যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এক প্রাক্তনী। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আর্থিক অনুদান হোক বা নানা সংস্কারমূলক কাজ অথবা বৃত্তি প্রদান, সবক্ষেত্রে বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তনীরা। এ বার সেরকমই আর এক নিদর্শন রাখলেন প্রদীপ্তা সরকার। ইংরেজি বিভাগের এই প্রাক্তনী বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন ২০০৮ সালে। বর্তমানে থাকেন বিদেশে।
প্রদীপ্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষায় সম্পাদনা এবং প্রকাশনা কোর্সে ভর্তি নেওয়া পড়ুয়াদের জন্য একটি বৃত্তি বা স্কলারশিপের ব্যবস্থা করবেন। মূলত, যাঁরা আর্থিক বাধা অতিক্রম করে সংশ্লিষ্ট কোর্সে ভর্তি নিয়েছেন, সেরকম পাঁচ জন পড়ুয়া এই স্কলারশিপ পাবেন। বৃত্তির পরিমাণ ২০,০০০ টাকা। অর্থাৎ মোট ১ লক্ষ টাকা স্কলারশিপের প্রতিশ্রুতি এই প্রাক্তনীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কালচারাল টেক্সটস অ্যান্ড রেকর্ডস (এসসিটিআর)-র রেপ্রোগ্রাফার অমৃতেশ বিশ্বাস মারফত জানা গিয়েছে, গত ২০ বছর ধরে স্কুলের তরফে ইংরেজি ভাষায় সম্পাদনা এবং প্রকাশনার পাঠক্রম পড়ানো হচ্ছে। তবে বাংলায় এই সার্টিফিকেট কোর্সটি গত বছর থেকেই চালু হয়েছে। বাংলা ভাষায় বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থায় চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি করতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। সেই কোর্সের জন্যই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের জন্য দুইলপ্তে বৃত্তি দেবেন প্রদীপ্তা। কোর্স শুরুর সময় মিলবে ১০,০০০ টাকা। এর পর আর এক ধাপে আরও ১০,০০০ টাকা তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
স্কুলের ডিরেক্টর অধ্যাপক অভিজিৎ গুপ্ত জানিয়েছেন, চলতি বছর থেকেই এই স্কলারশিপ পাবেন নির্বাচিত পড়ুয়ারা। উল্লেখ্য, আগামী জুলাই মাস থেকেই কোর্সের ক্লাস শুরু হবে। চলবে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। তিন মাসের এই কোর্সের জন্য বরাদ্দ ফি ১৪,৭৫০ টাকা। সপ্তাহে তিন দিন সন্ধে ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত চলবে ক্লাস। কোর্সের মোট আসনসংখ্যা ৩৫।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন যাদবপুর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (জুটা)-র তরফে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে একটি ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়। সেখানে কী ভাবে গবেষণা প্রকল্পের কাজে প্রশাসনিক সহায়তা, শিক্ষকদের সঠিক সময়ে বেতন, পদোন্নতি-র মতো নানা বিষয়ে বাধাবিপত্তি নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানানো হয়। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীর এরকম উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত বলেন, “আমাদের প্রাক্তনীরাই আমাদের ভরসাস্থল। যতই সঙ্কট আসুক, তারা বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রাক্তনীরা এভাবেই একযোগে কাজ করতে পারেন, তা হলে আদতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নতিসাধন করা সম্ভব হবে।”