ছবি: সংগৃহীত।
সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এক ছাত্রীর ধর্ষণের ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ না করায় পরিচালন সমিতি থেকে দুই মনোনীত সদস্যকে সরিয়ে দিতে চলেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এঁরা হলেন শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবং যশবন্তী শ্রীমানি। বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত প্রতিনিধি শিবরঞ্জন ২০১২ সাল থেকে এবং যশবন্তী ২০১৭ সাল থেকে কলেজের পরিচালন সমিতিতে রয়েছেন। এঁদের মধ্যে যশবন্তী কোনও কলেজের শিক্ষক না হয়েও ওই পদে কী করে এতদিন ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ল কলেজের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে অস্থায়ী পদে নিয়োগের বিষয়ে কেন তিনি আপত্তি তোলেননি তা নিয়ে প্রস্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন শিবরঞ্জন। তিনি জানিয়েছেন, অস্থায়ী কর্মী হিসেবে যখন অভিযুক্তকে নিয়োগ করা হয়েছিল তখন তিনি পরিচালন সমিতির বৈঠকে ছিলেন না। তবে পরে তিনি কলেজের উপাধ্যক্ষকে ওই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। উত্তরে উপাধ্যক্ষ তাঁকে জানান, ও (অভিযুক্ত) ভাল হয়ে গেছে। আরও একটু ভাল হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে মৌখিক আপত্তি জানালেও এই কোনও লিখিত আপত্তি জানাননি শিবরঞ্জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, মনোনীত দু’জনেই অস্থায়ী কর্মী হিসেবে অভিযুক্তের নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন, তবে তা মৌখিক। দু’জনের কেউই লিখিত আপত্তি জানাননি। আর যা যা কাজ স্বচ্ছ ভাবে করা উচিত ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য হিসাবে তা তাঁরা পালন করেননি। তাই তাঁদের পদ থেকে সরানো হচ্ছে।
অন্যদিকে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে গড়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়েছে উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-র কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর ওই রিপোর্টে কলেজের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে কলেজের পরিচালন সমিতি সঠিক ভাবে কাজ করেনি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আগে থেকে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেননি পরিচালন সমিতির সদস্য ও উপাধ্যক্ষ। এ ছাড়াও কলেজের প্রশাসনিক কাজকর্মে বহিরাগতদের বড় ধরনের হস্তক্ষেপেরও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। সর্বোপরি উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা যথাযথ নয় বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
এই রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ২৫ জুন কলেজ চত্বরে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে।