প্রতীকী চিত্র।
ফের বাড়ল স্নাতকে ভর্তির আবেদনের সময়সীমা। আরও ১০ দিন বাড়ান হল সরকারের তরফ থেকে। ২৫ জুলাই পর্যন্ত অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন ও রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা।
উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের ৪১ দিনের মাথায় ১৮ জুন থেকে শুরু হয়েছিল সেন্ট্রালাইজ অ্যাডমিশন। প্রথম পর্যায়ের প্রথম পর্যায়ে পোর্টালে আবেদন এবং রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন ছিল ১ জুলাই। তা বৃদ্ধি করে করা হয় ১৫ জুলাই। দ্বিতীয়বার আরও ১০ দিনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হল উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফ থেকে।
স্বাভাবিক ভাবেই আবেদনের সময়সীমা ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায়, কবে ক্লাস শুরু হবে কবে তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘‘সরকার সব জেনে এই আইনি জটিলতার মধ্যে জড়িয়েছে। এর ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতি হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। আবেদনের সময় যত বাড়বে ক্লাস শুরু হতেও তত দেরি হবে।’’
বিকেল ৬ টা পর্যন্ত অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদনের সংখ্যা ১৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪৪৩। আবেদনকারী পড়ুয়ার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ২৯৪। ভিন্ রাজ্য থেকে ৩৭৮৭ জন আবেদন করেছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। নিজের এক্স্যা হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন।
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, ‘‘যত দ্রুত ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ততই ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধা হবে। এ বছর পুজো আগে হাতে খুব অল্প সময়। দু’বার সময়সীমা বৃদ্ধি করার ফলে প্রথম সেমিস্টারে সময় কম পাবে পড়ুয়ারা।’’
তবে ভর্তি শেষ হতে এত দেরি হলে ভাল কলেজগুলিতে সুযোগ পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে বলে মনে করছে শিক্ষক মহলে একাংশ।
ইতিমধ্যেই এই অভিন্ন পোর্টালের বাইরে থাকা যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, স্বশাসিত কলেজ এবং সংখ্যালঘু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনকি নেতাজী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ও নির্দিষ্ট সময় হয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া।
প্রসঙ্গত, সোমবার অভিন্ন পোর্টালের একটি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। সেখানে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২৪-র ২২ মে হাই কোর্ট থেকে দেওয়া আইনকেই মান্যতা দেওয়া হবে তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে। কারণ বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। যদি পরবর্তী কালে কোনও পরিবর্তন হয় তবে সেই মতো নির্দেশিকা পরিবর্তন করা হবে।
২০১০-এর আগে প্রযোজ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে ৬৬টি জনগোষ্ঠীর জন্য ওবিসি-দের ৭% সংরক্ষণ ছিল।
২০১১-এ রাজনৈতিক পালাবদলের পর ২০১২-এ আইন সংশোধন করা হয়। সংরক্ষণ তালিকায় ১১৩টি জনগোষ্ঠী যুক্ত হয়— যার মধ্যে ৭৭টি মুসলিম সম্প্রদায়ের এবং ৩৬টি হিন্দু সম্প্রদায়ের। কিন্তু এই সংশোধিত তালিকা ২০২৪ সালে কলকাতা হাই কোর্ট বাতিল করে দেয়। রাজ্য সরকার এই রায় সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে।
এই সময়ে রাজ্য সরকার একটি নতুন ওবিসি তালিকা প্রকাশ করেছে, যাতে ১৪০টি উপশ্রেণি (৭৭টি মুসলিম, ৬৩টি হিন্দু) রাখা হয়েছে। সংরক্ষণ বাড়িয়ে ১৭% করা হয়েছে। তবে হাইকোর্ট ১৮ জুন এই নতুন তালিকাও স্থগিত করে দিয়েছে।
রাজ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন আইনকে মান্যতা দেয় তার দিকে তাকিয়ে আছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়। যেমন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাদের ভর্তির সিদ্ধান্ত রাজ্যের নির্দেশিকার উপরই নির্ভর করবে।