নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষা ক্রমশ বৈশ্বিক হয়ে উঠছে। নিজের স্কুলে সেই অভিজ্ঞতা এ বার অর্জন করল কলকাতার পড়ুয়ারা। সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়িয়ে গেলেন তিন আমেরিকান শিক্ষক।
টিচার্স ফর গ্লোবাল ক্লাসরুম প্রোগ্রাম (টিজিসি) প্রকল্পের অধীনে তিনজন বৃত্তিপ্রাপক শিক্ষক প্রথম বার বাংলার কোনও সরকার পোষিত স্কুলে এলেন। শনিবার বরিশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস স্কুলের পড়ুয়ারা জানতে পারল বিদেশি শ্রেণিকক্ষে কী ভাবে চলে পঠনপাঠন। পাশাপাশি বাংলায় কী ভাবে শিক্ষা পরিকাঠামো উন্নতি লাভ করছে তার সম্যক ধারণাও গ্রহণ করলেন বিদেশি শিক্ষকেরা।
এই প্রকল্পের অধীনে ১৯ জন বিদেশি শিক্ষকের ভারতে আসার কথা। গত শনিবার তাঁদেরই তিন জন কলকাতায় আসেন। সোমবার তাঁরা মিলিত হন কলকাতার ৪০ টি বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষকের সঙ্গে। আগামী বুধবার তাঁরা ফের ক্লাস করবেন বরিশার ওই স্কুলে।
বরিশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা সেনগুপ্ত বলেন, "রাজ্যের সরকারি বা সরকার-পোষিত স্কুলগুলির মধ্যে আমরাই প্রথম এই ধরনের ক্লাসের আয়োজন করলাম। ইউএসআইইএফ-নির্বাচিত ফুলব্রাইট টিজিসি শিক্ষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে এই প্রকল্পে যোগ দিতে পেরে আমরা গর্বিত। এই ধরনের কাজ না হলে পড়ুয়া বা শিক্ষকেরা বৈশ্বিক ধারণা পাবেন না, তাতে আখেরে ক্ষতি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার।"
এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা ইউনাইটেড স্টেট ইন্ডিয়া এডুকেশনস ফাউন্ডেশন। বাংলায় এসেছেন ফুলব্রাইট শিক্ষক অলিভিয়া, অ্যামি এবং কিম। ২০২৩-এ আমেরিকা সরকার এই প্রোগ্রামের কথা জানায়। তারপর বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পান তাঁরা।
শনিবার বেহালার এই স্কুলে এসে প্রথমে বিভিন্ন ক্লাসরুম ঘুরে দেখেন এই তিন শিক্ষক। এ ছাড়াও গবেষণাগার, মিউজিক ক্লাসও পরিদর্শন করেন। মিড-ডে মিল সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য নেন তাঁরা স্কুলের কাছ থেকে।
সোমবার বেহালার ৪০টি স্কুলের ৪০ জন ইংরেজি শিক্ষককে নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজনও করা হয়। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল কী ভাবে আমেরিকার শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা হয়, তার সম্যক ধারণা তৈরি করা। পাশাপাশি বাংলায় কী ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হয়, সে অভিজ্ঞতা লাভ করা।
আগামী ১৬ জুলাই এই শিক্ষকেরা ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেবেন। যে ভাবে আমেরিকার স্কুলে ক্লাস নেওয়া হয় ঠিক তেমন ভাবে। তারপরে বিকাশ ভবন-সহ বিভিন্ন দফতেরেও তাঁরা যাবেন বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
১৯৫৪ সালে এই স্কুল স্থাপিত হয়। গত তিন বছর ধরে বাংলা মাধ্যমে সঙ্গে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হয় এই স্কুলে। বর্তমানে এই স্কুলে ২৫০ জন ছাত্রী রয়েছে। শিক্ষকের সংখ্যা ২১।