যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছরের স্নাতক স্তরে ভর্তির আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্প্রতি শেষ হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, গত বছরের তুলনায় বিজ্ঞান বিভাগে উল্লেখযোগ্য ভাবে অনেক কমসংখ্যক পড়ুয়া আবেদন জানিয়েছেন। গণিতে পড়ুয়ার আবেদনের হার কমল প্রায় ৫০ শতাংশ। এর নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা উঠে আসছে।
গণিত বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বলেন ‘‘গত বছর বিজ্ঞান বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। এই বছর আবার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে বলা হচ্ছে। বিগত কিছু বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, প্রবেশিকা পরীক্ষা নিলে তেমন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয় না।’’ এ ছাড়াও তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের আইআইটি কলেজগুলিতেও কম্পিউটার সায়েন্স এবং গণিত, এই দু’টি বিষয় একসঙ্গে থাকে। সেই জায়গায় হঠাৎ দু’টিকে আলাদা করে দেওয়ার কারণে চলতি বছরে অনেক কম পড়ুয়ার আবেদন জমা পড়েছে। গত বছর গণিতে আবেদন জানিয়ে ছিলেন ১৮৩৫ জন। এই বছর ৯৯৮।
একই ছবি বিজ্ঞান, কলা বিভাগের অন্য বিষয়গুলির ক্ষেত্রেও। পদার্থবিদ্যা বিভাগে গত বছর ১২৯৬ জন আবেদন জানিয়ে ছিলেন এই বছর সেই সংখ্যা ১১০৫। রসায়নে ভর্তির জন্য আবেদন জানিয়ে ছিলেন ১২৮৬ জন, এই বছর ৯৬৫ জন। ভূবিদ্যায় ৭৩৯ জন আবেদন জানিয়ে ছিলেন গত বছর, এই বছর ৬৬৮ জন। একই ছবি কলা বিভাগের বাংলা, ইংরেজি বিষয়েও। বাংলায় গত বছর ৪০৬ জন আবেদন জমা পড়েছিল, এই বছর জমা পড়ে ২৯০ জনের আবেদন। ইংরেজির ক্ষেত্রে গত বছরের সংখ্যা ২৪৫৬ জন, এই বছর ১৭৫৬।
‘জুটা’র (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠন) সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘বার বার ভর্তিপ্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়া, ওবিসি তালিকা নিয়ে জট—এই সব কারণেই মূলত এই বছর সামগ্রিক ভাবে সব বিভাগে কম পড়ুয়া আবেদন জানিয়েছেন। এ ছাড়াও বহু পড়ুয়া এখন তথাকথিত বিষয়গুলি নিয়ে পড়তে চান না। অন্যান্য পেশাভিত্তিক কোর্সের দিকে ঝোঁক বাড়ছে। এটাও না আবেদন না জানানোর অন্যতম কারণ।’’
উল্লেখ্য, ১৮ জুন দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। চলতি বছর কলা বিভাগের মোট ১০টির মধ্যে তিনটি বিষয়ের ক্ষেত্রে কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা বা এন্ট্রান্স টেস্টের আয়োজন করবে না বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বাকি সাতটি বিষয়ে নেওয়া হবে প্রবেশিকা পরীক্ষা। বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রেও একটি বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে না। বাকি বিষয়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষার আয়োজন করবে বিশ্ববিদ্যালয়। আর্টসের যে তিনটি বিষয় এবং বিজ্ঞানের যে একটি বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে না, সেগুলি হল দর্শন, সংস্কৃত, সমাজবিদ্যা এবং ভূতত্ত্ব।