প্রতীকী চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের পর কি এ বার উচ্চশিক্ষা দফতর! তারাও কি স্নাতকস্তরে ভর্তির মেধা তালিকা প্রকাশ করতে চলেছে ২০১০ সাল পর্যন্ত চলা ওবিসি সংরক্ষণ নীতি মেনে? অভিন্ন পোর্টালে দেওয়া নতুন বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা ।
কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ওবিসি জটিলতা অব্যাহত। মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই শেষ হচ্ছে স্নাতকস্তরে ভর্তির বর্ধিত সময়সীমা। তবে সরকারের তরফ থেকে এখনও পরিষ্কার করা হয়নি, মেধা তালিকায় সংরক্ষণের কোন নীতি মান্য হবে। যদিও অভিন্ন পোর্টালের মধ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২৪-র ২২ মে হাইকোর্ট থেকে দেওয়া আইনকেই মান্যতা দেওয়া হবে তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে। কারণ বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। যদি পরবর্তী কালে কোনও পরিবর্তন হয় তবে সেই মতো নির্দেশিকা পরিবর্তন করা হবে।
যদিও এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা মুখ খুলতে নারাজ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, মঙ্গলবার রাতে শেষ হচ্ছে বর্ধিত আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া। তার আগেই আশা করা যাচ্ছে সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট কোন বার্তা দেওয়া হবে।
২০১০-এর আগে প্রযোজ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে ৬৬টি জনগোষ্ঠীর জন্য ওবিসি-দের ৭% সংরক্ষণ ছিল।
২০১১-এ রাজনৈতিক পালাবদলের পর ২০১২-এ আইন সংশোধন করা হয়। সংরক্ষণ তালিকায় ১১৩টি জনগোষ্ঠী যুক্ত হয়— যার মধ্যে ৭৭টি মুসলিম সম্প্রদায়ের এবং ৩৬টি হিন্দু সম্প্রদায়ের। কিন্তু এই সংশোধিত তালিকা ২০২৪ সালে কলকাতা হাইকোর্ট বাতিল করে দেয়। রাজ্য সরকার এই রায় সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে।
এই সময়ে রাজ্য সরকার একটি নতুন ওবিসি তালিকা প্রকাশ করেছে, যাতে ১৪০টি উপশ্রেণি (৭৭টি মুসলিম, ৬৩টি হিন্দু) রাখা হয়েছে। সংরক্ষণ বাড়িয়ে ১৭% করা হয়েছে। তবে হাইকোর্ট ১৮ জুন এই নতুন তালিকাও স্থগিত করে দিয়েছে।
রাজ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন আইনকে মান্যতা দেয় তার দিকে তাকিয়ে আছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়। যেমন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাদের ভর্তির সিদ্ধান্ত রাজ্যের নির্দেশিকার উপরই নির্ভর করবে।
অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড দ্বারা পরিচালিত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফল এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স-এর ফলও আটকে রয়েছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে রাজ্যের সিদ্ধান্তের উপর অপেক্ষা করতে হবে না। ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ২০১০ এর সংরক্ষণ আইনকে মান্যতা দিয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।
অনলাইন ভর্তি পোর্টাল ১৮ জুন থেকে বাংলার ৪৬০টি কলেজে স্নাতক ভর্তির জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে। প্রায় ১৮ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-নেওয়া পর্যন্ত মেধা তালিকা প্রস্তুত করা যাবে না।