Poila Baisakh Special

গান ধরলেন শ্রীজাত, কবিতায় মগ্ন শ্রীকান্ত

বৈশাখ এল। বিদায়ী চৈত্রের সন্ধ্যায় দু’জনের শব্দ-সুর শুনলেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়বৈশাখ এল। বিদায়ী চৈত্রের সন্ধ্যায় দু’জনের শব্দ-সুর শুনলেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৩৯
Share:

আমরা দু’জন ইনস্টাগ্রামে থাকি। সেই আমাদের একটি মাত্র সুখ।

Advertisement

চৈত্রের শেষ বেলা। সন্ধে মাঠ পেরিয়ে তার বাড়ি!

সেখানে পৌঁছে দেখি দুই তারা জ্বলে আছে সুরে, শব্দে, গন্ধে আর আড্ডায়। যাঁর বাড়িতে জ্বলেছে নরম বেলার আলো, তিনি শ্রীজাত। আর যিনি এসেছেন এই একান্তের আসরে তিনি শ্রীকান্ত আচার্য। এমন দুই মানুষকে মঞ্চ পেয়েছে বহু বার। মানুষকে তাঁরা ভরিয়ে রেখেছেন তাঁদের নিজস্ব বিভায়। কিন্তু আজ এই চৈত্র বাতাসের মায়াতে, আলোতে তৈরি হল এক অন্য শব্দ-সুরের পরিসর। সেই পরিসরে শ্রীজাত সুর ধরলেন, ‘নয়ন মেলে দেখি আমায় বাঁধন বেঁধেছে।’ বসন্তরজনী শেষে এ কোন বিদায়ের সুর? শ্রীজাত সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেবেন, এমন কবেই বা হয়েছে? নিজের দিক থেকে আলো ফেরালেন তিনি তাঁর প্রিয় মানুষের দিকে। শ্রীকান্তদা কী ভাল পড়ছে আজকাল!

Advertisement

শ্রীকান্তদা, গানে তো যাবই, কী পড়তে ইচ্ছে করছে?

শ্রীকান্তদা, ‘‘বেশ তো শ্রীজাতর কবিতা...’’

কথা শেষ হয় না, শ্রীজাত সোজা বইয়ের আলমারি থেকে শঙ্খ ঘোষের নতুন কবিতার বই এনে বলেন, ‘‘কবির লেখা পড়বেই যখন এই নাও,’’ শঙ্খ ঘোষের স্বরই যেন শ্রীকান্তর কণ্ঠে ভর করে আসে।

বেশ কিছু ক্ষণ কথা চলে না।

এই বাংলা ভাষা আমাদের থামিয়ে দিতে পারে। অথচ আজ ভাষার সম্মান কি ফুরিয়ে আসছে?

আরও পড়ুন, নতুন বছরের নতুন গানে ফিরলেন নাগরিক গায়ক

তত ক্ষণে শ্রীকান্ত গান ধরেছেন, ‘...তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।’ দহনবেলায় জন্মেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বৈশাখ এলেই তাঁর জন্মদিনের গন্ধ আসে। ‘‘আচ্ছা, পড়েছি তো ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরে খাতা খুলে গায়ে রোদ মেখে লিখে চলেছেন রবীন্দ্রনাথ। আর আমরা? গরম এলে নাকি ক্রিয়েটিভিটি কমে যায়?’’ শ্রীজাত বলে, ‘‘কী যে বলো! আমরা তো মানুষ। আর উনি রবীন্দ্রনাথ!’’

কথার ওপরে কথা আসে। হালখাতার গন্ধ হয়তো সারং-এর ওপর আছড়ে পড়ে। সুর তো, কোনও বাঁধন জানে না। বাংলার নতুন বছর দুই বাংলার আবেগ ধরা দেয় এ কালের কবি আর গায়কের আলগা মনে। শ্রীজাত ফিরে যান মামারবাড়ির অন্তহীন গানের অবিরাম ধারায়। গান যেন সেই প্রথম বৈশাখের দিনে থামতে জানত না।

গান যখন আজকের কথায় এ ভাবে আছড়ে পড়ছে তখন ইচ্ছে করে প্রেমের খবর নিতে।

প্রেম বলতেই ‘‘সে সব আর নেই।’’ দু’জন দু’জনের দিকে ফেরে। শ্রীকান্ত বলেন, শ্রীজাতর কবিতায় আছে সব প্রেম। আর আমি তো চলেছি এ ভাবেই...’’

কোথাও আড়াল রাখে বৈশাখ। বাংলার বৈশাখ। চৈত্র সন্ধে আরও স্নিগ্ধতা ছড়ায়। অগোচরে।

কথা শেষ করতে হয়। রক্তস্মৃতির চাবিগোছা নিয়ে পথে নেমে দেখি আরও এক আলো মুখ।

কে সে?

ক্যামেরায় তাঁকে ধরা যায় না! অন্য এক বাঙালি যেন। হঠাৎ দেখা পথে...

বৈশাখ সব বলে না, তাই চুপ শ্রীজাত-শ্রীকান্ত!

কে সে? নতুন বছরে অস্থির খোঁজ থেকে যাক...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন