অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দাবি আমেরিকার

ভারতের ‘না’ ভুল বার্তা দেবে বিশ্বকে

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে ভারতের সই না-করা বিশ্বজুড়ে ভুল বার্তা পাঠাবে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে এই কথাই বললেন ভারত সফররত মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি। পাশাপাশি দিল্লির কাছে দ্রুত বিষয়টির সমাধানসূত্র বার করার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। পরে কেরি উপস্থিত সাংবাদিকদেরও বলেন, “আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সামনে ভারতকে বিনিয়োগের আদর্শ ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কারণেই বাণিজ্য চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার এই ঘটনায় ধাক্কা খাবে সেই ভাবমূর্তি।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০২:০২
Share:

কথা হল। কিন্তু ঐকমত্য? শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জন কেরি এবং নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে ভারতের সই না-করা বিশ্বজুড়ে ভুল বার্তা পাঠাবে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে এই কথাই বললেন ভারত সফররত মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি। পাশাপাশি দিল্লির কাছে দ্রুত বিষয়টির সমাধানসূত্র বার করার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। পরে কেরি উপস্থিত সাংবাদিকদেরও বলেন, “আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সামনে ভারতকে বিনিয়োগের আদর্শ ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কারণেই বাণিজ্য চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার এই ঘটনায় ধাক্কা খাবে সেই ভাবমূর্তি।”

Advertisement

কেরির মন্তব্যকে অবশ্য এ দেশের উপর পাল্টা চাপ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ তাদের মতে, মার্কিন প্রশাসন জানে, দেশকে আর্থিক উন্নয়নের পথে টেনে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছেন মোদী। যা পূরণে তাঁর সরকারের অন্যতম হাতিয়ার হল আরও বেশি বিদেশি লগ্নির পথ খুলে দেওয়া। এই অবস্থায় মোদীর সেই স্পর্শকাতর জায়গাতে আঘাত করেই ভারতের অবস্থান বদলানোর কৌশল নিতে চাইছেন কেরি।

মোদী যদিও স্পষ্ট জানিয়েছেন, দারিদ্র দূর করতে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের প্রাণপণ প্রয়াস ও সেই জন্য সরকারের দায়িত্ব-কর্তব্য বোঝা উচিত উন্নত দেশগুলির। বাণিজ্য-চুক্তিতে ‘না’ করার বিষয়ে সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্তারও মন্তব্য, অবাধ বাণিজ্য ব্যবস্থা চায় ভারতও। তবে দেশের খাদ্য সুরক্ষার স্বার্থের সঙ্গে কোনও আপোস না-করে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চুক্তির সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরে ফের ডব্লিউটিওর অধিবেশন শুরু হবে। ওই কর্তার দাবি, অধিবেশনের প্রথম দিনই ডব্লিউটিও-র সদস্যদের সঙ্গে কথা হবে। যাতে ভারতের দাবিও বজায় থাকে, আবার চুক্তিও সফল হয়। সে ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরে ওই চুক্তি সই হতে পারে বলে তাঁর আশা।

Advertisement

বস্তুত, গণবণ্টনের জন্য শস্য মজুত করা এবং কৃষি ও খাদ্যে বরাদ্দ ভর্তুকি নিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যের নয়া জমানায় স্থায়ী সমাধানসূত্র না-মেলা পর্যন্ত ওই চুক্তিতে সই করবে না বলে এর আগে জেনিভায় ১৬০টি রাষ্ট্রের বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল ভারত। তাদের যুক্তি ছিল, দরিদ্রদের ভর্তুকিতে খাদ্য বণ্টনের জন্যই কেন্দ্রকে উপযুক্ত পরিমাণে শস্য মজুত রাখতে হয়। আর এখানেই আপত্তি ডব্লিউটিও তথা উন্নত দুনিয়ার। তাদের অভিযোগ, শস্য মজুত করলে ভাঙা হবে অবাধ বাণিজ্যের শর্ত, কারণ তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে

দেবে শস্যের দর। প্রসঙ্গত, উন্নত দুনিয়া চায়, অবাধ বাণিজ্যের শর্ত হিসেবে সব দেশের জন্য কড়া ভাবে ভর্তুকির অঙ্ক বেঁধে দেওয়া হোক। কিন্তু ভারতের আপত্তি হল, যে-দরে ওই ভর্তুকি নির্ধারিত হয়, তা অন্তত দু’দশকের পুরনো। শুধু তা-ই নয়, আমেরিকা যেখানে কৃষিতে ভর্তুকি দেয় ১২০০০ কোটি ডলার, যেখানে ভারতে তা ১২০০ কোটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন