CBSE Class 10th

সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষায় কলকাতার ৬ পড়ুয়ার নজরকাড়া ফল, নম্বর ৯৯ শতাংশের বেশি

এ বছর সিবিএসই-র দু’টি পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি। দশমের পরীক্ষা শেষ হয় ১৮ মার্চ। অন্য দিকে, দ্বাদশের পরীক্ষা চলে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ১৯:৩০
Share:

কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রকাশিত হয়েছে সিবি‌এসই-র এ বছরের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল। এক ঘণ্টার ব্যবধানেই দুই শ্রেণির পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)। এ বছর দু’টি পরীক্ষাতেই পাশের হার গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় রাজ্যের পড়ুয়াদের পাশের হার যথাক্রমে ৯৪.৯৩ শতাংশ এবং ৮৯.১৬ শতাংশ। বোর্ডের তরফে রীতি মেনে মেধা তালিকা প্রকাশ করা না হলেও কলকাতার বেশ কিছু পড়ুয়া প্রায় পূর্ণ নম্বর পেয়েছে।

Advertisement

কলকাতা থেকে সিবিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল করেছে ঐনেষ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ঋতজিৎ অধিকারী। ঐনেষ দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি পার্কের পড়ুয়া। পেয়েছে ৯৯.৬ শতাংশ নম্বর। বাবার নিজস্ব ব্যবসা, মা ঘরের কাজ সামলান। অধিকাংশ বিষয়েই গৃহশিক্ষক ছিল না তার। বোর্ড পরীক্ষার আগে বাড়িতে অঙ্ক করাতে আসতেন একজন শিক্ষক। বিজ্ঞানপ্রিয় এই ছাত্র ভবিষ্যতে জীববিদ্যা বা পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী। তবে পড়াশোনা ছাড়াও পছন্দ ক্রিকেট, ফুটবল, দাবা। জীবনের বড় পরীক্ষার আগেও খেলাধুলোয় ফাঁকি দেয়নি সে, জানালেন ঐনেষের মা।

অন্য দিকে, ঋতজিতের প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৪ শতাংশ। পরীক্ষা দিয়েছিল বিডিএম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে। বাবা অঙ্কের শিক্ষক। মা-ও সরকারি স্কুলের সমাজবিদ্যার শিক্ষিকা। ঋতজিৎ-ও শুধু ইংরেজির জন্য গৃহশিক্ষকের সাহায্য নিয়েছিল। বাকি বিষয়গুলি সে নিজে পড়ত অথবা সাহায্য নিত বাবা-মায়ের। অঙ্ক ভালবাসে ঋতজিৎ। সে জানিয়েছে, ভবিষ্যতে অঙ্ক বা রাশিবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণার ইচ্ছে রয়েছে তার। পড়তে চায় ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই) বা চেন্নাই ম্যাথমেটিক্যাল ইনস্টিটিউটের মতো নামী প্রতিষ্ঠানে।

Advertisement

দ্বাদশের পরীক্ষাতে এ বার একই স্কুলের একই বিভাগ থেকে ৯৯ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন দুই পড়ুয়া। নাম অর্ণব পোদ্দার এবং মিতাংশ আগরওয়াল। পড়েছেন দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি পার্ক থেকে। দু’জনেই বাণিজ্য বিভাগের পড়ুয়া ছিলেন। ঘটনাচক্রে, দু’জনেরই আবার পছন্দের বিষয় অর্থনীতি। তবে অর্ণব হতে চান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার। অন্য দিকে, মিতাংশের ইচ্ছে অ্যাকচুয়ারি ( যাঁরা অঙ্ক এবং রাশিবিজ্ঞানের সাহায্যে বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক উন্নয়নে সাহায্য করেন ও সম্ভাব্য ঝুঁকি কমিয়ে সার্বিক বিকাশে সহায়তা করেন) হওয়ার। অর্ণবের বাবা ব্যবসায়ী, মিতাংশের বাবা বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। দুই কৃতীর মা-ই ঘরের কাজ সামলান। পরীক্ষায় এত ভাল কী ভাবে? দু’জনেই জানান, সারা বছর ফাঁকি দিয়ে পরীক্ষার আগে পড়লে হবে না। দিনে ৫-৬ ঘণ্টা ধারাবাহিক ভাবে পড়াশোনা করলেই ভাল ফল হতে পারে। তবে পড়াশোনার বাইরে খেলাধুলোও পছন্দ দু’জনেরই।

দ্বাদশের পরীক্ষায় আরও এক কৃতী অপরাজিতা সাহার ফলও নজর কেড়েছে। প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৪ শতাংশ। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ভবনস গঙ্গাবক্স কানোরিয়া বিদ্যামন্দিরের হিউম্যানিটিজ় বিভাগ থেকে। তাঁর বাবা ইঞ্জিনিয়ার, মা আইনজীবী। কোনও বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছাড়াই এই দুর্দান্ত ফল করেছেন অপরাজিতা। তবে বরাবর রুটিন মেনে পড়তেন। ভালবাসেন নাচ, গান, আঁকা। পছন্দের বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান। সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসাবে খবরের কাগজেও লেখালিখি করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।

কৃতীদের প্রত্যেকেই এনসিইআরটি-র পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়া এবং মক টেস্ট দেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন। ভাল ফলের কৃতিত্ব দিয়েছেন অভিভাবক এবং স্কুল শিক্ষকদের।

এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই তালিকায় রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে আরও বেশ কিছু পড়ুয়া রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম সিদ্ধান্ত পাল। দ্য নিউটাউন স্কুলের এই পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৮ শতাংশ। ভবিষ্যতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে আইআইটিতে পড়ার ইচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি তায়কোয়েন্ডোতেও ব্যাকবেল্ট এই কৃতী। সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আর এক কৃতীও ভাল ফল করেছে। নাম তৃষা ঘোষ। কল্যাণীর নারায়ণ স্কুলের এই পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৬ শতাংশ। পছন্দ সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, অ্যানিমেশন। ইচ্ছে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোনও বিষয় নিয়ে পড়ার।

উল্লেখ্য, এ বছর সিবিএসইর দু’টি পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি। দশমের পরীক্ষা শেষ হয় ১৮ মার্চ। অন্য দিকে, দ্বাদশের পরীক্ষা চলে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত। দু’টি পরীক্ষার ফলাফলেই এ বছর ছেলেদের ছাপিয়ে গিয়েছে মেয়েরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement