কলেজের দেওয়াল লিখনে এখনও রয়ে গিয়েছে মূল অভিযুক্তের নাম এবং স্লোগান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের উপাধ্যক্ষ পদ থেকে এখনই অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে না নয়না চট্টোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার কলেজের পরিচলন সমিতির বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন অধ্যক্ষ যোগ না দেওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে হবে তাঁকে।
গত মঙ্গলবারই কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি, তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেবের বাড়ি গিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছিলেন তিনি। আগামী ১ অক্টোবর থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয় বৃহস্পতিবার। দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে নয়না বলেন, “আমি পদ থেকে সরে গেলে কলেজে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই আমাকে উপাধ্যক্ষ পদে থাকতে বলা হয়েছে।”
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিচলন সমিতির সকল সদস্যই। সভাপতি অশোক দেব বলেন, “শারীরিক ও মানসিক চাপের কারণে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন উপাধ্যক্ষ। কিন্তু আদালতে মামলা চলছে। তাই আমরা তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছি।”
পাশাপাশি এ দিন প্রশ্ন ওঠে কলেজের দেওয়াল লিখন নিয়েও। গত জুনে অভিযোগ উঠেছিল ক্যাম্পাসের ভিতর প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের। মূল অভিযুক্ত ওই কলেজের প্রাক্তনী, তৃণমূল ছাত্রনেতা এবং ওই কলেজেই অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বহিরাগত হিসাবে ‘দাদাগিরি’ চালানোরও। এমনকি কলেজের দেওয়ালে দেওয়ালে তাঁর নামে নানা স্লোগান লেখা ছিল। এখনও রয়েছে। ঘটনার আড়াই মাস পরেও কেন ওই সব স্লোগান মুছে দেওয়া গেল না, সে বিষয়ে পরিচালন সমিতির সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয় এ দিন। অশোক দেব বলেন, “পুজোর ছুটিতে পঠনপাঠন বন্ধ থাকবে। তখন সব কাজ শেষ করা হবে।”
উল্লেখ্য, ক্যাম্পাসের ভিতর ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ায় পরোক্ষ মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এমনকি ধর্ষণের দিনও রেজিস্টার খাতায় উপাধ্যক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। গত ১০ সেপ্টেম্বর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গড়া তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের দল কসবা কলেজে এসে খতিয়ে দেখে নথিপত্র। রিপোর্ট যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-র কাছে। তিনি জানিয়েছিলেন, সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।
এরই মধ্যে ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। এই বিষয়েও নয়না বরাবরই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে এসেছেন। ইস্তফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে গিয়ে আমার ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে এসেছি। বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ভাল ভাবে কলেজ পরিচালনা করতে গিয়ে অনেক বাধা পেয়েছি। মানসিক চাপ এখানে প্রচুর। আমি চাই ভাল ভাবে কলেজ পরিচালনা হোক।”