SSC Recruitment case

আদালতের রায় দানের পর হতাশ 'যোগ্য'রা, ফর্ম ফিল-আপ করতে চান তাঁরা

চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি আজকের আদালতে আবেদন খারিজ হ‌ওয়ার ফলে ২০১৬ সালের 'যোগ্য 'স্পেশ্যাল বি.এড করা এবং অ্যাকাডেমিক কোয়ালিফিকেশনে (এনসিটিই) নিয়ম মেনে ৪৫ শতাংশে চাকরি পেয়েছিল তাঁরা বঞ্চিত হল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ২২:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত সব আবেদন খারিজ হয়ে গেল উচ্চ আদালতে! বুধবার রায় দিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, তারপরই ফর্ম ফিলাপের পথে চাকরিহারা আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, পরীক্ষার জন্য আবেদন না করলে তা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।

Advertisement

'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকা মঞ্চের নেত্রী সঙ্গীতা সাহা বলেন, ‘‘আমরা এই রায়ের পর হতাশ। আমাদের এখন আবেদন প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। না হলে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।’’

চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, আদালতে আবেদন খারিজ হ‌ওয়ার ফলে ২০১৬ সালের 'যোগ্য 'স্পেশ্যাল বি.এড করা এবং অ্যাকাডেমিক কোয়ালিফিকেশনে (এনসিটিই) নিয়ম মেনে যাঁরা ৪৫ শতাংশ নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা বঞ্চিত হলেন। তাঁদেরই জন্য আমাদের লড়াই চলবে আমরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করব।

Advertisement

'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের অন্যতম নেতা মেহবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘যোগ্য'-রা আবেদন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছেন তাঁর কারণ 'অযোগ্য'-রা বাদ পড়েছে। তার মানে এই নয় আমরা পরীক্ষা দেব। আমরা খুব শীঘ্রই সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’

বেশ কয়েকটি 'যোগ্য' শিক্ষক সংগঠনের দাবি, ১৪ তারিখে প্রথম দফার আবেদনের শেষের আগেই বহু 'যোগ্য' চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছেন। আমরা কখনওই কাউকে আবেদন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বাধা দিইনি। কারণ এর মধ্যে তাঁদের জীবন জীবিকা যুক্ত রয়েছে। সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের গত ৩ এপ্রিল যে রায় দিয়েছিল সেই অনুযায়ী এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। এই বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপ মানে পরীক্ষা নয়। আমরা আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরছি না রিভিউ পিটিশন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’’

নোটিফিকেশনের পর থেকেই কখন‌ও ওবিসি সংরক্ষণ আবার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মামলায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। এই রায়ের পর স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘এই রায় আমাদের অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে। আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল আন্টেনটেড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন এর যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন প্রায় হাজার মতো। তাঁদের দাবি, তাঁরা আবেদনে অংশগ্রহণ করবেন না। এই রায়ের তৈরি আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছে তারা শীর্ষ আদালতে যাবে দ্রুত। এই সংগঠনের আহ্বায়ক মৃন্ময়ী মণ্ডল বলেন, "আমাদের কেউ এই আবেদন প্রক্রিয়া অংশগ্রহণ করব না। আমরা আইনজীবীর সাথে পরামর্শ নিচ্ছি দ্রুত সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে যাচ্ছি।"

প্রসঙ্গত, ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের নিয়োগপরীক্ষার নতুন বিধি প্রকাশ করেছিল এসএসসি। নতুন পরীক্ষাবিধিতে নানা বদলও আনা হয়েছিল। তা নিয়েই মামলা হয় হাই কোর্টে। মামলাকারীদের দাবি ছিল, ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের মতোই করতে হবে। উল্লেখ্য, নয়া বিধিতে বলা হয়েছিল, এ বার ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে, আগে যা ৫৫ নম্বরের ছিল। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে ১০ নম্বর, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপর সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে রাখা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, তাঁরাই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন বলেও জানিয়েছিল এসএসসি। বুধবার শেষমেশ এসএসসির সেই সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দিল উচ্চ আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement