Demonetization

সঠিক সিদ্ধান্ত

যদিও কালোবাজারি এখনও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি। তাই আজও খাটের তলা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হতে দেখি, যে টাকার কোনও আয়ের উৎস দেখাতে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা সক্ষম হন না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৫:২১
Share:

এই কোটি কোটি কালো টাকার বেশির ভাগটাই বা পুরোটাই দেখা যায় ২০০০ টাকার নোট। প্রতীকী চিত্র।

২০১৬ সালের নোট বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে ৫৮টি মামলা করেছিল বিরোধী শিবির, তাতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, নোট বাতিল কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না। এর আগে নোট বাতিল নিয়ে বিরোধীরা বার বার অভিযোগ তুলেছিলেন যে, এর ফলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে। হ্যাঁ, সাধারণ মানুষকে হয়তো কিছুটা ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল, কিন্তু নোট বাতিলের ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে কারা পড়েছিলেন, তা কিন্তু সাধারণ মানুষের বুঝতে বাকি নেই। দুর্নীতিগ্রস্ত, কালো টাকার কারবারিরাই যে এর ফলে চরম বিপাকে পড়েছিলেন, তা গোটা দেশ প্রত্যক্ষ করেছে। আর তাই সাধারণ মানুষের দোহাই দিয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে বার বার নোট বাতিলের বিরুদ্ধে তাঁরা সরব হয়েছেন। নোট বাতিলের ফলে যে কালো টাকা অনেকটাই রোখা সম্ভব হয়েছিল, তার প্রমাণ রয়েছে বহু। লোকসভায় পেশ করা অর্থ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল নাগাদ সরকার প্রায় ৬.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা আয়কর আদায় করেছে, যা নোট বাতিলের আগে ছিল ২.৫৮ লক্ষ কোটি। আয়করের সঙ্গে সঙ্গে কর্পোরেট ট্যাক্সের ক্ষেত্রেও সরকার আগের তুলনায় বেশি কর আদায় করেছে। ২০১৬ সালের নোট বাতিলের আগে যেখানে ৪.২৮ লক্ষ কোটি টাকা কর্পোরেট ট্যাক্স আদায় করত সরকার, সেখানে বর্তমানে সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.১২ লক্ষ কোটি টাকা। ফলত এটা স্পষ্ট যে, নোট বাতিলের পরে মানুষের মধ্যে কর দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে এবং কালোবাজারি খানিকটা হলেও কমেছে।

Advertisement

যদিও কালোবাজারি এখনও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি। তাই আজও খাটের তলা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হতে দেখি, যে টাকার কোনও আয়ের উৎস দেখাতে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা সক্ষম হন না। আর এই কোটি কোটি কালো টাকার বেশির ভাগটাই বা পুরোটাই দেখা যায় ২০০০ টাকার নোট। তাই স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে, ২০০০ টাকার নোট বন্ধ হয়ে গেলে কারা সমস্যায় পড়বেন। আর তাঁরাই আবার সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার দোহাই দিয়ে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নামবেন।

আর বর্তমানে ২০০০ টাকার নোট বন্ধের যে সিদ্ধান্ত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া নিয়েছে, তার ফলে নতুন করে আবার যে জাল নোট তৈরির কারবার শুরু হয়েছিল, তা এক ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যাবে। দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উৎখাত করার জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্ত মানুষের তথা দেশের স্বার্থে এক অত্যন্ত দৃঢ় পদক্ষেপ।

Advertisement

দিগন্ত চক্রবর্তী, জাঙ্গিপাড়া, হুগলি

দুর্নীতি হ্রাস

বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নিয়েছে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ এবং দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এটি একটি সঠিক পদক্ষেপ। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে আমরা দেখেছি ইডি এবং সিবিআই-এর তল্লাশিতে যে পরিমাণ অবৈধ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তার সিংহভাগই ২০০০ টাকার নোট। সুতরাং এ কথা পরিষ্কার যে, এই ২০০০ টাকার নোট অবৈধ ভাবে জমা রাখা হয়েছে এবং হচ্ছে। দেশের মানুষ ২০০০ টাকার নোট ব্যবহার করে কতখানি? সিংহভাগই তো বন্দি হয়ে আছে কালোবাজারিদের হাতে। এদের থেকে এই বিপুল অর্থ উদ্ধার করা প্রয়োজন। আর, জনসাধারণও ১০০, ২০০ এবং ৫০০ টাকার নোটের ব্যবহারেই বেশি অভ্যস্ত। তা ছাড়া বেশ কিছু বছর ধরে দেশে ডিজিটাল লেনদেনের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী দিনে তা আরও বাড়বে। আশা করি, এই পদক্ষেপে কালোবাজারি নিয়ন্ত্রিত হবে।

কুন্তল চক্রবর্তী, বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা

নোট বদল

নোট বাতিলের স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে বর্তমানে ২০০০ টাকার নোট বদলের সিদ্ধান্ত। সাত বছর আগে ২০১৬-র ৮ নভেম্বর জানা গিয়েছিল যে, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল হচ্ছে। সেই সময় মানুষের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ভোলার নয়। কত ক্ষণে সেই সব নোট ব্যাঙ্কে বা অন্য কোনও প্রয়োজনে জমা বা ব্যবহার করা যাবে, তার জন্যই ব্যস্ত ছিলেন সকলে। ব্যাঙ্কের সামনে পড়েছিল বিরাট লাইন। প্রয়োজনমতো টাকা পাচ্ছিলেন না অনেকেই। সব মিলিয়ে নোট বাতিলের প্রভাব পড়েছিল সর্ব স্তরে। বর্তমান এই নোট বদলের নির্দেশ সেই দিনগুলোকেই মনে করাচ্ছে।

সত্যি বলতে, বহু দিন ধরেই ২০০০ টাকার নোট দেখা যাচ্ছিল না কোথাও। বাজার কি ব্যাঙ্কে নতুন ৫০০, ১০০-র নোটই চলছে বেশি। আবার, পুরনো ১০০-৫০-২০-১০ টাকাও দিব্যি চলছে। তবে, পুরনো ছোট অঙ্কের নোটগুলো যেমন ময়লা, তেমনই ফাটা। ইচ্ছেমতো ভাঁজ করা, নোটের মধ্যে কালির আঁচড় বা কোনও সংখ্যা লেখা, প্রায়শই দেখা যায়। অথচ, দিব্যি হাত বদল হয়ে যাচ্ছে।

এখনও গ্ৰামগঞ্জে কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা প্রতি দিন উপার্জন থেকে সামান্য কিছু সঞ্চয় করেন। তা ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস নয়, সঞ্চিত হয় বাড়িতেই। খুচরো পয়সার ক্ষেত্রে তা জমে মাটির ভাঁড়ে। ভরে গেলে সেটা ভেঙে ফেলা হয়। তেমনই নোটও কোনও বাক্স বা পুঁটলিতে রাখেন কেউ কেউ। ছোট নোট বেশ কিছু জমে গেলে বড় একটা নোট করে রাখা হয়। এই ভাবে ছোট নোটগুলোই হয়তো এক দিন পরিণত হয়েছে কিছু বড় নোটে। সমস্যায় পড়বেন বোধ হয় তাঁরাই বেশি। কারণ, এঁদের অনেকেই ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের কাজে পটু নন। ফলে, এঁদের কাছে জমানো ২০০০ টাকার নোট থাকলে, এঁরাই আতঙ্কিত হবেন বেশি।

সনৎ ঘোষ, বাগনান, হাওড়া

কর্মী নিয়োগ

আবার নতুন করে ভারত সরকার বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার ফতোয়া জারি করেছে। ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এবং স্টেট ব্যাঙ্ক নির্দেশ দিয়েছে, দেশের সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্ক তথা বেসরকারি ব্যাঙ্কের কাউন্টারে গিয়ে ওই ২০০০ টাকার নোটে মোট কুড়ি হাজার টাকা জমা দিলেই ব্যাঙ্কের ক্যাশ কাউন্টার থেকে সঙ্গে সঙ্গে ওই নোটের পরিবর্তে অন্য নোট দেওয়া হবে। সাধু উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে বলি, আবার ব্যাঙ্কগুলোর উপর নতুন কাজের বোঝা চাপানো হল। কিন্তু বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে জানতে ইচ্ছা করে, ব্যাঙ্কের কাজের চাপ যে ভাবে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে, তাতে এই নতুন কাজটি বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে না কি? এমনিতেই কাজের জেরে ব্যাঙ্ক-কর্মীদের দীর্ঘ ক্ষণ ব্যাঙ্কে থাকতে হয়। অনেক সময় নাওয়াখাওয়ারও সময় থাকে না। আমার দেখা ব্যাঙ্কের এমন অনেক শাখা গ্রামবাংলায় রয়েছে, যেখানে এক জন ম্যানেজার, এক জন ক্যাশিয়ার আর এক জন পিয়ন নিয়েই ব্যাঙ্কের কাজ চলছে। এ দিকে কর্মচারীদের অবসরের পর কোনও নতুন নিয়োগ হচ্ছে না। তাই এক জন প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মচারী হিসাবে আবেদন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নতুন কর্মী নিয়োগ করা হোক।

স্বপন কুমার আঢ্য, ভান্ডারহাটি, হুগলি

দ্রুত পেনশন

আমার প্রয়াত স্বামী পেনশন রিভিশন-এর জন্য গত ২০১৭ সালের মে মাসে দরখাস্ত জমা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর প্রথম বার ২০২০ সালে এবং দ্বিতীয় বার ২০২২ সালে একই নির্দিষ্ট কারণে রাজ্যের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল চিঠি মারফত বিকাশ ভবনের কলেজ পেনশন দফতরে তা ফেরত পাঠান। বিকাশ ভবনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যাতে এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়।

মীরা বসু, কলকাতা-৬০

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন