Study in Abroad

ভারতীয় পড়ুয়াদের ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন দেশ! পড়তে যাওয়ার আগেই জেনে নিতে হবে নিয়ম-বিধি

বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া থেকে সব থেকে পড়ুয়া দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:০১
Share:

ছবি: এআই।

উচ্চশিক্ষা এবং পরবর্তী কাজের সুযোগ পেতে প্রতি বছর বহু পড়ুয়াই দেশ ছাড়েন। ইউরোপ, আমেরিকা বা অন্য যে কোনও মহাদেশ হয় তাঁদের গন্তব্য। কিন্তু এ জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বা যথেষ্ট যোগ্যতা থাকলেই হবে না। মেনে চলতে হয় নানা ধরনের বিধি। নিয়মের হেরফের হলেই চিরতরে বন্ধ হতে পারে বিদেশে গিয়ে পঠনপাঠনের দরজা।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া থেকে সব থেকে বেশি পড়ুয়াকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে— মোট ৪৫৩জন। এর মধ্যে কাজাখস্তান এবং আমেরিকায় প্রবেশের অনুমতিই পাননি ৭৩ জন।

কিন্তু কেন ঘটল এই ঘটনা?

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ভিসা আবেদনের তথ্যে গরমিল থাকায় এমন ঘটে থাকতে পারে। আবার অনেকেই স্টুডেন্ট ভিসায় ভিন্‌ দেশে পাড়ি দেন, কিন্তু সেখানেই চাকরি করতে শুরু করেন। কেউ জড়িয়ে পড়েন বেআইনি ব্যবসায়। এঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। আবার স্থানীয়দের সঙ্গে জাতিগত বিবাদে জড়িয়ে পড়া বা স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ম ভাঙার কারণেও বহু পড়ুয়াদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আর্থিক অসঙ্গতি:

এ ছাড়াও বিদেশে পড়াশোনার জন্য পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-এ নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা থাকাও বাধ্যতামূলক। অনেক পড়ুয়াই মাঝ পথে আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফি নিয়মিত দিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হতে পারে।

সমাধান:

বিদেশে পড়তে গেলে ঠিক কত খরচ হতে পারে— তার সুনির্দিষ্ট হিসাব করে রাখতে হবে একেবারে প্রথমেই। এ জন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গেও আলোচনা করে সমস্ত নিয়ম জেনে নেওয়া যেতে পারে।

অনেকেই বিদেশে থাকার খরচ জোগাড় করতে বিদেশে রোজগারের পথ খোঁজেন পড়াশোনার পাশাপাশি। সে ক্ষেত্রে প্রথমেই সতর্ক হতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি কোন ধরনের চাকরিতে পড়ুয়ারা যোগ দিতে পারেন, সে সংক্রান্ত ওই নির্দিষ্ট দেশের আইন জেনে নিতে হবে।

ক্লাস না করা এবং বচসায় জড়িয়ে পড়া:

প্রতিটি দেশের নিয়ম-বিধি নাগরিক স্বার্থ রক্ষার কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়। বিদেশে পড়তে যাওয়ার সময় এই বিষয়গুলি না জানলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এই ধরনের সমস্যার কারণে পঠনপাঠনেও প্রভাব পড়ে।

অনেস সময় দেখা যায়, নিয়মিত ক্লাস না করলেও বিদেশের প্রতিষ্ঠানগুলি পড়ুয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে থাকে।

এ ক্ষেত্রে কী করণীয়?

আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, আফ্রিকা-সহ বিভিন্ন মহাদেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী নিয়ম-বিধিও পৃথক। তাই পড়াশোনার জন্য যখন বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন, তখনই সে দেশের নিয়ম জেনে নেওয়া অন্তত জরুরি। কোথায় কী কথা বলা যেতে পারে, কী নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে— তা জেনে নিতে হবে অভিজ্ঞদের থেকে। এতে সহজে এড়ানো যাবে আইনি জটিলতা।

এ ছাড়াও যে দেশে পড়তে যাচ্ছেন, সে দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন, গত কয়েক বছরে দ্বিপাক্ষিক নীতিতে কী কী পরিবর্তন হয়েছে, তা জেনে রাখা দরকার। এ জন্য বিদেশমন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকায় নিয়মিত নজর রাখতে হবে। বিদেশে যাওয়ার পর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে, যাতে কোনও সমস্যা হলে সেখানকার আধিকারিকেরা সহযোগিতা করতে পারেন।

১ জানুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ১৮ লক্ষ ৮২ হাজার ৩১৮ জন ভারতীয় দেশের বাইরে পড়াশোনার জন্য গিয়েছেন। মূলত, বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশে পাড়ি দেন এ দেশের ছেলেমেয়েরা। মেডিক্যালে উচ্চশিক্ষার জন্য রাশিয়া এবং চিনেও ভারতীয় পড়ুয়াদের উপস্থিতি যথেষ্ট বেশি। তবে, পরিবর্তিত বিদেশনীতির কারণে বর্তমানে আমেরিকায় পঠনপাঠন নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কোরিয়া, কিংবা ইউরোপের দেশগুলিও বেছে নিচ্ছেন পড়ুয়ারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement