সম্পাদক সমীপেষু: মহাকাশের ‘রাজনীতি’

লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, চাঁদ আসলে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হচ্ছে না, বরং এর কিছু অংশ লুকানো থাকে। ‘এই লুকানো চাঁদ’ই যে আমাদের গ্রহের তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানদের আস্তিনে লুকানো ‘তাস’, সেটা অবশ্য দা ভিঞ্চি সাহেব অনুধাবন করতে পারেননি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

চাঁদের জমি বরাবরই লোভনীয়। এক সময় বিশ্বের বৃহৎ শক্তিশালী দুই দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা তাঁদের রাষ্ট্রপ্রধানদের হাতে আকাশের চাঁদটাকে ‘পেড়ে’ এনে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে আমেরিকা ও সোভিয়েটের মধ্যে যে ঠান্ডা লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়, সেই যুদ্ধের উত্তাপে বারেবারেই তপ্ত হয়েছে চাঁদমামা। তাকে যতই আবিষ্কার করা হয়েছে, ততই সে নতুন ভাবে রহস্যের মোড়কে গা-ঢাকা দিয়েছে। পৃথিবীর এই উপগ্রহটি বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীর স্বাভাবিক কৌতূহল ছাপিয়ে রাজনীতিকের শক্তি প্রদর্শনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। না হলে সোভিয়েট রাষ্ট্রপ্রধান নিকিতা ক্রুশ্চেভ ১৯৫৯ সালে আমেরিকা সফরে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজ়েনহাওয়ারকে সোভিয়েটের নাম খোদাই করা চাঁদ উপহার দিতেন না! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘হাতে চাঁদ’ পেয়ে যে ছ্যাঁকাটি খেয়েছিলেন, তার ফল বছর দশেক পর হাতেনাতে পাওয়া গেল। ১৯৬৯-এর জুলাইয়ে এডউইন অলড্রিনকে সঙ্গে নিয়ে নিল আর্মস্ট্রং চাঁদের মাটিতে পা রাখলেন।

Advertisement

লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, চাঁদ আসলে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হচ্ছে না, বরং এর কিছু অংশ লুকানো থাকে। ‘এই লুকানো চাঁদ’ই যে আমাদের গ্রহের তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানদের আস্তিনে লুকানো ‘তাস’, সেটা অবশ্য দা ভিঞ্চি সাহেব অনুধাবন করতে পারেননি।

ঘটনা হল, মহাকাশ বিজ্ঞানের এই ‘রাজনীতি’র পাশাপাশি স্বয়ং চাঁদ অসংখ্য ব্যর্থতারও সাক্ষী। চাঁদের মাটির দখল নিতে গিয়ে বারেবারে বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। নাসার প্রকাশিত তালিকা ‘মুন ফ্যাক্ট শিট’ অনুযায়ী, সেই ১৯৫৮ সাল থেকে মোট ১০৯ বার চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়েছে বিশ্বের নানা দেশ, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, চিন, ইজ়রায়েল এবং ভারত। এর মধ্যে ৬১টি চন্দ্রাভিযান সফল হয়েছে, বাকি ৪৮টি নানা কারণে ব্যর্থ হয়েছে। ইজ়রায়েলের পাঠানো যন্ত্রটিও অবতরণের আগেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমেরিকার ‘পায়োনিয়ার’ও একই ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। এখনও চাঁদ আগের মতোই বিজ্ঞানীদের আকর্ষণের তালিকায়। তবে আগে এটা মাত্র দু’টি দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন বেশ কিছু দেশ এই চাঁদ ধরার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এ বছরেই মানুষের চন্দ্রাভিযানের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে।

Advertisement

এই বছরেই চিনের একটি মহাকাশযান চন্দ্রপৃষ্ঠের সবচেয়ে দুরূহ স্থানে অবতরণ করেছে। যে খবরে যুক্তরাষ্ট্র বেশ নড়চড়ে বসেছে। কারণ, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী তো চিনই।

চাঁদ এখন যতটা না বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কারণ, তার চেয়েও তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানদের আকর্ষণের কেন্দ্রভূমি।

সুদীপ বসু

শান্তিনগর, রহড়া

তেলা মাথায়

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গ করতে গিয়ে বৌবাজারে প্রায় শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় কয়েকশো মানুষ গৃহহীন হয়েছেন ও কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন যে ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ২৫ হাজার টাকা করে দেবেন। এ জন্য সরকারের প্রায় সত্তর কোটি টাকা রাজকোষ থেকে খরচ হবে। চার দিনের জন্য সত্তর কোটি টাকা বাজে খরচ না করে ওই গৃহহীন বাড়ির মালিকদের অন্তত পঁচিশ লাখ টাকা করে দিলে তাঁরা একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিতে পারেন। তার পর রেল দফতর বিচার-বিবেচনা করে যা দেওয়ার দেবেন। পুজো কমিটিগুলোর তো টাকার অভাব নেই। তেলা মাথায় তেল দিয়ে লাভ কী? তবে হ্যাঁ, ভোট ব্যাঙ্কের একটা ব্যাপার আছে।

রাধিকানাথ মল্লিক

কলকাতা-৭

প্রকাশ্যেই নেশা

সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে এখন জুয়া খেলা রমরমিয়ে চলছে। বিশেষ করে কোনও খেলাতে অনুমানের জুয়া লাগানো হচ্ছে ৪৮ টাকা, ১০০, ২০০, ৩০০ বা তারও বেশি টাকা দিয়ে। কয়েক দিন আগে দেখেছি বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও অনেকগুলো অ্যাপ থেকে জুয়া খেলা হয়েছে। যুবসমাজ, বিশেষ করে ছেলেরা এই নেশাতে বেশি মগ্ন হয়ে পড়ছে। এটি তাসের জুয়ার থেকেও বিপজ্জনক। ছেলেরা সব কাজ বাদ দিয়ে স্মার্ট ফোনে এই গেম খেলতে ব্যস্ত। ফলে স্বাভাবিক জনজীবন বিপন্ন ও ব্যাহত হচ্ছে। এগুলি অনেক সময় সারা রাত ধরে খেলা হয়। ছেলেরা বা স্মার্ট মেয়েরা হর রোজ সারা রাত ধরে খেলে যখন বিপর্যস্ত হয়, তখন এই ভাবে হেরে গিয়ে তাদের মধ্যে মানসিক অবসাদের সৃষ্টি হয়। তা থেকে শুরু হয় হতাশা এবং সেখান থেকে অপরাধ প্রবণতা। এগুলি বন্ধ হওয়া উচিত। এই অপরাধ প্রবণতা তাদের বাড়ি থেকেই প্রথম শুরু হয়। বিধানসভায় একটি আইন পাশ হওয়ার প্রয়োজন আছে যে, কোনও ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়াতে জুয়া খেলা যাবে না। এই বিষয়ে সরকারের কঠিনতম পদক্ষেপ করা উচিত।

সুজিত কুমার ভৌমিক

চণ্ডীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

সোনার পদক

‘বিশ্বকাপ শুটিংয়ে ভারতের দাপট, সোনা মনুদের’ (৪-৯) সংবাদটি পড়লাম। ব্রাজিলের রিয়ো ডি জেনেইরোতে আইএসএসএফ বিশ্বকাপ শুটিং প্রতিযোগিতায় ভারতীয় শুটাররা ৫টি সোনা ২টি রুপো ও ২টি ব্রোঞ্জ পদক জিতে প্রতিযোগিতার শেষ দিনে সর্বোচ্চ পদক জিতে পদক তালিকায় ভারত শীর্ষ স্থান দখল করেছে। শুধু রিয়ো ডি জেনেইরোতেই নয়, ইতিপূর্বেই ভারতীয় শুটাররা এই বছরেই দিল্লি, বেজিং ও মিউনিখ আইএসএসএফ বিশ্বকাপ শুটিং প্রতিযোগিতাতেও একাধিক সোনা-সহ পদক জিতে সদ্য সমাপ্ত রিয়ো ডি জেনেইরোর ন্যায় পদক তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে সারা বিশ্বকে দারুণ ভাবে চমকে দিয়েছেনই শুধু নয়, ২০১৯ সালেই চারটি বিশ্বকাপে ১৬টি সোনা ৪টি রুপো ও ২টি ব্রোঞ্জ অর্থাৎ মোট ২২টি পদক জিতে এ যাবৎ যে কোনও খেলার বিশ্বকাপ বিচারে সোনার পদক জয়ে দুর্দান্ত এক ইতিহাস সৃষ্টি করেও ফেলেছেন। বিশ্বকাপ শুটিংয়ে ভারতের এই দুরন্ত ফল কি আগামী ২০২০-র টোকিয়ো অলিম্পিক্সেও দেখতে পাওয়া যাবে? যে ভাবে একের পর এক বিশ্বকাপ শুটিং প্রতিযোগিতায় ভারতীয় শুটাররা তাঁদের খেলার অতি উচ্চমানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছেন। এ ভাবে চলতে থাকলে ভারতীয় তরুণ শুটারদের বিজয়রথ অব্যাহত থাকবে ও শুটাররাই হয়তো টোকিয়ো অলিম্পিক্সে একাধিক সোনা জয় করে ভারতীয় খেলার ইতিহাস নতুন ভাবে রচনা করবেন। এখনও পর্যন্ত ভারত কোনও অলিম্পিক্সে একটির বেশি সোনার পদক পায়নি— এ যাবৎ প্রাপ্ত ৯টি সোনার মধ্যে হকিতে আটটি ও ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক্সে শুটিংয়ে অভিনব বিন্দ্রার দ্বারা একটি। অলিম্পিক্সে সোনার পদক পাওয়ার খরা অবশেষে কাটতে চলেছে। ২০২০-তে টোকিয়ো অলিম্পিক্সে, যেখানে সোনার জোরালো দাবিদার রয়েছেন ব্যাডমিন্টন, তিরন্দাজি, বক্সিং, কুস্তি প্রভৃতি আরও কয়েকটি খেলায় বিশ্বমানে বেশ কয়েক জন ভারতীয় খেলোয়াড়। চিন, জাপান, কোরিয়া, ছাড়াও অলিম্পিক্সে মাঝারি থেকে পিছনের সারির বেশ কিছু দেশ— যেমন এশিয়ার ইরান, কাজ়াখস্তান, উজবেকিস্তান, তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ যদি পারে একাধিক সোনার পদক জয় করতে, তা হলে ভারত পারবে না কেন?

তাপস সাহা

শেওড়াফুলি, হুগলি

চা-এর গুণমান

‘ভেজাল চা’ (৭-৯) শীর্ষক চিঠিটিকে বিপুল ভাবে সমর্থন করছি। কে করবে জানি না অর্থাৎ কেন্দ্র কি রাজ্য, কিন্তু বাজারে বিক্রীত চায়ের গুণমান যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।

পিউ মল্লিক

ইমেল মারফত

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন