দিল্লি ডায়েরি

সুষমার মেয়ে বাঁশরি আর অরুণের মেয়ে সোনালি। সুষমার স্বামী, প্রাক্তন রাজ্যপাল স্বরাজ কৌশলও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। আর অরুণ তো তিন পুরুষের উকিল। ছেলে রোহণও দিল্লি হাইকোর্টে আইনব্যবসা শুরু করেছেন। আবার সোনালির স্বামী জয়েশও আইনজীবী।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:০০
Share:

আদালতে জমিয়ে কাজ করছেন দুই মেয়ে

Advertisement

রাজনীতিতে এক দলে থাকলেও দীর্ঘ দিন ধরে দিল্লির দুই বিজেপি নেতার মধ্যে রেষারেষিও কম হয়নি। এক জন পঞ্জাবি ব্রাহ্মণ, আমিষাহারী— অরুণ জেটলি; অন্য জন হরিয়ানার ব্রাহ্মণ, নিরামিষাশী— সুষমা স্বরাজ। সম্প্রতি দু’জনের মেয়েই সুপ্রিম কোর্টে জমিয়ে কাজ করছেন। সুষমার মেয়ে বাঁশরি আর অরুণের মেয়ে সোনালি। সুষমার স্বামী, প্রাক্তন রাজ্যপাল স্বরাজ কৌশলও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। আর অরুণ তো তিন পুরুষের উকিল। ছেলে রোহণও দিল্লি হাইকোর্টে আইনব্যবসা শুরু করেছেন। আবার সোনালির স্বামী জয়েশও আইনজীবী। আপাতত আদালতে বাঁশরি আর সোনালির মধ্যে খুবই ভাব। বাবা-মায়ের রাজনীতির প্রভাব পরবর্তী প্রজন্ম নিজেদের ওপর পড়তে দেননি। দু’জনেই আদালতে খুবই সক্রিয়। সোনালির মক্কেল সাইরাস মিস্ত্রি তো বাঁশরির মক্কেল বিমল গুরুঙ্গ।

Advertisement

সত্য সেলুকাস

রাজধানীতে এখন সবচেয়ে বড় খবর, বহুলপ্রচারিত ইংরেজি দৈনিকের প্রধান সম্পাদক হঠাৎ বিতাড়িত। কারণ? তিনি শাসকদলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক হানাহানির অভিযোগ তুলছিলেন, আগে জিএসটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। বেয়াদপি সহ্য করেনি শাসক বিজেপি। খোদ প্রধানমন্ত্রী নাকি রুষ্ট হয়ে ফোন করেন। অর্থমন্ত্রীও সাবধান করেছিলেন বার বার। তবু শেষরক্ষা হল না। সম্পাদকমশাই মার্কিন নাগরিক, কিন্তু ভারতীয়। শুধু ভারতীয়ই নন, জন্মসূত্রে বঙ্গসন্তান। কর্তৃপক্ষ তাঁকে মার্সিডিজ বেন্‌জ গাড়ি, লাটিয়েন্স-এর দিল্লিতে বড় অ্যাপার্টমেন্ট দিয়েছিলেন। কী দরকার ছিল গৌরী লঙ্কেশের হত্যাকাণ্ডে টুইট করার! ও দিকে আরও ব্রেকিং নিউজ— অন্য এক বড় ইংরেজি দৈনিকের তিন সাংবাদিক শাসকের অঙ্গুলিহেলনে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। সত্য সেলুকাস, এ এক আশ্চর্য নতুন ভারত।

অমিতে রাজীবে

ভারতের গোয়েন্দাপ্রধান হলেন রাজীব জৈন। ১৯৮০-র আইপিএস, ঝাড়খণ্ড ক্যাডারের এই অফিসারটির সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সম্পর্ক ভাল। নর্থ ব্লকে গুঞ্জন, রাজীব যত না কথা রাজনাথকে জানান, তারও চেয়ে বেশি জানান পার্টিকে। ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি রাজীবের অবসর। সাধারণত গোয়েন্দাপ্রধানকে এক্সটেনশন দেওয়া হয় না। পরবর্তী গোয়েন্দাপ্রধান কে হবেন, বড় প্রশ্ন। নর্থ ব্লকের অলিন্দে গুঞ্জন, পরবর্তী অফিসার এস কে সিন্‌হাকে গোয়েন্দাপ্রধান চান না অমিত। বিহার ক্যাডারের আইপিএস সিন‌্হা ভাল অফিসার, কিন্তু বিজেপির তত বিশ্বস্ত নন। বরং তাঁরও পরে যিনি, সেই অরবিন্দ কুমার অমিত শাহ ও বিজেপির ঘনিষ্ঠ। শোনা যাচ্ছে, অমিত রাজীবকে বলেও দিয়েছেন, সিন্হাকে কোনও এক আধাসামরিক বাহিনীর ডিজি করে বরং অরবিন্দকেই গোয়েন্দাপ্রধান করা হবে। এত কাণ্ড সব ফোনে ফোনে। রাজনাথ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁকেই নাকি এ সব জানানো হয়নি!

পাকা চাকরি

শিক্ষকতায় ফিরে গিয়েছেন, তবু কথা থামছে না অরবিন্দ পানাগড়িয়াকে নিয়ে। নীতি আয়োগে আড্ডায় সদ্য-প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ বার বার ফিরে আসছেন। এক উপদেষ্টার ঘরে শোনা গেল: ‘‘ভদ্রলোক যা উপদেশ দিয়েছিলেন, নিজেই তার উলটো করে গেলেন।’’ কী রকম? ‘‘গত আড়াই বছরে শ্রম আইন সংস্কারের সওয়াল করলেন। সব পাকা চাকরি তুলে দাও, ঠিকা কর্মী নিয়োগের সুবিধা দাও। প্রশিক্ষণ দাও, যাতে চাকরি গেলে নতুন চাকরি মেলে। আর নিজে কী করলেন? বিদায়বেলায় বললেন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি শেষ। ওই চাকরি গেলে এ বয়সে আর ও রকম জুটবে না। চললাম!’’

রাহুলের অশ্বমেধ যজ্ঞ

প্রবাসে: রাহুল গাঁধী

রাহুল গাঁধী ঘন ঘন বিদেশ যাচ্ছেন। ব্যাপারটা কী? দেশে প্রায় থাকছেনই না। মার্কিন মুলুকে দশ দিন তো তার পরেই ইউরোপে। বিজেপির বেশি চিন্তা। স্বাভাবিক। উনি দেশে কেন রাজনীতি করছেন না? রাজনাথ সিংহ এমনকী লোকসভাতেও রাহুলের বিদেশযাত্রা নিয়ে কটাক্ষ করলেন। কিন্তু রাহুল নিজে প্রচার না করলেও কংগ্রেস সূত্রে জানা গেল, ২০১৪ সালের আগে নরেন্দ্র মোদীও নানা দেশে গিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন। শুধু প্রবাসী ভারতীয়দের কাছেই নয়, বিশ্ববাসীর কাছেও। চিন থেকে আমেরিকা, সর্বত্র। সেই কাজটাই এখন চুপচাপ করছেন রাহুল। স্যাম পিত্রোদা, এমনকী শশী তারুর ও সুমন দুবে-ও রাহুলের এই সব সেমিনার ও সম্মেলন সংগঠিত করতে বেশ ব্যস্ত। শোনা যাচ্ছে, মোদী সরকারের তিন বছর অতিবাহিত হওয়ার পর এখন নাকি পৃথিবীর নানা প্রান্তে রাহুলের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে!

জয়ন্ত ঘোষাল, প্রেমাংশু চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন