SC TET job‑loss

সুপ্রিম রায় কার্যকর হলে চাকরি হারাবেন প্রায় ৯০,০০০ শিক্ষক! টেট প্রস্তুতি সেরে রাখছে রাজ্য

গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে জানিয়েছিল, সারা দেশে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকদের টেট উত্তীর্ণ হতেই হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৮
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

টেট উত্তীর্ণ না হলে চাকরি থাকবে না প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকদের, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ কার্যকর হলে কাজ হারাবেন এ রাজ্যের প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। সম্প্রতি এ তথ্যই উঠে এসেছে রাজ্য শিক্ষা দফতরের সমীক্ষায়। নবান্নের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর, কালীপুজো-ভাইফোঁটার উৎসব পর্ব মিটলে সুপ্রিম কোর্টে ওই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে চলেছে রাজ্য। তবে তারই পাশপাশি নতুন করে টেট পরীক্ষা গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতিও সেরে রাখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে নির্দেশ দিয়েছিল, সারা দেশে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকদের টেট উত্তীর্ণ হতেই হবে। পদোন্নতির জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে টেট পাশ করতে হবে। যাঁরা টেট উত্তীর্ণ নন, তাঁদের পরবর্তী দু’বছরের মধ্যে ওই পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। না হলে চাকরি ছাড়তে হবে, অথবা, চূড়ান্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বাধ্যতামূলক অবসরের জন্য আবেদন করতে হবে। তবে যাঁরা আগামী পাঁচ বছরে অবসর নেবেন, তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এর পরেই সারা দেশে শুরু হয়েছে তৎপরতা। উত্তরপ্রদেশ সরকার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে আগেই। আবার তামিলনাড়ুর মতো রাজ্য কর্মরত শিক্ষকদের জন্য আগামী বছর তিন দফায় টেট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। সে পথে হাঁটছে এ রাজ্যও।

Advertisement

স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে সম্প্রতি সমস্ত শিক্ষকের নথি ও তথ্য চাওয়া হয়েছিল স্কুলগুলির কাছে। সেই রিপোর্টেই জানা গিয়েছে, এ রাজ্যে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন যাঁরা টেট উত্তীর্ণ নন। রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর আগেই যাবতীয় তথ্য নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে শিক্ষা দফতর। তাই তৈরি হয়েছে তালিকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হবে। পাশাপাশি যদি পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সে জন্যও সব রকম প্রস্তুতি সেরে রাখছি আমরা। তাই এই সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।”

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান গৌতম পাল বলেন, “আদালতে আমরা যখনই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করব, তখনই শিক্ষা দফতরের কাছে যাবতীয় নথি চাওয়া হবে। সে কারণেই আমরা শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করে রাখছি। পাশাপাশি যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতিও সেরে রাখা হচ্ছে।”

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকমহলে নতুন করে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। যদিও তাঁদের একাংশ ভরসা রাখতে চাইছেন বিচার ব্যবস্থার উপর। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “আমরা আশাবাদী এই পুনর্বিবেচনার আর্জি শীর্ষ আদালতে খারিজ হবে না। কারণ ২০১০ সালের শিক্ষার অধিকার আইন ও এনসিটিই গেজেট নোটিফিকেশন সেই সুরক্ষা কবজ দিয়েছে। তার আগে নিযুক্ত কাউকেই টেট দিতে হবে না।” তবে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে যে কোনও কোনও শিক্ষককে পরীক্ষায় বসতে হতে পারে, মনে করছেন তিনিও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement