UGC Draft Curriculum of Maths 2025

ইউজিসি-র খসড়ায় গণিতে বৈদিক যুগের প্রসঙ্গ, নতুন করে দানা বাঁধছে শিক্ষানীতির বিতর্ক

লার্নিং আউটকামস বেসড কারিকুলাম (এলওসিএফ)-এর খসড়ার ভিত্তিতে সকলের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৫ ১৯:০৭
Share:

ইউজিসি। ছবি: সংগৃহীত।

জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পড়ুয়াদের স্বার্থে পাঠ্যক্রম বদলের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর। এ জন্য বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদানের পর তার ফলাফলের ভিত্তিতে পাঠ্যক্রম কাঠামো (লার্নিং আউটকামস বেসড কারিকুলাম) নির্মাণের চেষ্টা করছে কমিশন। সেই খসড়ায় গণিত স্নাতকের পাঠক্রমে প্রাচীন ভারতীয় গণিত বা বৈদিক যুগের গণিতের মতো নানা বিষয় রাখা হয়েছে। বহু দিন ধরেই এই বিষয় চাপান উতর চলছে। পাঠ্যক্রমে এমন একটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, সে খবর চাউর হওয়ার পরই নতুন করে উস্কে উঠেছে বিতর্ক।

Advertisement

গণিত বিষয়ের লার্নিং আউটকামস বেসড কারিকুলাম (এলওসিএফ)-এর খসড়ায় স্নাতকে সূত্র নির্ভর অ্যালজেব্রা অঙ্ককে রাখা হয়েছে মাইনর বা অ্যাডিশনাল কোর্স হিসাবে। সেখানে পড়ানো হবে ভারতীয় বীজগণিতের ইতিহাস ও বিবর্তন, ‘পরাবর্ত জয়াজেত সূত্র’ (প্রাচীন বৈদিক গণিতের একটি কৌশল) -এর মতো বিষয়। এ ছাড়া রয়েছে, কাল গণনার মতো বিষয়ও। প্রাচীনকালে ভারতের গবেষকেরা কী ভাবে সূর্য, চন্দ্র, তারা এবং পৃথিবীর গতিবিধি দেখে সময় মাপতেন, তা-ও পড়ানো হবে।

পাঠ্যক্রমের নাকি রাখা হবে ‘সূর্য সিদ্ধান্ত’ এবং আর্যভট্ট রচিত বইও। যেখান থেকে জানা যাবে যুগ, কল্প, ব্রহ্মবর্ষ, বিষ্ণুবর্ষ, শিববর্ষের মতো মহাজাগতিক সময়। জানা যাবে ভারতের নিজস্ব ক্যালেন্ডার এবং বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান এবং উৎসবের শুভ মুহূর্ত সম্পর্কেও। বৈদিক কালের সময় ‘গতি’, ‘বিগতি’-এর সঙ্গে বর্তমান ‘গ্রিনিচ মিনটাইম’ এবং ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম’-এর পার্থক্যের মতো বিষয়ও।

Advertisement

লার্নিং আউটকামস বেসড কারিকুলাম (এলওসিএফ)-এর খসড়ার ভিত্তিতে সকলের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, এই পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতেই সমস্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাঠ্যসূচি ঠিক করতে হবে। বৈদিক যুগের অঙ্কের নানা বিষয় পাঠ্যক্রমে থাকায় শিক্ষক মহলে নানা মতামত উঠে এসেছে। এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্ত বলেছেন, “বৈদিক গণিত বলে যা চালানো হচ্ছে, তা ঠিক নয়। ওটা বেদও নয়, অঙ্কও নয়।” তিনি জানিয়েছেন, সরল পাটিগণিতের ক্ষেত্রে পুরনো কিছু নিয়ম খাটলেও, সেটা বৈদিক গণিত নয়। তাঁর কথায়, “এতে বেদেরও সম্মান থাকে না। গণিতেরও না।”

তবে উল্টো সুর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই গণিত বিভাগের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউয়ের, “সবটাই নস্যাৎ করে দেওয়া ঠিক নয়। ভারতীয় গণিতে প্রতীক এবং দশমিক পদ্ধতির ব্যবহার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। যা বর্তমানেও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক।” তাঁর মতে, কমিশনের এই পাঠ্যক্রমের খসড়া কাঠামোতে যদি প্রাচীন ভারতের গণিতের নানা বিষয় পড়ানো হয়, তাতে কোনও ক্ষতি হবে না পড়ুয়াদের। শুধুমাত্র রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ পেয়ে পুরো ভাবনাটা নাকচ করা ঠিক নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement