Newsletter

অকারণে নিজেকে বিপন্ন করে কোন লক্ষ্য পূরণ হয়?

ছুটন্ত ট্রেনের মুখোমুখি হয়ে ট্রেনের দিকেই ছুটতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে পেরিয়ে ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে যেতে হবে— এমনই নাকি ছিল চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে জয়ী হলে কোন মহার্ঘ লক্ষ্য পূরণ হবে আর হারলে কোন মহাভারত অপবিত্র হয়ে যাবে, কারও জানা নেই।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৫৪
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অবান্তর রোমাঞ্চ সন্ধানের বিপজ্জনক প্রবণতা নিয়ে কলম ধরতে হয়েছিল গতকালই। বিধিনিষেধ বা আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী যদি বিপজ্জনক নিজস্বীতে বুঁদ হন, তা হলে সমাজে কী বার্তা যায়,বিপদ কতটা বেড়ে যায়, চর্চা হয়েছিল গতকাল তা নিয়েই। সে চর্চার রেশ কাটার আগেই মর্মান্তিক ঘটনাটার খবর চলে এল। চম্পাহাটি এবং পিয়ালি রেলওয়ে স্টেশনের মাঝে ট্রেনের ধাক্কায় শেষ হয়ে গেলেন যুবক। গুরুতর জখম আরও এক। দুর্ঘটনার কারণ সেই অবান্তর রোমাঞ্চ সন্ধানই।

Advertisement

ছুটন্ত ট্রেনের মুখোমুখি হয়ে ট্রেনের দিকেই ছুটতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে পেরিয়ে ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে যেতে হবে— এমনই নাকি ছিল চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে জয়ী হলে কোন মহার্ঘ লক্ষ্য পূরণ হবে আর হারলে কোন মহাভারত অপবিত্র হয়ে যাবে, কারও জানা নেই। তবু কেউ চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন, কেউ কেউ তা গ্রহণও করলেন। ফলাফল কতটা মারাত্মক হতে পারে তা কেউ উপলব্ধিই করলেন না। অতএব একটা তরতাজা প্রাণ মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন।

আরও কতগুলো প্রাণ এ ভাবে বেঘোরে চলে যাওয়ার পরে আমাদের হুঁশ ফিরবে? কতগুলো প্রাণের এমন সাংঘাতিক অপচয় আমরা ঘটিয়ে ফেলেছি ইতিমধ্যেই, তার হিসেবই বা ক’জন রেখেছি?

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

হতবাক বিস্ময়ের পরিস্থতি! অকারণে, অপ্রয়োজনে এবং আইন ভেঙে এই বিপজ্জনক কার্যকলাপ কী কারণে করেন কেউ? কিছুতেই এ প্রশ্নের জবাব মেলে না। কিন্তু দুর্ঘটনা আর মৃত্যুর মিছিল বাড়তেই থাকে। কেউ চলন্ত ট্রেনের সামনে নিজস্বী নিতে চান। কেউ খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ছবি তোলেন। কেউ আরও বিপজ্জনক কোনও পরিসর খুঁজে নেন। ওই সব অবস্থান থেকে নেওয়া নিজস্বী কোন বীরত্ব বা কোন উৎকর্ষের সাক্ষ্য বহন করে, তা কারও জানা নেই। আদৌ কোনও বীরত্বের কাজ এ সব, নাকি অপরিণতমনস্কতা এবং নির্বুদ্ধিতার পরিচয়, তা নিয়ে কেউ ভাবনা-চিন্তা করেন কি না, বোঝা যায় না। শুধু বেড়ে চলে নিজেদের বিপন্ন করে তোলার প্রবণতা। ছুটন্ত ট্রেনের মুখোমুখি হয়ে ট্রেনের দিকে ছুটে যাওয়া যে সেই প্রবণতারই একটি রূপ ছিল, সে কথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এই ভয়ঙ্কর প্রবণতা নিয়ে যত বারই লেখা হোক, যত কথাই লেখা হোক, তা বাহুল্য হবে না, এ কথা হলফ করে বলা যায়। আরও কত বার এমন দুর্ভাগ্যজনক আচরণের প্রেক্ষিতে কলম ধরতে হবে, নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না এর পরেও।

আরও পড়ুন: জাহাজের বিপজ্জনক অংশে সেলফি তুলে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী

আরও পড়ুন: ‘গুলাম’-এর দৃশ্য নকল করে ট্রেনের মুখোমুখি দৌড়! চম্পাহাটিতে ছিন্নভিন্ন যুবক

আরও পড়ুন: পুলিশের সামনেই জাহাজের কার্নিশে পা ঝুলিয়ে দেদার সেলফি! কে এই মহিলা?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন