মেডিক্যাল নিয়ে পড়তে চাইল নিট ছাড়াও ভর্তি হওয়া সম্ভব। প্রতীকী চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর চিকিৎসাবিদ্যা পড়তে আগ্রহীর সংখ্যা কম নয়। তবে সকলেই নিট-এর মতো পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান না। তাঁদের জন্য বেশ কিছু বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে, যা মেডিক্যাল শাখার অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়গুলি প্যারামেডিক্যাল শাখার অধীনে পড়ানো হয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩১ মার্চ, ২০২৩-এর গণনার নিরিখে প্যারামেডিক্যাল স্টাফের সংখ্যা ১,৩৫,৭৯৩ জন। উল্লেখ্য চলতি সপ্তাহেই নিট ইউজি-র রেজ়াল্ট প্রকাশিত হতে চলেছে।
প্যারামেডিক্যাল কী?
চিকিৎসা ক্ষেত্রে চিকিৎসক, নার্সের পাশাপাশি ল্যাব টেকনিশিয়ান, পারফিউশনিস্ট, ক্রিটিক্যাল কেয়ার টেকনিশিয়ান, ফিজ়িয়োথেরাপিস্টের মতো বিশেষজ্ঞদের অবদান রয়েছে। রোগ নির্ণয় এবং নিরাময়— উভয় ক্ষেত্রেই প্যারামেডিক্যাল স্টাফেরা সমান ভাবে কার্যকারি ভূমিকা পালন করেন।
কোন কোন বিষয় প্যারামেডিক্যাল শাখার অন্তর্ভুক্ত?
মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি টেকনোলজি, রেডিয়োগ্রাফি, ফিজ়িয়োথেরাপি, রেডিয়োথেরাপিউটিক টেকনোলজি, অপটোমেট্রি উইথ অপথালমিক টেকনিক, নিউরো ইলেক্ট্রো ফিজিয়োলজি, পারফিউশন টেকনোলজি, ক্যাথ ল্যাব টেকনিশিয়ান, ডায়লাসিস টেকনিক, অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজি, ডায়াবেটিক্স কেয়ার টেকনোলজি, ইলেকট্রো-কার্ডিয়োগ্রাফিক টেকনিক এবং সমতুল্য বিষয়গুলি প্যারামেডিক্যাল শাখার অন্তর্ভুক্ত।
কারা পড়তে পারবেন?
বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ উত্তীর্ণরা এই বিষয়গুলি নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন। এর জন্য তাঁদের পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন।
কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়?
ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ, ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি এবং সরকার-পোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উল্লিখিত বিষয়গুলি নিয়ে পড়ানো হয়ে থাকে।
দেশের কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ রয়েছে?
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস), পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পিজিআইএমইআর), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস থেকেও প্যারামেডিক্যালের একাধিক কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। তবে, এ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের প্রতিষ্ঠানগুলির নিজস্ব প্রবেশিকা দিতে হবে।
খরচ কত?
রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ডিপ্লোমা এবং ডিগ্রি কোর্স পড়ানো হয়ে থাকে। সেই কোর্সগুলির জন্য ১৫ হাজার থেকে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
রাজ্যের বেসরকারি কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি কোর্সের খরচ ১৯ হাজার টাকা থেকে ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এর বেশি টাকা ফি হিসাবে ধার্য করা হয়।
কাজের সুযোগ কেমন?
সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে প্যারামেডিক্যাল স্টাফদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়াও সরকার অধীনস্থ সংস্থাগুলির মেডিক্যাল বিভাগেও চাকরির সুযোগ পেতে পারেন। সম্প্রতি, রেল, ডাক বিভাগ, কর্মচারি রাজ্য বিমা নিগম, ব্যাঙ্কের মতো কেন্দ্রগুলিতে এই বিভাগের কর্মীদের নিয়মিত ভাবে চুক্তির ভিত্তিতে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।
সম্প্রতি রাজ্যের স্টেট মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের তরফে প্যারামেডিক্যাল শাখায় ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগ্রহীদের অনলাইনে আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদনের জন্য পোর্টাল ৪ জুলাই পর্যন্ত চালু থাকছে। কোর্সের ক্লাস ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে।