Bengali new year 2019

প্রবাসে থেকেও বাংলা সাহিত্যকে এঁরা উজাড় করে দিয়েছেন নিজেদের কলম

ভুবনগ্রামে ‘বাংলা’র মানচিত্র বলে আলাদা কিছু নেই... লিখছেন শিশির রায়

Advertisement

শিশির রায়

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ১০:৫০
Share:

দ্রষ্টা: ভাগলপুরে গঙ্গার পাড়ে বসে আছেন বনফুল। ছবি: পরিমল গোস্বামী।

তাঁর জন্মই তো বাংলার বাইরে। বিহারের পূর্ণিয়া জেলা, মণিহারি গ্রাম। সাহেবগঞ্জের স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, হাজারিবাগের কলেজ থেকে আই এসসি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়া আর প্যাথলজিতে শিক্ষানবিশির সময়টুকুই যা বাংলায় থাকা। ১৯২৭-এ বিয়ে, সংসার পাতা; আজিমগঞ্জের মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে চাকরি। তার দু’বছর পর ভাগলপুরে ল্যাবরেটরি খুলে ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট হিসেবে প্র্যাকটিস শুরু করছেন বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় তথা বনফুল।

Advertisement

বাংলার বাইরেই তাঁর ‘সিরিয়াস’ সাহিত্যজীবনেরও শুরু; বনফুলের ছেলে অসীমকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘...প্রায় ৩৩ বছর বয়স থেকে নিয়মিত সাহিত্যচর্চা শুরু করলেও ৪০ বছর বয়সের মধ্যেই তিনি অতি বিখ্যাত হয়ে পড়েন। তাঁর চল্লিশতম জন্মদিনে তাঁকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানানোর জন্য ভাগলপুর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে এক সভা আহ্বান করা হয়।

কলকাতা থেকে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁকে একটি মানপত্র দেওয়া হয়।’ মানপত্র নিয়ে ভাগলপুর এসেছিলেন ‘শনিবারের চিঠি’-র সম্পাদক সজনীকান্ত দাস। রেশমি কাপড়ে ছাপিয়ে চমৎকার কায়দায় বাঁধিয়ে নেওয়া সেই মানপত্রে স্বাক্ষর ছিল ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

Advertisement

আরও পড়ুন: নববর্ষের শুভেচ্ছাই বাঙালিকে বাঁচিয়ে রেখেছে

অসীমকুমারের লেখা শুধু ছেলের চোখে দেখা বাবার অন্তরঙ্গ ও পারিবারিক জীবনচিত্রই নয়, লেখক বনফুলের অজস্র সাহিত্য-মুহূর্তেরও সাক্ষী। আর তার প্রায় সবটাই ঘটছে কলকাতা থেকে দূরে, ভাগলপুরে বনফুলের কেনা বিখ্যাত ‘গোলকুঠি’ বা অন্য ভাড়াবাড়িতে। ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় বেরিয়েছে বনফুলের ‘কবয়ঃ’ নাটিকা, সন্ধের পর মুন্নিচকের ভাড়াবাড়ির উঠোনে চৌকিতে একটা বাল্‌ব লাগিয়ে তিনি সেই নাটক পড়ে শোনাচ্ছেন তাঁর সন্তানদের— তাঁদের বয়স তখন নয়, ছয়, আর চার! আর এক ভাড়াবাড়িতে এক সন্ধেয় ফিটন গাড়ি চেপে এসেছেন বন্ধু প্রবোধেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সে দিন দুপুরেই লেখা একটা গল্প বন্ধুকে শোনালেন বনফুল।

আরও পড়ুন: বাঙালি হয়ে ওঠার গোড়ার কথা

বন্ধুই প্রথম শ্রোতা বিখ্যাত সেই গল্পের— ‘নিমগাছ’! সারা দিন ল্যাবরেটরিতে প্র্যাকটিস করেন, আর লেখেন রাত জেগে, বা ভোরে উঠে। পাখি দেখার নেশা ছিল। মাইলের পর মাইল হাঁটতেন, বাইনোকুলার হাতে ঘুরতেন ভাগলপুরের গঙ্গার চরে, হাতে সেলিম আলির বই। এক দিন গাছের ডালে পাতার সঙ্গে মিশে থাকা একটা বসন্তবৌরি পাখি দেখতে ঘণ্টাখানেক হেঁটেছিলেন। ‘বার্ডওয়াচিং’-এর এই নেশাই লিখিয়ে নিয়েছিল ‘ডানা’ নামের উপন্যাস। তখন ভাগলপুরের ঘর ভরে থাকত পাখি বিষয়ক বইয়ে। ‘স্থাবর’ লেখার সময় একই ভাবে লাইব্রেরি ভর্তি নৃতত্ত্বের বই। লেখার টেবিলের উপরে ছোট ট্রে-তে থাকত নানান সুগন্ধি আতরের শিশি। লিখতে লিখতে কখনও শিশির ছিপি খুলে ঘ্রাণ নিতেন। গোলকুঠির বাড়ি তাঁর খুব শখের, প্রাঙ্গণে বেল, কাঁঠাল, আলফানসো আর হিমসাগর আম, তাল, নিম, পেয়ারার সঙ্গে শিউলি-গন্ধরাজ-কুন্দ-রক্তকরবীর গলাগলি। পাশের খাপরার ছাদের ঘরে কাঠের সিলিং লাগিয়েছিলেন, সেখানে ছিল একটা রিভলভিং বুকশেল্‌ফও! তেইশ বছর এই ঘরে ছিলেন, দুই দশক ব্যাপী বনফুলের সব লেখার ঠিকানা কলকাতা থেকে অনেক দূরের এই বাড়িই!

পূর্ণিয়ার মণিহারি বনফুলের গ্রাম, এই পূর্ণিয়াই বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে আর এক নক্ষত্র, সতীনাথ ভাদুড়ীকে! সেই পূর্ণিয়া, ১৯৩০-৪০’এর দশকে যেখানে গ্রামের মানুষের ঘরে ঘরে থাকত বাংলা শিশুবোধ, কৃত্তিবাসী রামায়ণ, কাশীদাসী মহাভারত; জন্মাষ্টমীর আগে নদিয়া থেকে আনা খোলে রাতভর বাজত রাজা হরিশ্চন্দ্রের পালার বোল আর সুর। গুরুপ্রতিম ‘ভাদুড়ীজী’ আর তাঁর লেখালিখির স্মৃতি মন্থন করেছেন হিন্দি ভাষার সাহিত্যিক ফণীশ্বরনাথ রেণু। আইন প্র্যাকটিস করা, ‘স্টেশন ক্লাব’-এর টেনিস চ্যাম্পিয়ন সতীনাথ কংগ্রেসে যোগ দিলেন, খালি পায়ে গ্রামকে গ্রাম হাঁটেন, পরনে মোটা খদ্দর, সঙ্গে চরকা-ছাপ ঝোলা আর কম্বল। ১৯৪২-এ সতীনাথ তখন ভাগলপুর সেন্ট্রাল জেলে, বন্দিদের খেলা-বই পড়া-খাওয়া-প্রতিবাদ কর্মসূচি চলে একসঙ্গেই। এক দিন বাংলা থেকে হিন্দি অনুবাদ নিয়ে কথা ওঠায় এক জন বললেন, ও তো খুব সহজ। সতীনাথ জেলের লাইব্রেরি থেকে রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের ক’খানা হিন্দি অনুবাদ-বই এনে সামনে ধরলেন। ‘ডাকসাইটে মেয়ে’ হিন্দি অনুবাদে হয়েছে ‘ডকইয়ার্ডসাইড মে রহনেওয়ালি লড়কি’, গোঁয়ার গোবিন্দ— ‘গোবিন্দ গোয়ালা’, মাছরাঙা— ‘রঙ্গিন মছলি’, কচুরিপানা— ‘পানি ভরি কচৌড়ি’!

এক দিন জেল সুপারিন্টেনডেন্টকে বললেন, টি-সেল তো ফাঁকা, আমাদের ওখানে রাখা যায় না? টি-সেল মানে ‘টেররিস্ট সেল’, তিরিশের দশকে তৈরি হয়েছিল ভাগলপুর জেলে, সেই সময়ে ফাঁকা পড়ে ছিল। জেল সুপার তো অবাক, বন্দি স্বেচ্ছায় টি-সেলে যেতে চাইছে! ব্যবস্থা হল, সতীনাথ-সহ কয়েক জন চলে গেলেন সেখানে। কেন গেলেন, তা ফণীশ্বরনাথ বুঝলেন কিছু দিন পরে। চা খেতে গিয়ে দেখেন, একটা খাতায় পেনসিল দিয়ে পাতার পর পাতা লেখা। ‘জাগরী’র পাণ্ডুলিপি! সতীনাথ-শিষ্য (যদিও দুজনের রাজনৈতিক বিশ্বাস আর দলও আলাদা তখন) লিখছেন, ‘সেই টি-সেলে বসে জাগরীর পাণ্ডুলিপি পড়বার কথা চিরদিন মনে থাকবে। বিলুর অধ্যায়— ফাঁসি সেল, পড়তে পড়তে কয়েকবার মনে হয়েছিল আজ ভোরবেলায় আমার ফাঁসি হবে।’ সতীনাথ তখন লিখছেন বিলুর মায়ের অধ্যায়টা। কয়েক মাস পর শেষ অধ্যায়টা (নীলুর বয়ান) পড়ে তাঁকে প্রণাম করেছিলেন ফণীশ্বরনাথ। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের সৃষ্টিমুহূর্তের সাক্ষী থাকা কি কম সৌভাগ্য? বন্দিদের ‘সানড্রিজ় অ্যালাওয়েন্স’ বরাদ্দ থাকত কিছু, ফণীশ্বরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন সতীনাথ: ‘‘এই সময় সোভিয়েত-সাহিত্যের নামে যে-বইগুলো জলের দামে বিক্রি হচ্ছে, পরে বাজারে হয়তো নাও পাওয়া যেতে পারে। আর ও বইগুলো ‘সেনসার’ আটকায় না।’’

সতীনাথ জীবনে কখনও পূর্ণিয়া ছাড়েননি, তাঁর ‘ঢোঁড়াইচরিতমানস’-ও পূর্ণিয়ার নদী, গাছ, মানুষ আর লোকজীবনের আয়না। ১৯৬৫-র ৩০ মার্চ মারা যান পূর্ণিয়াতেই, শেষ ইচ্ছানুসারে পূর্ণিয়ার এক শ্মশানঘাটেই দাহ করা হয়েছিল তাঁকে। ‘কলকাতা ভাল লাগে না?’ প্রশ্নের উত্তরে এক প্রিয়জনকে বলেছিলেন, পূর্ণিয়ায় প্রথম বর্ষার পর বাড়ির আমবাগানে মাটির সোঁদা গন্ধ, শীত-শুরুতে শিশিরভেজা ঘাসের স্পর্শ, পায়ের তলায় শুকনো মুচমুচে পাতার ভেঙে যাওয়া— ‘এই গন্ধ এই শব্দ আর কোথায় পাব?’

আরও পড়ুন: বিবেকানন্দের হিন্দুত্ব না বুঝিয়ে মানুষকে তাঁর কথা সরল ভাবেই বোঝানো যেত

ভাগলপুরেই চাকরি নিয়ে এসেছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাথুরিয়াঘাটার জমিদারের ভাগলপুর জঙ্গলমহলের সেরেস্তায় দরকার পড়েছিল এক কর্মীর, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হয়ে এলেন বিভূতিভূষণ। ঘোড়ার পিঠে মাইলের পর মাইল চষে জমি-জায়গা তদারকির কাজ করেন, আর সেই সঙ্গে প্রকৃতিকে আকণ্ঠ পান। ‘গভীর রাত্রে ঘরের বাহিরে আসিয়া দাঁড়াইয়া দেখিয়াছি, অন্ধকার প্রান্তরের অথবা ছায়াহীন ধূ ধূ জ্যোৎস্নাভরা রাত্রি রূপ। তার সৌন্দর্যে পাগল হইতে হয়। একটুও বাড়াইয়া বলিতেছি না, আমার মনে হয় দুর্বলচিত্ত মানুষ যাহারা তাহাদের পক্ষে সে রূপ না দেখাই ভালো, সর্বনাশী রূপ সে, সকলের পক্ষে তার টাল সামলানো বড় কঠিন।’ কাছারির আমলা ছোট্টু সিং আর আদিবাসী গণু মাহাতো শোনায় এই প্রাচীন লোকভূমির গল্পগাথা। ভাগলপুর শহরে একটা সাহিত্য-পরিবেশও ছিল, লেখক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে ঘিরে। সেই আড্ডায় বিভূতিভূষণ যুক্ত হলেন। জমিদারির কাজে যখন শহরে আসেন, রোজ সন্ধেয় চলে আসেন, ফেরেন গভীর রাতে। উপেন্দ্র-বন্ধু রায়বাহাদুর অমরেন্দ্রনাথ দাসের বাড়ি যান কোনও কোনও দিন, সেখানে গঙ্গার পাড়েই হেলে পড়েছে একটা অশ্বত্থগাছ। জানো, এ কোন গাছ? ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসে শরৎচন্দ্র লিখেছিলেন যার কথা। এর শেকড়েই বাঁধা থাকত ইন্দ্রনাথের ডিঙি!
জঙ্গলমহলের আদিম অরণ্যের মাঝে বসে তাঁর ইচ্ছে হয় সাহিত্যসৃষ্টির। মনে ভিড় করে আসে নিজের গ্রাম বারাকপুর, ভেসে আসে ইছামতী। বাবা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ডায়েরি এই পরবাসেও তাঁর সঙ্গী, সেই লেখাকে প্রণাম করেই নিজের ডায়েরিতে লিখলেন একটা উপন্যাস লেখার ইচ্ছের কথা। জগতে নিয়ত আনন্দযজ্ঞ চলেছে; গাছ, পাখি, প্রান্তর, তারাভরা রাত, সূর্যাস্ত-মাখা নদীতীরে যে আনন্দ, শতকরা ৯৯ জনের কাছে তার খোঁজ মৃত্যুদিন পর্যন্ত অজানা থেকে যায়। সাহিত্যিকের কাজ ‘এই আনন্দের বার্তা সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া... এই কাজ করতে তাঁদের হবেই... অস্তিত্বের এই শুধু সার্থকতা...’ ১৯২৫-এর ৩ এপ্রিল ডায়েরিতে লেখা হচ্ছে এই সঙ্কল্প, আর সে দিনই লেখা হচ্ছে উপন্যাসের প্রথম লাইনটিও: ‘নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের একেবারে উত্তরপ্রান্তে হরিহর রায়ের ক্ষুদ্র কোঠাবাড়ি...’ বাংলা থেকে বহু দূরে জন্ম হচ্ছে ‘পথের পাঁচালী’র!

সেই লেখা চলল। কখনও ভাগলপুরে সদর কাছারিতে তাঁর ঠিকানা ‘বড়বাসা’য়, দোতলার গঙ্গামুখী ঘরের টেবিলে, পার্কার কলম দিয়ে; কখনও আজমাবাদ কাছারিতে বেলফুলের ঝাড়ের পাশে বসে। লেখা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে, এক দিন ভাগলপুরের এক হল-এ হঠাৎ দেখলেন এক কিশোরীকে। ‘চুলগুলো তার হাওয়ায় উড়ছে। তার ছাপ মনের মধ্যে আঁকা হয়ে গেল, মনে হল, উপন্যাসে এই মেয়েকে না আনলে চলবে না।’ এক বছর ধরে ফের নতুন করে লিখতে হল ‘পথের পাঁচালী’, দুর্গাকে পেয়ে গিয়েছেন যে বিভূতিভূষণ!

ভাগলপুর সেন্ট্রাল জেল গেট, এখন যেমন

বাংলার বাইরে এ ভাবেই থেকেছেন বাঙালি লেখকেরা। এ ভাবেই জন্ম নিয়েছে এক-একটা আশ্চর্য সাহিত্যকীর্তি। এই নিরন্তর যাত্রা অব্যাহত একুশ শতকেও— দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও। নিউ ইয়র্কে বসে অমিতাভ ঘোষ যখন ইংরেজিতে লেখেন বাংলার কথা, বা রোমে বসে ঝুম্পা লাহিড়ী— তখন কি অলক্ষ কোনও সাহিত্যসভায় সগর্ব হাসি হাসেন না বনফুল-সতীনাথ-বিভূতিভূষণ? অক্সফোর্ডে নীরদ সি চৌধুরী লিখেছিলেন ‘আমার দেবোত্তর সম্পত্তি’, শিকাগোয় ‘দি ওয়ার্ল্ড অব টোয়াইলাইট’ লিখেছেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। ভুবনগ্রামে ‘বাংলা’র মানচিত্র বলে আলাদা কিছু নেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন