প্রতীকী চিত্র।
প্রাথমিক ও হাইস্কুলের পর এ বার মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুরনো চাকরিতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য। ১৯৭ জনকে পুরনো চাকরিতে ফেরানোর অনুমতি দিল শিক্ষা দফতর।
কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন-এর তরফে মাদ্রাসা বোর্ডকে জানানো হয়েছে, ১৯৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, যাঁরা আগে মাদ্রাসা বোর্ডে কাজ করতেন, তাঁরা ফের সেই কাজে যোগ দিতে পারবেন। তবে প্রাথমিক ভাবে বোর্ড যে ২৬৪ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম পাঠিয়েছিল, তাতে গরমিল রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। বোর্ডের তরফে পাঠানো চিঠিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ৬৭ জন প্রার্থীর তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। তা ফের যাচাই করে দফতরের কাছে পাঠাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাদ্রাসা বোর্ডকে।
শুধু মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, পার্শ্ব শিক্ষক হিসাবেও যাঁরা কাজ করতেন, তাঁরা যাতে পুরনো কাজে যোগ দিতে পারেন, সে জন্যও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
কিন্তু এই ফিরিয়ে নেওয়া প্রক্রিয়া কি আদৌ বিতর্কের ঊর্ধ্বে? শিক্ষকমহলের একাংশের দাবি, এই পুরনো কাজে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েও ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “মাদ্রাসা ও পার্শ্ব শিক্ষকদের পুরনো কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশিকা জারি হল। কিন্তু শিক্ষা দফতর এখনও কোনও নীতি নির্ধারণ করতে পারল না। এই সব শিক্ষকেরা প্রায় দশ বছর আগে যে সব পদে চাকরি করতেন, সেখানে আর শূন্যপদ নেই।” স্বপন মণ্ডলের দাবি, এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে বহু ক্ষেত্রেই। ফলে পুরনো কাজে ফিরে যাওয়া শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ যে নিষ্কণ্টক, তা বলা যায় না।
ইতিমধ্যে প্রায় দু’হাজার চাকরিহারা শিক্ষককে প্রাথমিক শিক্ষকতার কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শুধু প্রাথমিক নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদোন্নতি ও বাড়ির কাছে কর্মস্থল চেয়ে ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির দায়ে, তাঁদের সকলেরই চাকরি গিয়েছে। তার পরেই তাঁরা পুরনো পদে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ৫৫০ জনকে পুরনো কাজে যোদ দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পুরনো চাকরিতে ফিরতে চেয়ে চার হাজারের বেশি ‘যোগ্য’ চাকরিহারা আবেদন করেছিলেন। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের সমস্ত নথি যাচাই করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষকতা ছাড়াও পুরনো চাকরিতে ফিরে গিয়েছেন বিদ্যুৎ দফতর, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্মীরা।