Editorial News

অবাঞ্ছিত এই অন্যায় অবিলম্বে শুধরে নেওয়া দরকার

রবিবার সকালে অনীক এবং ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর বেশ কয়েকজন অভিনেতা সাউথ সিটিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ফের জানতে চেয়েছিলেন, কেন এই ছবি তুলে নেওয়া হল?

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৫
Share:

অনীক দত্ত।

আচমকা একটু চমকে যেতে হয়েছে। বেশ অবাক হতে হয়েছে। ‘পদ্মাবতী’ বা ‘পদ্মাবত’ নামের একটি বলিউডি ছবির মুক্তি ঘিরে যখন তুমুল অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল দেশের শাসকদের প্রশ্রয়ে, তখনতার ঘটনা পরম্পরার কথা মনে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের শাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃঢ় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন সে দিন। মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, শিল্পীর স্বাধীনতার পক্ষে মুখ খুলেছিলেন। আজ সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যেই একটা ছবির প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে গেল। কীভাবে ঘটল এই ঘটনা, কেন ঘটল, সে সব প্রশ্নের সদুত্তর এখনও মেলেনি।

Advertisement

চলচিত্র নির্মাতা অনীক দত্ত ‘ভবিষ্যতের ভূত’ নামে একটা ছবি তৈরি করেছেন। ছবিটা গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যায় ছবিটার প্রদর্শন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কোনও এক অজ্ঞাত ‘উপরওয়ালা’র নির্দেশের কথা জানিয়েছে পুলিশ এবং সর্বত্র ছবিটা দেখানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ছবিটাকে ঘিরে কোথাও কোনও অশান্তির খবর ছিল না। তাহলে কি আচমকা কোনও বিভ্রান্তির বশে অনীক দত্তর ছবিটা দেখানো বন্ধ করা হল? না, সে তত্ত্বেও ভরসা রাখা যাচ্ছে না। ছবিটার প্রদর্শন বন্ধ করার পরে দু’দিন কাটতে চলল। এখনও কোথাও ভবিষ্যতের ভূতেরা পর্দায় ফিরে আসতে পারেননি। বোঝাই যাচ্ছে, কোনও বিভ্রান্তির বশে ছবিটার প্রদর্শন বন্ধ হয়নি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই অনীক দত্তর ছবিটার প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনা অত্যন্ত অবাঞ্ছিত। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। সেই স্বাধীনতায় কোনও হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শিল্পীর ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ আরও বেশি করে অনাকাঙ্খিত। কিন্তু সে রকমটাই ঘটল। কেন ঘটল, কী ভাবে ঘটল তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সে ধোঁয়াশা কাটুক বা না কাটুক, অবিলম্বে ছবিটার প্রদর্শনের সামনে তৈরি হওয়া বাধা কেটে যাওয়া দরকার।

Advertisement

আরও পড়ুন: ছবিটা দেখতে চাই, অনীক দত্তকে চারদিন আগেই চিঠি লিখেছিলেন রাজ্য গেয়োন্দা অফিসার

যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজক, সে কথা উচ্চারিত হওয়ার অপেক্ষা রাখে না। ভারতীয় গণতন্ত্র সাতটা দশ পেরিয়ে এসেছে। অতএব ভারতীয় গণতন্ত্র যথেষ্ট পরিণতও। পরিণত গণতন্ত্রে নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় কখনও হস্তক্ষেপ করা হয় না, শিল্পীর স্বাধীনতা কখনও অতএব প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে না। সে কথা প্রত্যেকের মাথায় রাখা দরকার। অবাঞ্ছিত, অনাকাঙ্খিত, অগ্রহণযোগ্য যা ঘটেছে, তা যত দ্রুত সম্ভব শুধরে নেওয়া দরকার। অবিলম্বে শুধরে নেওয়া দরকার।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন