেগুলিরও চিহ্নিতকরণ করা উচিত বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক। আর সেই আবেদন যাতে করা হয়, তার জন্য রাজ্যের শাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলিকে এ বার উদ্যোগী হতে বলল মন্ত্রক।

Advertisement

বাংলার জামদানি, বেগমপুরি, টাঙ্গাইল থেকে শুরু করে ফুলিয়ার শাড়ির দেশ-বিদেশে জনপ্রিয়তা রয়েছে। ওই সমস্ত বাহারি নকশার শাড়ি বংশানুক্রমে তাঁতিরা দীর্ঘদিন ধরে বুনে চলেছেন। সরকারি ভাবে নানা স্বীকৃতি তাঁরা পেলেও, বাংলার শাড়ির রফতানি-সহ বিক্রি বাড়াতে জিআই চিহ্ন অনেকটা অনুঘটকের কাজ করবে বলেই মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন। মন্ত্রকের অধীনস্থ যে বস্ত্র কমিটি রয়েছে, তার ডেপুটি ডিরেক্টর টি কে রাউত সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, জিআইয়ের মাধ্যমে মেধাস্বত্ব পেলে, আসল শিল্পীদের ঠকানো সহজ হবে না। প্রয়োজনে তাঁতিরা কারও বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন। রফতানি ক্ষেত্রেও জিআই সাহায্য করবে বলে তাঁর মত।

পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশেই এমন বহু পণ্য রয়েছে, যেগুলি একটি বিশেষ অঞ্চলেই তৈরি হয়। সেখানকার পণ্য হিসেবে সেটি সর্বত্র বিখ্যাত বা জনপ্রিয়। যেমন, এ রাজ্যের সীতাভোগ, মিহিদানা কলকাতা-সহ অন্য জাযগায় তৈরি হলেও, বর্ধমানই তার জন্মস্থল বলে ইতিহাস রয়েছে। সেখানের কারিগরদের হাতের কৌশল ও সেখানকার গোবিন্দভোগ চালের গুণে সীতাভোগ, মিহিদানা আজও প্রসিদ্ধ। আবার তেমনই দার্জিলিঙের সুগন্ধি চা শুধুমাত্র সেখানকার চা-বাগানগুলিতেই তৈরি হয়। অন্য জায়গার দামি চা-ও ওই নামে বিক্রি করা চলে না। বাংলার আরও অনেক পণ্যের মতো এই দু’টি পণ্যের জিআই আছে। সম্প্রতি পাওয়া গিয়েছে বাংলার রসগোল্লার জিআই-ও।

Advertisement

রাজ্যে কার

• দার্জিলিং চা • শান্তিনিকেতনের চামড়ার সামগ্রী • ফজলি, লক্ষ্মণভোগ, ক্ষীরসাপাতি আম
• মিহিদানা • সীতাভোগ • জয়নগরের মোয়া
• রসগোল্লা • গোবিন্দভোগ ও তুলাইপাঞ্জি চাল
• নকশি কাঁথা • ধনেখালি, বালুচরি, শান্তিপুরি শাড়ি

দেশে জিআই


২৭০টি পণ্যের কাছে


তার ১৫১টিই বস্ত্র ও হস্তশিল্পের

অর্থাৎ এই পণ্যগুলির জন্মস্থান বর্ধমান বা দার্জিলিঙে বলেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ বার ঠিক এই ভাবেই বাংলার অন্যান্য জায়গায় যে সমস্ত শাড়ি দীর্ঘদিন ধরে তাঁতিরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বুনে আসছেন, সেগুলির জন্যও স্বীকৃতি এবং মেধাস্বত্বের সুরক্ষা চায় কেন্দ্র। সেই কারণেই এই জিআই সওয়াল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন