প্রতীকী চিত্র।
কসবা আইন কলেজের বিরুদ্ধে ফের উঠল দুর্নীতির অভিযোগ। গত জুনে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রথমবর্ষের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে যায়। নড়ে বসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। সেখানেই উঠে আসে একের পর এক তথ্যের গরমিল। বুধবার ফের সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের বিরুদ্ধে উঠল বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ। গত ১২ বছরে নির্ধারিত আসনসংখ্যার থেকে অনেক বেশি সংখ্যক পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ কলকাতার ওই কলেজের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম থেকে বহিরাগতদের দাদাগিরি— অভিযোগ উঠেছে নানা রকম। এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গড়া তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের দল কসবা কলেজে এসে খতিয়ে দেখে নথিপত্র। উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই তদন্ত চালিয়ে যান কমিটির সদস্যরা। কথা বলা হয় অন্য কর্মীদের সঙ্গেও। সূত্রের খবর, এই তদন্তে প্রাথমিক ভাবে উঠে আসে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ থেকে অতিরিক্ত ছাত্রভর্তির মতো নানা বিষয়।
জানা গিয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত নির্ধারিত ১২০টি আসনে ভর্তি নেওয়া হয়েছে অনেক বেশি পড়ুয়া। ২০১৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এই অতিরিক্ত ভর্তির সংখ্যা অবশ্য খানিকটা কমেছে। সূত্রের খবর, প্রথম পাঁচ বছরে প্রায় শ’খানেক অতিরিক্ত ভর্তি করিয়েছে কলেজ। পরবর্তী ক্ষেত্রে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০-২৫।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, নিয়মবহির্ভূত ভাবে যাঁদের ভর্তি করানো হয়েছে, তাঁদের অ্যা়ডমিশন ফর্মে অবজ়ার্ভারের স্বাক্ষর নেই। মেধা তালিকায় প্রথম দিকে নাম থাকা অনেক প্রার্থীকে বঞ্চিত করে ভর্তি নেওয়া হয়েছে পরে নাম থাকা প্রার্থীদের, অভিযোগ উঠেছে এমন।
যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ। কোনও মন্তব্য করতে চাননি তদন্ত কমিটির সদস্যরাও। তবে জানান গিয়েছে, তাঁরা গত ১২ বছরের ভর্তি সংক্রান্ত সমস্ত নথির প্রতিলিপি সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন। ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্মীর সঙ্গে আলাদা করে কথাও বলেছেন। সেখানে প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে এত ভর্তি নেওয়া হল, কাদের নেওয়া হল, তাঁদের নাম প্রস্তাব করলেন কারা? কিন্তু কোনও সদুত্তরই পাওয়া যায়নি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়া তদন্ত কমিটি সমস্ত নথি সংগ্রহ করেছে। রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।"